ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

বন্ধুত্বসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি

সাজিয়া আফরিন

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

বন্ধুত্বসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি

স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ক্লাসে পড়লে তাকে সহপাঠী বলি

স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ক্লাসে পড়লে তাকে সহপাঠী বলি। সব সহপাঠী/সহপাঠিনী কী বন্ধু হয়? পরিবারের বাইরেও আরেকটা জগত গড়ে ওঠে সহপাঠীদের সঙ্গে। বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপে সহযোগিতার ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেয় এই সকল সহপাঠী। সুন্দর মানুষ হওয়ার প্রত্যয়ে আমরা শিক্ষাঙ্গনে বিচরণ করি। চলার পথে কেউ কেউ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে। কেউ বা আবার নৈতিক শিক্ষার অভাবে মনুষ্যত্বহীনতার পরিচয় দিতে বিন্দুমাত্র লজ্জাবোধে পড়ে না। ফলে সমাজে দেখা যায় যৌন নির্যাতন কিংবা ইভটিজিংয়ের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা।

প্রতিদিন খবরের কাগজে শিরোনামে আসে অমুক কলেজের ছাত্রী  যৌন নির্যাতনের শিকার অথবা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে অপমানের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে। এই সকল অপ্রত্যাশিত ঘটনা কী আমাদের সুস্থ সমাজের কাম্য? লেখাপড়া, প্রযুক্তি ও আড্ডা এগুলো একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা যেখানে সহপাঠী ও সহপাঠিনীদের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ বিরাজমান। জীবন চলার পথে  বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে এই সকল বন্ধুই বিদ্যমান। কখনো বা এই বন্ধুই যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করে বিপদে একজোট হয়ে প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তুলার মধ্য দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পিছপা হয় না। তবে সব বন্ধুদের থেকে কিন্তু এই ধরনের আচরণ আশা করা যায় না।

কেউ কেউ মেয়েদের পণ্যের সঙ্গে তুলনা করে ভোগের সামগ্রী মনে করে, এদের  ভোগের মধ্য দিয়ে মনের সুখতৃপ্তি লাভ করা যায়। মা-বাবা সারাক্ষণ চিন্তায় অস্থির হয়ে প্রহর গুনে আমার মেয়ে যেমন সুস্থভাবে বাসা থেকে বের হয়ে স্কুল/ কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে গেল, ঠিক তেমনিভাবে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরবে কী? সামাজিক অবক্ষয় কিংবা পারিপার্শ্বিক অবস্থা কিংবা পরিবারে নৈতিক শিক্ষার অভাবে এই সকল সুন্দর কলিগুলো ফুল ফোটার আগেই অকালে ঝরে পড়ে। জীবনের লক্ষ্যে বেছে নেয় বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে। বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেয়। পশুবৃত্তি মনোভাবের দরুন এই সমস্ত সহপাঠী যেমন বন্ধুদের থেকে ছিটকে পড়ে তেমনি সমাজে ঘৃণার পাত্র হিসেবে সর্বত্র বিস্তার লাভ করে।

খারাপের মধ্যে ভালো অবশ্যই থাকবে। তাই বলে সামগ্রিকভাবে সবাইকে খারাপ বলা উচিত নয়। আমরাই পারি এই সুন্দর সমাজে তাদের বেঁচে থাকার মতো পরিবেশ গড়ে দিতে। প্রতিটি পরিবারের উচিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের পারিবারিক শিক্ষা কিংবা  নৈতিক শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তোলা। ওরা যেন মনে করে একই ক্লাসে পড়া সহপাঠিনী ওদের বোন কিংবা বন্ধুর মতো আচরণ প্রত্যাশী। লোভের দৃষ্টিতে ভোগের পণ্য মনে না করা। দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের দায়ভার নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর পরিলক্ষিত। হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান নয়, তেমনি সকল সহপাঠীর আচরণ একরকম হবে আশা করাটা বোধগম্য নয়।

উত্তরা, ঢাকা থেকে

×