ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

নানামুখী ষড়যন্ত্র

-

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ৭ জুন ২০২৩

নানামুখী ষড়যন্ত্র

সম্পাদকীয়

সোমবার গণভবনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবেই কিছু সত্যোচ্চারণ করেন। তাঁর বক্তব্যে এমন কিছু উঠে এসেছে, যা জাতীয় স্বার্থে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। সবচেয়ে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি উঠে এসেছে, সেটি হলো আসন্ন নির্বাচন। তিনি খোলাখুলি বলেছেন, নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জের। সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বানও তিনি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন এলেই নানা ধরনের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়। 
গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে সংবিধান মেনে। নির্বাচিত দল সরকার গঠন করবে, এটাই রীতিনীতি ও প্রত্যাশিত। কিছু দল ষড়যন্ত্র করে দেশে-বিদেশে দেশের এবং সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা চালায়। নির্বাচন প্রতিহত কিংবা বানচাল করার দুরভিসন্ধিকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কুচক্রীমহল দিবাস্বপ্ন দেখে, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে নির্বাচনটাই ভ-ুল করে দিতে পারলে হয়তো অনির্বাচিত কোনো শক্তির হাতে ক্ষমতা চলে আসবে। এতে ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত লাভ তো রয়েছেই, সবচেয়ে বড় লাভ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখা। তাহলে দেশের উন্নয়ন স্থবির হয়ে পড়বে। বাংলাদেশকে আবার পিছিয়ে দেওয়া যাবে। বলাবাহুল্য, যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল, তারা কখনোই বাংলাদেশের মঙ্গল চায় না। চায় না দেশের মানুষের প্রকৃত কল্যাণ। 
প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের জীবন যখন একটু উন্নত হয়, তখনই কিছু কুলাঙ্গার আছে যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সব জায়গায় বদনাম করে বেড়ায়। আর কিছু আছে বিদেশী অনুদানের টাকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দেয়।
সরকারের টানা সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতি হয়েছে, এটি বাস্তবতা। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায়। জনতাকে সংগঠিত করার জন্য বিশেষ নেতৃত্বগুণের প্রয়োজন। একইভাবে জনজীবনকে সুসংহত অর্থবহ করে তোলার জন্যও চাই দক্ষ সুযোগ্য নেতৃত্ব। আমরা এমন একজন দক্ষ ও সুযোগ্য নেতা পেয়েছি, যিনি কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বিশ্বনেতা। তিনি তাঁর কর্ম দিয়ে, কাজে ও কথার মিল দিয়েই বারবার আমাদের মনে পড়িয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকে। বাংলার মানুষও তাঁর মাধ্যমেই জাতির জনকের তথা বাংলার মানুষের স্বপ্নপূরণের ভরসা করেছে।
দেশবাসী প্রত্যাশা করে, স্বাধীনতাবিরোধী দেশবিরোধী চক্রের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়ে সংবিধান সমুন্নত রাখার মধ্য দিয়ে যথাসময়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হবে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে মানুষের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতৃত্বে গঠিত হবে সরকার। নির্বাচিত সরকার ব্যতিরেকে যারা অনির্বাচিত এবং দেশ-জনতার কাছে অঙ্গীকারের ধার ধারে নাÑ এমন শক্তি ক্ষমতারোহণের যে দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তাদের ষড়যন্ত্র নিশ্চিতভাবেই ধূলিসাৎ হবে।

×