ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

ফ্রিল্যান্সারদের প্রণোদনা

-

প্রকাশিত: ২১:১৪, ৩ আগস্ট ২০২৪

ফ্রিল্যান্সারদের প্রণোদনা

সম্পাদকীয়

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়া ফ্রিল্যান্সারদের প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দুঃসময়ে এটি দেশের বিপুল সংখ্যক ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সুখবর। ইন্টারনেট না থাকায় অচল হয়ে পড়ে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান। দেশের ফ্রিল্যান্সারদের সব ধরনের ক্রয়াদেশ ঝুঁকির মুখে রয়েছে। অথচ সরকারের লক্ষ্য ছিল ফ্রিল্যান্সিং খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আয় করা।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকাকালীন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংকটসহ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য দেশের তরুণদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি এই খাতের ভাবমূর্তিসহ সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপ, মেন্টরশিপ এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অ্যামটব, বেসিস, বাক্কো, আইএসপিএবি, বিসিএস, ই-ক্যাবসহ টেলিযোগাযোগ খাতের অংশীজনদের সঙ্গে সমকালীন বিষয়ে বৈঠক শেষে এক প্রশ্নে এ ঘোষণা দেন।

সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি খাত মিলিয়ে আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে আমাদের ফ্রিল্যান্সার, যারা তাদের সফটওয়্যার বা সার্ভিস দিয়ে বৈদেশিক আয় করেন, সেটাও কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মিলিয়ে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে বিদেশী গ্রাহকদের কাছে ভাবমূর্তির বড় ধরনের ধাক্কা এসেছে। আইটি ফ্রিল্যান্সিং, সফটওয়্যার, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আউটসোর্সিংয়ের পুরোটাই আমাদের তারুণ্যনির্ভর শিল্প।

এই তারুণ্যের শক্তি এবং ইন্টারনেটনির্ভর শক্তি মিলে ২০৪১ সাল নাগাদ সংকট কাটিয়ে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংকটকালীন অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আসার জন্য যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছেন এবং আমাদের ছাত্র-ছাত্রী আমাদের সন্তান, যারা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্ণধার, তাদের সঙ্গে যে একটা ভুল বোঝাবুঝি বা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, এটা আমরা যেভাবেই হোক, আমরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’ 
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৪ শতাংশ ঋণে তহবিল গঠন করা হয়েছে। ৪ শতাংশ বা আরও অল্প সুদে যারা সফটওয়্যার শিল্ট বা ইন্টারনেট সার্ভিসে আছে বা হার্ডওয়্যার বা মোবাইলের বিভিন্ন শিল্পে আছে বা আউটসোর্সিং শিল্পে আছে, তাদের জন্য কিভাবে এই স্টার্ট-আপ তহবিল কাজে লাগানো সম্ভব, সেজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় একটা সুপারিশ তৈরি করছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেটের অপ্রাপ্তি অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে এসেছিল। দৈনন্দিন জীবনে স্থবিরতা তো নেমে এসেছেই, স্থবির হয়ে পড়েছিল অর্থনীতির চাকাও। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ছোট আকারের কল-কারখানার অবস্থাও অনুরূপ।

ইন্টারনেটের সচলতার ওপর বিপুল সংখ্যক মানুষের আয়-রোজগার নির্ভর করে। তাই ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে সেটিও স্থগিত হয়ে যায়। বলা প্রয়োজন, প্রতিদিন আইসিটি সেবা খাতে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। দ্রুত অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রভূত উন্নতি হয়েছে গত কয়েকদিনে। এবার অর্থনীতির উন্নয়নে চাই সর্বাত্মক সক্রিয়তা।

×