বাঙালি জাতির জন্য আগস্ট একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং শোকের মাস
বাঙালি জাতির জন্য আগস্ট একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং শোকের মাস। এই মাসে ঘটেছে ইতিহাসের অনেক ঘটনা। ১৯৭৫ সালের পনেরো আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা ও দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এই মাসে জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের নেপথ্য কারিগর, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য সহধর্মী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সফল সংগঠক, আবাহনী ক্লাব লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামালের জন্মদিনও এই মাসে। জনকের মহাপ্রয়াণের দায় থেকে আগস্ট মাসকে পালন করে শোকের মাস হিসেবে। তিন দশকের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এই মাসটি এলেই দেশে তৈরি হয় এক ধরনের অস্থিরতা। বিভিন্ন সময় এই অস্থিরতার চরিত্রে ভিন্নতা দেখা যায়।
’৭১ সালের পরাজিত শক্তি ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একদল নিষ্ঠুর, উচ্ছৃঙ্খল সৈনিক অংশগ্রহণ করে এই নির্মমতায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর এই নির্মম হত্যাকা-ের বিচার হয়েছে। খুনিদের কয়েকজনের সাজা কার্যকর হয়েছে। আরও কয়েকজন রয়েছে পলাতক। এই হত্যাকা-ের পেছনে ছিল সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। ষড়যন্ত্রের নেপথ্যের নায়কদের সম্পর্কে অনেক বক্তৃতা, বিবৃতি এবং লেখালেখি হয়েছে। চূড়ান্ত মীমাংসা হয়নি আজও।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, তবে এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল তা এখনো আবিষ্কার হয়নি। একদিন না একদিন এটিও আবিষ্কার হবে। ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটা জাতি জানতে পারবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় একটি বিষয় স্পষ্ট, ষড়যন্ত্রের আড়ালে যারাই থাকুক, এতদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকলেও একদিন সামনে আসতে হবে তাদের। বিচারের মুখোমুখি না হলেও দাঁড়াতে হবে ইতিহাসের কাঠগড়ায়।
কয়েক বছর আগে বিবিসির এক বিশ্লেষণে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ৩৫ বছর পর সরাসরি জড়িত সাবেক সেনা সদস্যদের দ- দেওয়া হলেও বেসামরিক কোনো ব্যক্তির বিচার হতে দেখা যায়নি। বিশ্লেষকরা একমত যে, এটি নিছক হত্যাকা- নয়, বরং এর পেছনে একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। হত্যা মামলার রায়েও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ রয়েছে। যারা এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছে কেবল তারাই মুখোমুখি হয়েছে বিচারের। ষড়যন্ত্রকারী থেকে গেছে আড়ালে।’ হত্যাকা-ের পর নানা জন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। এসব প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করলে এখনো সামনে আসতে পারে কিছু রাজনৈতিক চরিত্র।
পনেরো আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত হয় নতুন সরকার। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকর্মী বিশ্বাসঘাতক মোশতাক ২৬ সেপ্টেম্বর জারি করে দায়মুক্তির অধ্যাদেশ। অর্থাৎ জাতির জনকসহ পনেরো আগস্ট হত্যাকা-ের বিচার করা যাবে না। জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এই আইনটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন।
মোশতাকের জারিকৃত অধ্যাদেশে বলা হয়, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থি যা কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টসহ কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যয়ন করবেন, তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হলো। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।’ এ ধরনের দায়মুক্তির আইন বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। জিয়াউর রহমান কেন খুনিদের দায়মুক্তি দিয়েছিলেন এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।
