ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

প্যারিস অলিম্পিক

-

প্রকাশিত: ২০:৩০, ২৭ জুলাই ২০২৪

প্যারিস অলিম্পিক

সম্পাদকীয়

বিশ্বের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের চোখ এখন প্যারিসের দিকে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার মধ্যরাতে সেখানে শুরু হয়েছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ শীর্ষক অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এটি বিশে^র সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসর। এবারের আয়োজক ফ্রান্স। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ‘প্যারিস অলিম্পিকের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে সেইন নদীতে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে সাজানো হয় সেইন নদীর দুই তীর। চলে নিরাপত্তা মহড়াও। অলিম্পিক ইতিহাসে এই প্রথমবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হলো স্টেডিয়ামের বাইরে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিকে ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়। যেখানে মোট তিন হাজার নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও বিনোদনকর্মী অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা সেইনের দুই তীরে, সেতুতে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় ছিলেন। নটর ডেম ক্যাথেড্রালও ছিল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অংশ হয়ে। ৬-৭ হাজার অ্যাথলেট আইফেল টাওয়ারের পূর্ব কোণের অস্টারলিটজ সেতু থেকে নৌকা ও বার্জে করে সেইন নদীর ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দুই-তৃতীয়াংশ আয়োজন প্যারিস সময় দিনের আলোয় আয়োজন করা হলেও বাকি অংশ ছিল গোধূলিবেলায়। এই আয়োজনে প্যারিসের অপরূপ সূর্যাস্তের মুহূর্তও প্রাণভরে উপভোগ করেছেন দর্শকরা।
অবশ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগেই আর্চারি দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের প্যারিস অলিম্পিকের যাত্রা। ২৫ জুলাই রিকার্ভ ইভেন্টের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে নিশানা ভেদের লড়াইয়ে নামেন আর্চার সাগর ইসলাম। ২৮ জুলাই শূটিং ইভেন্ট হলেও বাংলাদেশের দুই সাঁতারু পুলে নামবেন ৩০ জুলাই ও ১ আগস্ট। একই দিনে হবে অ্যাথলেটিক্স। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি অলিম্পিক গেমসের সময় প্রতিমুহূর্তের নানা তথ্য, রেকর্ড, ছবি একটি পোর্টালে আপলোড করে। এবারের গেমসে সেই পোর্টালের নামকরণ হয়েছে ‘মাই ইনফো’।

ইতোমধ্যে এই পোর্টালে বিভিন্ন সময় অলিম্পিক পদকজয়ীর স্মৃতি, কোন দেশের কত পদক জয়ের সম্ভাবনা, বিশেষ রেকর্ডসহ নানা পরিসংখ্যান কিছুক্ষণ পর পর প্রকাশ করছে গত দুই সপ্তাহ ধরে। প্যারিস অলিম্পিক কাভার করা সাংবাদিকদের প্রতিনিয়ত চোখ থাকে এই পোর্টালের দিকে। এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ পোর্টালে বাংলাদেশের আর্চার সাগরকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন হয়েছে, যা অত্যন্ত সম্মানের। সাঁতার, শূটিং ও আর্চারিÑ তিনটি শাখায় প্রতিযোগিতা করছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে তীরন্দাজ সাগরকে নিয়ে।

বাংলাদেশ আর্চারি দলের কোচ হিসেবে মার্টিন ফ্রেডেরিক অলিম্পিক পদক নিয়ে ভাবার কোনো অবকাশ নেই বলে জানান। ফ্রেডেরিক বলেন, ‘অলিম্পিক অনেক বড় মঞ্চ। খেলার সর্বোচ্চ পর্যায়। সেখান থেকে বাংলাদেশের কারও পদক আনার সম্ভাবনা আপাতত নেই, এটা মেনে নিতে হবে। অলিম্পিক, এমনকি এশিয়ান গেমস থেকেও পদক আনতে হলে যে ব্যাপক প্রস্তুতি, যে বিনিয়োগ দরকার, সেটি করতে হবে। সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদ এ দেশেও আছে।’ উল্লেখ্য, মার্টিন ফ্রেডেরিক ৬ বছর ধরে বাংলাদেশ আর্চারি দলকে কোচিং করাচ্ছেন।
স্বর্ণপদক অর্জিত না হওয়া, জয়-পরাজয় বড় নয়, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণই বড়, এই আপ্তবাক্য এখনো সান্ত¡নাবাক্য হয়ে আছে বাংলাদেশের জন্য। আবার এটাই বা কম কিসে? বিশ^মঞ্চে বাংলাদেশও আছে, এ নিয়ে গর্ব করা যেতেই পারে। বাংলাদেশের মানুষ ক্রীড়াপ্রেমী ও উৎসবমুখী, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সময়টা বৈরী হলেও বাংলাদেশের মানুষ অলিম্পিক চলাকালীন পুরো সময়টা ছোট পর্দার কল্যাণে বরাবরের মতো নানামুখী ক্রীড়া উপভোগ করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা।

×