ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

রাসায়নিক সারের দাম ও ভর্তুকি

ড. জাহাঙ্গীর আলম

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ১৮ এপ্রিল ২০২৩

রাসায়নিক সারের দাম ও ভর্তুকি

রাসায়নিক সারের দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে

রাসায়নিক সার শস্য উৎপাদনের খুব গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। এর দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উৎপাদন হয় বাধাগ্রস্ত। অতএব, যৌক্তিক পর্যায়ে এর মূল্য নির্ধারণ করা উচিত। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমে গেলে দ্রুত এবং অভ্যন্তরীণ মূল্যের নি¤œমুখী সমন্বয় করা উচিত। ইতোমধ্যে রাসায়নিকের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধির প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে। কারণ, জৈব সার মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাসকে দমিয়ে দেয়। মাটির ক্ষয় প্রক্রিয়া পুনর্গঠনে সহায়তা করে। এ বিষয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। তাতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস পাবে। মূল্যে আসবে স্থিতিশীলতা

রাসায়নিক সারের দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে। গত অক্টোবর মাসে প্রতিকেজি ইউরিয়া সারের দাম বাড়ানো হয়েছিল ৬ টাকা। এবার ইউরিয়া ও নন-ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা। ফলে, এক বছরের মধ্যে সারের মূল্য দু’বার বৃদ্ধি পেল। আগে কৃষক পর্যায়ে ইউরিয়া সারের দাম ছিল ১৬ টাকা কেজি। এখন হয়েছে ২৭ টাকা কেজি। ডিএপি সারের দাম ছিল ১৬ টাকা কেজি। এখন হয়েছে ২১ টাকা। টিএসপি এবং এমওপি সারের দাম ছিল যথাক্রমে ২২ ও ১৫ টাকা কেজি। বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২৭ ও ২০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্য বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ বিক্রিমূল্য বাড়িয়েছে সরকার। এরপরও প্রচুর ভর্তুকি রয়েছে রাসায়নিক সারের ওপর।

বর্তমানে ইউরিয়া সারের আন্তর্জাতিক মূল্য প্রতিকেজি ৪৮ টাকা, ডিএপি ৭০ টাকা, টিএসপি ৫০ টাকা এবং এমওপি ৬০ টাকা। তাতে প্রতিকেজি ইউরিয়া সারে ২১ টাকা, ডিএপি সারে ৪৯ টাকা, টিএসপি সারে ২৩ টাকা এবং এমওপি সারে ৪০ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাসায়নিক সারে সর্বমোট ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল ৭ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা ২৮ হাজার কোটি টাকায় বৃদ্ধি পায়। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে তার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আইএমএফ ঋণের অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে ভর্তুকি কমানো। সে কারণে এবার সারের মূল্য দ্বিতীয় দফায় বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোর প্রয়াস নিয়েছে সরকার।

ইতোমধ্যে জ্বালানি তেলের দাম দু’দফায় বাড়িয়ে কৃষকের সেচ, জমি কর্ষণ ও পরিবহন খরচ বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের মূল্য দফায় দফায় বাড়িয়েও বাড়ানো হয়েছে সেচ ও ধান ভানার খরচ। তাছাড়াও বীজ ও পোকার ওষুধ আগের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে শ্রমিকের মজুরি। ফলে, কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। করোনাকালে প্রায় দু’বছর কৃষির উৎপাদন বিঘ্নিত হয়েছে। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক উৎপাদন আরও হ্রাস পেয়েছে। খাদ্যশস্যের সরবরাহ চেন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাতে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যশস্যের দাম বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য আমদানিকারী উন্নয়নশীল দেশগুলো কৃষিক্ষেত্রে গ্রহণ করেছে আমদানি বিকল্প নীতি। একই পথে হাঁটছে বাংলাদেশও।

জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করার জন্যও খাদ্যশস্যসহ কৃষির সার্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি করা খুব জরুরি। এমতাবস্থায় সারসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি করা আত্মঘাতী হতে পারে। তাতে উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হতে পারেন কৃষক। বিঘিœত হতে পারে খাদ্য নিরাপত্তা। 
দেশে রাসায়নিক সারের প্রচলন শুরু হয় পঞ্চাশের দশকে। তখন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাধ্যমে সার বিতরণ করা হতো নামমাত্র মূল্যে। ষাটের দশকে বিএডিসি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সার সংগ্রহ, বিপণন ও বিতরণের দায়িত্ব চলে যায় সংস্থাটির হাতে। ১৯৬৮-’৬৯ সালে সারের ওপর ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৫৮ শতাংশ। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫-’৭৬ অর্থবছর নাগাদ এর পরিমাণ ছিল ৫২ শতাংশ।  এরপর  থেকে তা ক্রমাগত হ্রাস পায়। ১৯৯৮-৯৯ সালে রাসায়নিক সারসহ কোনো কৃষি উপকরণ বা উৎপাদিত পণ্যের ওপর একদম ভর্তুকি ছিল না। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬ সাল থেকে পুনরায় ভর্তুকি দেওয়া শুরু হয়। বর্তমান সরকারের আমলে তা বৃদ্ধি পায় বহুলাংশে। টাকার অঙ্কে এখন ভর্তুকির পরিমাণ যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি।

