ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১

৫জি প্রযুক্তির যত সুবিধা

শাওন রহমান

প্রকাশিত: ২০:৫০, ৫ জুলাই ২০২৪

৫জি প্রযুক্তির যত সুবিধা

..

কেমন হয়, যদি কয়েক সেকেন্ডেই ডাউনলোড করা যায় একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য এইচডি মুভি! হ্যাঁ, রকম সুবিধাই দেবে শীঘ্রই সারা দেশে চালু হতে যাওয়া পঞ্চম জেনারেশন বা ফাইভ জি নেটওয়ার্ক। চীন, কোরিয়া, আমেরিকা, কানাডা, ফিনল্যান্ড জার্মানিতে ইতোমধ্যেই এই নেটওয়ার্ক সুবিধা চালু হলেও বাংলাদেশে এটি সীমিত পর্যায়ে রয়েছে।

২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সচিবালয়, জাতীয় সংসদ ভবন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ দেশের ৬টি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে দ্রুতগতির ফাইভ-জি সেবা চালু করে টেলিটক। সেই পথ অনুসরণ করে এরইমধ্যে দেশের বিভাগীয় শহরে ফাইভ-জি সেবার ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে বেসরকারি তিনটি মোবাইল অপারেটর। এবার এই নেটওয়ার্ক সেবা চালু হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দরে।

নতুন জেনারেশনের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক মানেই বেশি সুবিধা বেশি গতির ইন্টারনেট। ওয়ান-জি প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা পেয়েছিলাম মোবাইলে কথা বলার সুযোগ। টু-জি আমাদের দিয়েছিল মোবাইল থেকে মেসেজ বা বার্তা পাঠানোর সুবিধা। আর থ্রি-জি আসার পর আমরা মোবাইল দিয়ে প্রথমবারের মতো স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইন্টারনেট চালাতে পারলাম। আর কিছুদিন আগে ফোরজি আসার পর মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বলা কিংবা ইন্টারনেটে গেম খেলা এখন হাতের মোয়ায় পরিণত হয়েছে। আর এবার আসছে ফোরজির চেয়েও ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ গুণ বেশি গতির ফাইভ-জি!

এই ফাইভ-জির ফলে সম্ভব হবে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি, চালকবিহীন গাড়ি, ইন্টারনেট অফ থিংস আরও অনেক অভিনব প্রযুক্তি- যা কিনা আমরা এখন কল্পনাও করতে পারি না। আপনি হয়তো এতক্ষণে ক্ষেপে গিয়ে বলছেন, আচ্ছা ফাইভ-জির এত গুণগান করছেন, কিন্তু ফাইভ-জি জিনিসটা আসলে কি সেটাই তো বললেন না এখনো! হ্যাঁ, ফাইভ-জি হলো স্বল্পদৈর্ঘ্য তরঙ্গের মাধ্যমে তারবিহীন ডাটা আদান প্রদানের সর্বশেষ প্রযুক্তি, যা পাঁচটি সম্পূর্ণ নতুন যুগান্তকারী প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত। প্রযুক্তিগুলো হলো- মিলিমিটার ওয়েইভ বা মিলিমিটার তরঙ্গ, স্মল সেল বা কাছাকাছি থাকা ক্ষুদ্রাকৃতির টাওয়ার, ম্যাসিভ মাইমো বা বৃহৎ পরিধির ইনপুট-আউটপুট, বিমফর্মিং বা নির্দিষ্ট দিকে তরঙ্গ নিক্ষেপণ এবং ফুল ডুপ্লেক্স বা ব্যালেন্সড সিগনালিং সিস্টেম।

প্রকৃতপক্ষে গবেষকগণ এই পাঁচটি প্রযুক্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছেন এগুলোর উন্নয়ন এখনও চলছে, গোটা ফাইভ জি প্রযুক্তিটি এখনও পরীক্ষমান পর্যায়ে রয়েছে। এমনও হতে পারে এতে আরও নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ফাইভ-জি সামিট-২০১৮; যেখানে খ্যাতনামা চাইনিজ প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি প্রযুক্তি প্রদর্শন করে। উল্লেখ্য, এখানে সর্বোচ্চ ডাউনলোড স্পিড প্রত্যক্ষ করা হয়েছিল .১৭ গিগাবিট পার সেকেন্ড। সেই দিনটি বোধ করি খুব দূরে নয়, যেদিন উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে আমাদের দেশও হয়ে উঠবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, স্মার্ট বাংলাদেশ।

 

×