ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১

দেশীয় খেলাধুলা

প্রকাশিত: ২২:১১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

দেশীয় খেলাধুলা

.

৫২তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে সমধিক প্রচলিত জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট, ফুটবল, হকির মতো ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খেলাগুলো যাতে হারিয়ে না যায় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। উল্লেখ্য, এবারে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড রাজশাহীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। এতে সারাদেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮২৪ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করছেন। প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ সমাজের প্রতিভা অন্বেষণসহ খেলাধুলায় উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্টদের দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে নিয়মিত খেলাধুলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। দেশের ছেলেমেয়েরা মেধাবী। একটু সুযোগ-সুবিধা পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই তারা প্রচলিত খেলাধুলার পাশাপাশি দেশীয় খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট হবে। একই সঙ্গে শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, মনমানসিকতার দিক থেকে উন্নত উদার হবে। সব ধরনের মাদক এবং ধর্মীয় উগ্রমতবাদ থেকে থাকবে মুক্ত, যা হবে সন্ত্রাসমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক।

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন যে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি তৈরি হয়েছে এবং বাকিগুলো তৈরির প্রক্রিয়া চলমান। এসব মিনি স্টেডিয়ামে উৎসাহী স্থানীয় তরুণ সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন খেলাধুলার নিয়মিত অনুশীলনসহ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এবং শিল্পপতিরাও এগিয়ে আসতে পারেন। তবে রাজধানীসহ সারাদেশের খেলার মাঠ এবং পার্কগুলোর সুরক্ষাসহ সার্বিক পরিবেশ সবুজায়ন নিশ্চিতকরণে সবার আগে প্রয়োজন সমন্বিত সুষ্ঠু পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, যাতে সেগুলো স্থানীয় প্রভাবশালীদের আধিপত্য বিস্তারে দখল-দূষণে হারিয়ে না যায়।

এক সময় বাংলাদেশের গ্রামগুলো ছিল ছায়া সুনিবিড়, শান্তির নীড়। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ন্ডিত। প্রায় গ্রামেই ছিল ছোট-বড় খেলার মাঠ গোচারণভূমি। প্রবল জনসংখ্যার চাপে খাদ্য সমস্যা মোকাবিলায় সুউচ্চ দালানকোঠা ধান চাষে মাত্রাতিরিক্ত মনোযোগী হওয়ায় এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে উদ্বৃত্ত জমি বাথানে। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎসহ প্রযুক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গ্রামগুলোতেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। ফলে গোচারণ ভূমি এবং খেলার মাঠ বর্তমানে দুষ্প্রাপ্য, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। তাই বলে এখনো যে কিছু অবশিষ্ট নেই তা নয়। আছে সরকারি খাস জমিও। সেসব সংরক্ষণ করে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করা গেলে গ্রামের তরুণদের একটি বিশুদ্ধ বিনোদনের ব্যবস্থা হতে পারে। ফুটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, হকি, এমনকি হ্যান্ডবল খেলার জন্য তেমন ব্যয়বহুল উপকরণের প্রয়োজন পড়ে না। তদুপরি গোল্লাছুট, হা-ডু-ডু, ডাঙ্গুলি, কানামাছি ইত্যাদি চিরায়ত লোকায়ত খেলাধুলা তো আছেই। উদ্যোক্তার অভাবও হবে না। কেননা, অনেক গ্রামেই ছোট-বড় শিল্পপতি এবং প্রবাসী আয় আছে। গণমানুষকে নিয়মিত বিভিন্ন খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করা গেলে নির্মল আনন্দ-বিনোদনের পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদক ইত্যাদির ছোবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে তরুণদের। এতে নতুন নতুন প্রতিভাও উঠে আসবে সুনিশ্চিত।

×