কালের পরিক্রমায় রাসায়নিক সারের বিপণন ও বিতরণের ক্ষেত্রেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। পুরো ষাটের দশকে ও সত্তরের দশকের গোড়ায় সার বিপণন ও বিতরণের দায়িত্ব ছিল একচ্ছত্রভাবে বিএডিসির। সত্তরের দশকের শেষভাগে পুরনো বিপণন ব্যবস্থার পরিবর্তে সূত্রপাত হয় এক নতুন বিপণন ব্যবস্থার। ক্রমেই সরকারি খাতের গুরুত্ব তথা বিএডিসির কর্তৃত্ব খর্ব হতে থাকে। সার বিপণনে গুরুত্ব পেতে থাকে বেসরকারি খাত। ১৯৮৫ সালের জুলাই মাস নাগাদ বিএডিসির অধীনস্থ ৪২৩টি থানা বিক্রয় কেন্দ্রের প্রায় সবটাই বন্ধ হয়ে যায়।

মোট ব্যবহৃত সারের  প্রায় ৯৭ শতাংশই বিতরণ ও বিপণন করা হয় বেসরকারি খাতের মাধ্যমে। ১৯৯৪ সাল নাগাদ সার বিপণনে মুক্ত বাজারব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে কার্যকর বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু ১৯৯৫ সালের সার সংকটের পর সরকার পুনরায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করে সার বিতরণের ক্ষেত্রে। বিদেশ থেকে সার আমদানি, বিপণন ও বিতরণে বিসিআইসি এবং বিএডিসির আধিপত্য হয় বিস্তৃত।
বর্তমানে ইউরিয়া সারের উৎপাদন ও আমদানি পুরোপুরি বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন বা বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন বা বিএডিসি এবং বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীগণ মিলিতভাবে আমদানি করেছে টিএসপি, এমওপি এবং ডিএসপিসহ অন্যান্য সার। তাতে সরকারি খাতেরই প্রাধান্য বিদ্যমান। ভর্তুকির অধিকাংশ টাকাই যাচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর খাতে। বাকি টাকা যাচ্ছে বেসরকারি ঠিকাদার ও আমদানিকারকদের পকেটে।

এক হিসেবে দেখা যায়, কৃষি ভর্তুকির ৫৫ শতাংশ পায় বিসিআইসি, ১৮ শতাংশ পায় বিএডিসি, ২২ শতাংশ নেয় বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীগণ এবং বাকি ৫ শতাংশ যায় কৃষকদের জন্য বিভিন্ন সহায়তা হিসেবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যে টাকা ভর্তুকি হিসেবে নেয়, তার বহুলাংশই খরচ হয় রাসায়নিক সারের ‘ট্রেড গ্যাপ’ বা বাণিজ্য ঘাটতি মেটানোর জন্য। অর্থাৎ এ টাকা খরচ হয় সার আমদানির খাতে।
দেশের অভ্যন্তরে রাসায়নিক সার উৎপাদনের দায়িত্বে নিয়োজিত আছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন বা বিসিআইসি। ২০০৬-০৭ সালে সংস্থাটি ১৮.১৭ লাখ টন ইউরিয়া, ০.৫০ লাখ টন টিএসপি এবং ০.৮০ লাখ টন ডিএপি সারসহ মোট ১৯.৪৭ লাখ টন সার উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিল। সেটি ছিল মোট  ব্যবহৃত শতকরা ৬৫.৫৮ ভাগ। তখন আমদানি করতে হতো মাত্র ৩৪.৪২ শতাংশ সার। বর্তমানে দেশে ইউরিয়া উৎপাদন হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ লাখ টনে। ডিএপি ও টিএসপির উৎপাদন যথাক্রমে প্রায় ১ লাখ টন। মোট সারের উৎপাদন সর্বোচ্চ প্রায় ১২ লাখ টন। এটি মোট ব্যবহৃত সারের ২০ শতাংশ মাত্র।

আগামী বছর ইউরিয়া সারের চাহিদা দাঁড়াবে ২৭ লাখ টন, ডিএপির ১৬ লাখ টন, টিএসপির ৭.৫ লাখ টন এবং এমওপির চাহিদা দাঁড়াবে ৯ লাখ টন। মোট সারের চাহিদা হবে ৬৮.৪২ লাখ টন। দেশের অভ্যন্তরে সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব না হলে বর্তমান উৎপাদন মোট চাহিদার মাত্র ১৭ শতাংশ মেটাতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশে এখন ৬টি  সার কারখানা রয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ, শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিঃ, যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিঃ, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিঃ, টিএসপি কমপ্লেক্স লিঃ এবং ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিঃ। এদের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৮ লাখ ৫৯ হাজার টন। এর মাত্র প্রায় ৪০ শতাংশ আমরা ব্যবহার করতে পারছি।

