ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১

নতুন পাঠক্রমের মূল্যায়ন

প্রকাশিত: ২০:৩০, ৪ জুলাই ২০২৪

নতুন পাঠক্রমের মূল্যায়ন

সম্পাদকীয়

শিক্ষা ব্যবস্থার নতুন পাঠক্রম আর মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে বহু আলোচনা-সমালোচনা এখন অবধি চলছে। পুরনো যে কোনো কর্মযোগ নতুন সময়ের দাবিতে পরিবর্তন, পরিবর্ধনে আধুনিক কালের উপযোগী করতে হয়। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সূচক শিক্ষার নবযোগ অতি প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে যায়। জাতির মেরুদ- বলে কথা। শিরদাঁড়া সোজা রাখাও শিক্ষার নিতান্ত দায়বদ্ধতা। তেমন অতি আবশ্যক সূচক যুগোপযোগী করতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন কার্যক্রমে নিয়ে আসাও জরুরি ছিল।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনুবর্তী হয়ে শিক্ষাকে শুধু বিশ্বসভায় পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং সর্বজনীন করাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সময়ের দায়বদ্ধতা। নতুন ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন কিন্তু অনেকটাই আমূল। অর্থাৎ শ্রেণি পাঠ থেকে পরীক্ষা এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিও একেবারে নতুন। ধাপে ধাপে নতুন পদ্ধতিকে শিক্ষার্থীদের অনুকূলে নিতে শিক্ষকরাও বিভিন্নভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজও করছেন। 
তবে নতুন পাঠক্রমে অনেক অভিভাবক সন্তুষ্ট নন। নানা আপত্তি উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। নতুন সংযোজন বরাবরই ওজর-আপত্তিকে অতিক্রম করেই এগিয়েছে। আবার মূল্যায়ন কাঠামোর সার্বিক যে নব ব্যবস্থাপনা সেখানে পরিবর্তন নাকি সামান্যই।

সাত পর্যায়ের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে নতুন সময় যোগ হলেও অনেক কিছুই থাকছে আগের মতোই। নতুন মূল্যায়নে বর্ণ সংযোগই প্রয়োগ করা হয়, যাতে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বুঝতে পারায় কোনো সমস্যা তৈরি না হয়। সংক্ষেপে সাতটি নতুন শব্দ সংযোজনে শিক্ষার্থীর মেধা ও মনন যাচাইয়ে বিচার্য বলে বিবেচিত হবে। বলা হচ্ছে, সাতটি পর্যায় হলোÑ অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। সুচিন্তিত অভিমতে লক্ষণীয় পর্যায়গুলো যথার্থই ধারাবাহিক এক মেধা মননের সোপান। আর শ্রেণি কার্যক্রমের ওপর ৩৫% মূল্যায়ন সন্নিবেশ করা হবে। যা বোধগম্যের বাইরে নয়। 
আবার বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়নে থাকছে পরীক্ষা কার্যক্রম। ৬৫ শতাংশ মান নির্ণয়ে শিক্ষার্থী মেধা যাচাই হবে নতুন ৭ পর্যায় পদ্ধতির নির্ণায়কে। শ্রেণি কার্যক্রমে থাকছে শিক্ষার্থীর প্রতিবেদন জমা নেওয়া, উপস্থাপনার ব্যক্তিক সক্ষমতা, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যার সমাধান ও পরিকল্পনা প্রণয়ন। বছর শেষে পরীক্ষায় বসবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। বিরতিসহ পাঁচ ঘণ্টা সময়ের পরীক্ষা। ব্যক্তি আর দলভিত্তিক কতিপয় কার্যক্রমে অংশ নেওয়া, লিখিত প্রশ্নের উত্তর, যা শ্রেণিভিত্তিক কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত।

আগের মূল্যায়ন পদ্ধতি জিপিএ নিয়েও আলোচনা হয়। ২০২৬ সাল থেকে নতুন কারিকুলাম যুক্ত হবে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য। যে কোনো নতুন সময় সহজে বোধগম্য কিংবা অনুগামী হতে কিছুটা বিলম্ব তো হয়ই। সময় ও পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে সব ঠিক করে দেয়। নতুন পাঠক্রমও শিক্ষার্থীদের অনুকূলেÑ এমন বোধোদয় হতেও বিলম্ব হবে না বলে প্রত্যাশা।

×