জিয়াউর রহমানের শাসনাবসানের পর ক্ষমতায় বসেন এইচএম এরশাদ। নয় বছরের ক্ষমতায় তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার নিয়ে একটি কথাও বলেননি। ইনডেমনিটির দোহাই দিয়ে নীরব থেকেছেন। ধারণ করেছেন এই কলঙ্কিত আইনটি। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেওয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের চাকরিচ্যুতও করেননি তিনি। পাঁচ বছরের শাসনে একই পথে হেঁটেছেন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ সময় বঙ্গবন্ধুর খুনিরা শুধু বুক ফুলিয়ে এই সমাজে বিচরণই করেনি, এই দেশে রাজনৈতিক দল গঠন করেছে।
ভোট চুরির মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে কলঙ্কিত করেছে জাতীয় সংসদকে। এমনকি বিরোধী দলের নেতার আসনেও বসানো হয়েছে এই খুনিদের। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে খুনিরা। লিপ্ত থেকেছে অনেকে ষড়যন্ত্রে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সালের ১২ নবেম্বর জাতীয় সংসদে দায়মুক্তির আইনটি বাতিল করা হয়। শুরু হয় এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া।
দেশের প্রচলিত আইনে বিচার কাজ শেষে চূড়ান্ত রায়ে ১২ জনকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়। দ-প্রাপ্ত এই ১২ জনের সবাই তৎকালীন মধ্যম সারির সেনা কর্মকর্তা যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ড এবং পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যটি শেষ পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, আওয়ামী লীগ এতদিন ক্ষমতায় থেকেও কি কারণে বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কারিগরদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বেশ কয়েকবার বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত কমিশন গঠনের নজির রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যার পর ‘ওয়ারেন কমিশন’ গঠন করা হয়েছিল।
ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী হত্যার পর গঠন করা হয় ‘কাপুর কমিশন’। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পর গঠন করা হয়েছিল ‘থ্যাকার কমিশন’ এবং রাজীব গান্ধী হত্যার পর ‘জৈন কমিশন’ গঠন করা হয়েছিল। বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্মোহ একটি তদন্ত হলে শুধু জাতির জনকের হত্যাকা-ের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করাই নয়, পনেরো আগস্ট হত্যাকা- নিয়ে অনেক অস্পষ্টতাই দূর হবে।
পনেরো আগস্ট ১৯৭৫ স্বাধীনতাবিরোধীরা তাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করতে পারলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। একুশে আগস্ট ২০০৪ তাদের অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করতে চেয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। এ কারণে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে পরিচালিত হয়েছিল ভয়ংকর নারকীয় তাণ্ডব।
সেদিন রচিত হয়েছিল মৃত্যু, ধ্বংস এবং দানবীয় সন্ত্রাসের এই বীভৎস কাহিনী। রক্তাক্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দৃশ্যপটে মলিন হয়ে গিয়েছিল গোটা বাংলাদেশ। মানবতা হয়েছিল ভূলুণ্ঠিত। ছিল না ঘৃণা-ধিক্কারের ভাষা। অবাক বিস্ময়ে এই মৃত্যুপুরী দেখেছে গোটা বিশ্ব। পরম করুণাময়ের অশেষ রহমতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রক্ষা পেলেও প্রাণ হারিয়েছিলেন আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিবেদিতপ্রাণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ভেবেছিল এই দেশ থেকে মুজিব আদর্শ মুছে ফেলতে পেরেছে। নতুন উদ্যমে নব্য পাকিস্তান তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
পরিবর্তন হয় বঙ্গবন্ধুর তৈরি বিশ^মানের সংবিধান। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে প্রমাদ গোনে এই চক্র। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে আবারও সংগঠিত হতে থাকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ। দশ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পথ ধরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে তৈরি করে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মতো যোগ্য দল হিসেবে। স্বৈরাচারের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ’৯১ সালে নির্বাচনে বিপুল জনপ্রিয়তা এবং সাংগঠনিক ভিত্তি থাকার পরও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় যেতে দেওয়া হয়নি।
নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগবিরোধী প্রশাসন নির্বাচনে হারিয়ে দেয় এই দলটিকে। আবারও পাঁচ বছরের অপেক্ষা। ’৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারসহ আরও কিছু আর্থ-সামাজিক সংস্কারে প্রমাদ গোনে স্বাধীনতাবিরোধীরা। ২০০১ সালের নির্বাচনে আবারও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হারিয়ে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগকে। এর পরই শুরু হয় আওয়ামী লীগ নিধনযজ্ঞ। সারাদেশে পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয় বিএনপি-জামায়াতের তা-ব। হাজার হাজার সংখ্যালঘু এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হতাহত হয়। ঘর ছাড়তে বাধ্য হয় নির্যাতনের ভয়ে। ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকে বছরের পর বছর ধরে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই একটি জঙ্গিগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে চালানো হয় একুশে আগস্ট হত্যাকা-। মূল টার্গেট ছিল বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়া তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা। এবারও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। ২০০৪ সালের একুশে আগস্টের পর জজ মিয়া নাটক সাজানো, ক্ষমতাসীনদের আচরণ এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সংসদে দেওয়া বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় এই হামলার পেছনে কারা ছিল। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শুরু হওয়া তদন্তে ঘটনা স্পষ্ট হতে থাকে। ২০০৯ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মামলার তদন্ত শেষ হয়। দীর্ঘ বিচার কাজে উঠে আসে শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র। মুখোশ উন্মোচিত হয় ঘৃণ্য মানুষগুলোর।
বারবার আক্রান্ত হয়েও শেখ হাসিনা কখনো ভয় পাননি, ভেঙে পড়েননি। একুশে আগস্ট ভয়ংকর গ্রেনেড হামলায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও এতগুলো হতাহত মানুষের কথা ভেবে তিনি অনেকটাই বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি নিজে সব সময় বলেন, ‘আমার হারানোর কিছু নেই।’ ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের সকলকে হারিয়েছি। বিদেশে থাকার কারণে আমি এবং রেহানা বেঁচে গেছি ভাগ্যচক্রে। হয়ত আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে রেখেছেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য। আমি আমৃত্যু সেই চেষ্টাই করে যাব।’ স্বজন হারানো শোকাতুর হৃদয় এবং প্রবল দেশপ্রেমই সম্ভবত তাঁকে এমন সাহসী করে দিয়েছে।
একুশে আগস্ট মামলায় বিচার হয়েছে আইনি প্রক্রিয়ায়। আইনের চোখ ঘটনাটিকে যতটুকু দৃষ্টিতে আনতে পেরেছে বিচার হয়েছে ঠিক ততটুকুই। এর বাইরেও রয়েছে বিরাট জগত, যে জগতে বারবার রচিত হয়েছে হত্যাচেষ্টা। এই জগতের একটি ক্ষুদ্র অংশ এসেছে আইনের আওতায়। বেশিরভাগ অংশই থেকে গেছে পর্দার আড়ালে। এরা আজও সক্রিয়। সুযোগ পেলে এরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে পেছনের দিকে। ২০১৩-১৪ সালে এই গোষ্ঠী সারা দেশে চালিয়েছিল অগ্নি সন্ত্রাস। অনেক মানুষকে তারা পুড়িয়ে হত্যা করে। জনতার প্রতিরোধে তারা সাময়িক বিরতি দিয়েছিল। সম্প্রতি কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বারবার বলেছেন, সন্ত্রাসী কর্মকা- ও সহিংসতার সঙ্গে তারা কোনোভাবেই জড়িত নয়। এর দায়ও তারা গ্রহণ করবেন না। এর পরও সহিংসতা চলছে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেই গোষ্ঠী মেতে উঠেছিল ধ্বংসলীলায়। তা-ব চালিয়েছে সারা দেশে। ধ্বংস করেছে সরকারি সম্পদ। সন্ত্রাসের তা-বে ঝরে গেছে অনেক তাজা প্রাণ। এবারও আগস্ট মাসে দেশজুড়ে চলছে অস্থিরতা। স্বাধীনতাবিরোধী এই অপশক্তি টিকে থাকলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আরও একটি বিয়োগান্তক ঘটনা এড়াতে সতর্ক থাকার পাশাপাশি আবিষ্কার করতে হবে সেই বিশাল ষড়যন্ত্রের জগতকে। ষড়যন্ত্রের গোটা জগত অনাবৃত হলে দেশের মানুষ চিনতে পারবে তাদের চেহারা। চিহ্নিত হলে এরা আর বিভ্রান্ত করতে পারবে না। চিরতরে বন্ধ হবে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