ইতোমধ্যে গ্যাস সরবরাহ সংকটের কারণে যমুনা ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি এবং চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।  শতভাগ রপ্তানিমুখী  জয়েন্ট ভেঞ্চার সার কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানির (কাফকো) উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত। বাংলাদেশে ১ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে ৪৩.৭২ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস প্রয়োজন হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর পরিমাণ ২৫ মিলিয়ন কিউবিক ফিট। এই অপচয় বন্ধ হওয়া দরকার। উৎপাদনের বাইরে থাকা ফ্যাক্টরিগুলো পুনরায় চালু করা দরকার। প্রয়োজনে নতুন সার কারখানা স্থাপান করে উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সস্তা শ্রমিক সরবরাহের কারণে বাংলাদেশে প্রতি ইউনিট রাসায়নিক সার উৎপাদনের খরচ কম।

এক সময় যেখানে প্রায় ৬৬ শতাংশ সারের চাহিদা মেটানো হতো অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাধ্যমে, সেখানে বর্তমানে মাত্র ২০ শতাংশ চাহিদা মেটাতে আমরা সক্ষম হচ্ছি। এটি দুঃখজনক। আমদানি নির্ভরতা আর না বাড়িয়ে  বিসিআইসিকে এখন উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সারের আন্তর্জাতিক সরবরাহ সংকট এবং মূল্যের অস্থিরতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার এটাই একমাত্র পথ।
বাংলাদেশ ইউরিয়া সার আমদানি করে সৌদি আরব, আরব আমিরাত এবং কাতার থেকে। টিএসপি সারের আমদানি হয় মরক্কো এবং তিউনিশিয়া থেকে। ডিএপি সার আমদানি করা হয় চায়না এবং জর্দান থেকে। এমওপি সার আমদানি করা হয় রাশিয়া, বেলারুশ ও কানাডা থেকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একাধিক সারের আমদানির উৎস একই দেশ হয়ে থাকে। দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে সারের আমদানি মূল্য যথাসম্ভব কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে। বাংলাদেশে যৌথ মালিকানাধীন কারখানা স্থাপন করে রাসায়নিক সারের সরবরাহ সংকট ও উচ্চমূল্য পরিহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের ব্যক্তি খাতের  কোম্পানিগুলোরও বড় ধরনের ভূমিকা পালনের সুযোগ আছে।
এক হিসাবে দেখা যায়, ২০০৮-০৯ সাল থেকে ২০২২-২৩ সাল পর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এর অধিকাংশই আচ্ছাদিত ভর্তুকি। রাসায়নিক সারে প্রদত্ত এই ভর্তুকির সুবিধা যারা বেশি ভোগ করেন, তারা মাঝারি ও বড় কৃষক। ছোট কৃষকদের শরিকানা এতে খুব কম। অথচ ভর্তুকি তাদের জন্যই বেশি দরকার। এমতাবস্থায় আমাদের প্রয়োজন হলো আচ্ছাদিত ভর্তুকির পাশাপাশি গোষ্ঠী কেন্দ্রিক বাছাইকৃত ভর্তুকি। ঢালাওভাবে সবার হাতে সমভাবে কৃষি ভর্তুকির সকল টাকা তুলে না দিয়ে প্রগ্রেসিভ হারে সরাসরিভাবে কৃষকের হাতে ওই ভর্তুকির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা নগদ পৌঁছে দেওয়া উচিত। এর জন্য বর্তমান সরকারের আমলে করা প্রায় ১ কোটি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং প্রায় দেড় কোটি কৃষি উপকরণ কার্ড অথবা প্রস্তাবিত ১ কোটি ৮০ লাখ স্মার্ট কার্ড কাজে লাগানো যেতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পরোক্ষভাবে প্রদত্ত আচ্ছাদিত কৃষি ভর্তুকির বিষয়টি সেকেলে মনে হয়।
রাসায়নিক সার শস্য উৎপাদনের খুব গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। এর দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উৎপাদন হয় বাধাগ্রস্ত। অতএব, যৌক্তিক পর্যায়ে এর মূল্য নির্ধারণ করা উচিত। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমে গেলে দ্রুত এবং অভ্যন্তরীণ মূল্যের নিম্নমুখী সমন্বয় করা উচিত। ইতোমধ্যে রাসায়নিকের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধির প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে। কারণ, জৈব সার মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাসকে দমিয়ে দেয়। মাটির ক্ষয় প্রক্রিয়া পুনর্গঠনে সহায়তা করে। এ বিষয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। তাতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস পাবে। মূল্যে আসবে স্থিতিশীলতা।

লেখক : কৃষি অর্থনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা; পরিচালক, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকস এবং সাবেক উপাচার্য, ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ

×