![বাজেট পাস বাজেট পাস](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/editor-picture-final-2407021436.jpg)
সম্পাদকীয়
বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই জাতীয় সংসদে রবিবার পাস হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট। নতুন অর্থবছরের শুরুর দিন অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে এ বাজেট। জাতীয় সংসদে ৬ জুন ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ শীর্ষক ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
এটি দেশের ৫৩তম, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চেয়ে এবারের বাজেটের আকার বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ অর্জন করার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
অধিবেশনজুড়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। বিরোধী দলের সদস্যরা নতুন বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনা করেন। কালো টাকার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যও। মন্ত্রীদের ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি, বিরোধী দলের ৬ জন সংসদ সদস্যের মোট ২৫১টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন- সব মিলিয়ে প্রাণবন্ত বিতর্কই হয়েছে বাজেট প্রস্তাবনা ঘিরে। অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটকে ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অপরাজেয় প্রত্যয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
গত দেড় দশকের বিস্ময়কর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ধ্বনিত হয়েছে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে। প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচনী ইশতেহারের অগ্রাধিকারে থাকা কার্যক্রমগুলোকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
এবারের বাজেটে স্থানীয়ভাবে কম্পিউটার এক্সেসরিজ ও আইটি পণ্য উৎপাদনে করছাড় দেওয়া হয়েছে। ভালো খবর রয়েছে আরেকটি, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় স্বস্তিদায়ক অবস্থায়। নতুন অর্থবছরের শুরুতে পেছনের দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে তাকালে নিশ্চয়ই মানুষ আশাবাদী হবে।
কিন্তু গত অর্থবছর কেমন গেল তার হিসাব নিতে বসলেই বিপদ। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা পুরো অর্থবছর পার করলেন হতাশাজনক পরিস্থিতিতে। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষ নাকাল। ১৫ মাস ধরে ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে মূল্যস্ফীতি। আর ডলারের দাম তো ওপেন সিক্রেট। অর্থনীতি বিরাট চাপে রয়েছে ডলার নিয়ে। তার ওপরে রয়েছে বিদেশী ঋণ পরিশোধের দায়। এমন বাস্তবতায় পাস হয়েছে জাতীয় বাজেট।
আমরা আগেও বলেছি, নিত্যপণ্য আমদানিতে উৎসে কর অর্ধেক কমানোয় বাজারে কতটা স্বস্তি ফিরবে, সেটি আগাম বলা যাবে না। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরেক দফা বাড়বে কিনা, সেটাও বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। অবশ্য নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফেরানোর উদ্যোগও দেখা গেছে বাজেটে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। দেশের গরিব মানুষকে বাঁচাতে হবে। আছে দেশীয় শিল্পকে নানাভাবে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা। সব ছাপিয়ে বাজেটে উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে ফেরার আশাবাদ রয়েছে। এই আশা পূরণ হোক, সেটাই প্রত্যাশা। সেইসঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নে সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাক।