ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

দেশবিরোধী তৎপরতা

-

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৩ জুলাই ২০২৪

দেশবিরোধী তৎপরতা

সম্পাদকীয়

কোটা বিষয়ক সর্বোচ্চ আদালতের রায় এবং প্রজ্ঞাপন জারির পর সার্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ক্রমশÑবিশেষ করে সেনা মোতায়েন সাপেক্ষে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরাও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। তারা অবিলম্বে সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন সরকারের প্রতি। তবে কোটা আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে ভর করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির চক্র রাজধানীসহ সারাদেশে গত কয়েকদিন যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও অগ্নিসন্ত্রাস ঘটিয়েছে, সেসব ভয়াবহ দুর্বিষহ ক্ষতের খবর বেরিয়ে আসছে ক্রমাগত।

দুর্বৃত্তরা বাংলাদেশ টেলিভিশন, ডাটা সেন্টার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, সেতু ভবনসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর, প্রধান কার্যালয় ও স্থাপনাসমূহে নির্বিচারে হামলা লুটপাট ধ্বংসযজ্ঞ অগ্নিসংযোগ করেছে। শত শত সরকারি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন অফিস ও স্থাপনা। আগুন জ্বালিয়েছে একাধিক পুলিশ বক্স ও ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে। বিভিন্ন ভবন ও দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব-নিকাশ বেরিয়ে আসছে ক্রমশ, যার পরিমাণ শিউরে ওঠার মতো।
উদাহরণত বলা যায়, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ায় সন্ত্রাসী-দুর্বৃত্তরা মেট্রো স্টেশনের স্থাপনায় যে বিপুল পরিমাণে ধ্বংসযজ্ঞ ও অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে, তা মেরামত করতে কমপক্ষে এক বছর লাগবে বলে জানিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের পাশাপাশি জনগণের যে নিদারুণ ভোগান্তি হয়েছে এবং হবে, তা সহজেই অনুমেয়। সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, এর পেছনে রয়েছে সরকার পতনের সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত ও পরিকল্পনা। যার পেছনে হাত রয়েছে বিএনপির ইন্ধনে জামায়াত-শিবির চক্রের, যা প্রকারান্তরে একাত্তরের পাক   বাহিনীর পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এসবই আসলে সংগঠিত অপরাধ, যা জামায়াত-শিবির-বিএনপির দ্বারাই সম্ভব।  
দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন, জামায়াত-শিবির সারাদেশে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালিয়েছে। বিএনপি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেছে, তারা সারাদেশে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের সঙ্গে আদৌ জড়িত নয়। বরং তারা শান্তিপূর্ণভাবে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছে। তারা কোনো পক্ষের রাজনৈতিক ফায়দা লোটার সঙ্গেও নেই। একইসঙ্গে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন।

এরপরেই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। যা হোক, পরিস্থিতি খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা। তবে নৈরাজ্যকারীরা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের জন্য দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, এবার কাউকে ছাড়া হবে না। পুলিশও ইতোমধ্যে শুরু করেছে চিরুণি অভিযান। 
বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশবিরোধী তৎপরতা ও ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টা থামছে না কিছুতেই। ফেসবুক, টুইটার, ইন্টারনেট এমনকি বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেলেও বাংলাদেশকে ঘিরে নানা মিথ্যা, বানোয়াট, ভুয়া, অসত্য খবর তথা গুজব ছড়ানো হচ্ছে নানা সময়ে নানা উপায়ে। এর আগেও দেশবাসীকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রকারীদের সম্পর্কে সর্বদা সতর্ক ও সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যার পেছনে রয়েছে বাংলাদেশবিরোধী যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতে ইসলামী, বিএনপিসহ কিছু বাম দল ও অন্যরা। আমরা যদি আমাদের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তুলতে চাই, এদেশকে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় রেখে বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থান অর্জন করতে চাই, তাহলে অন্ধকারের অপশক্তিকে চিরতরে পরাস্ত করতেই হবে। সেজন্য চিহ্নিত ও স্বঘোষিত অপশক্তির বিরুদ্ধে সর্বদা সতর্ক ও সাবধান থাকতে হবে  দেশবাসীকে।

×