প্রিন্স চার্লস
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনাবসানের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন রাজা হয়েছেন তার বড় ছেলে প্রিন্স চার্লস। নিয়ম অনুযায়ী চার্লসই এখন ব্রিটেনসহ ১৫টি কমনওয়েলথ দেশের রাজা। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর খবর ঘোষণা করার সময়ই রাজ পরিবার থেকে করা টুইটে চার্লসকে রাজা এবং ক্যামিলাকে দ্য কুইন কনসোর্ট বলে উল্লেখ করা হয়। একদিন পর চার্লসকে রাজা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেনের এক্সেশন কাউন্সিল। ব্রিটেনের রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে এই কাউন্সিল গঠন করা হয়। নতুন রাজা কিংবা রানীর সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দিতে শত শত বছর ধরে এই আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসসহ প্রিভি কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদের কয়েক শ’ সদস্য। চার্লসের স্ত্রী ক্যামিলা এবং বড় ছেলে ও উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়ামও ছিলেন। এ উপলক্ষে সেন্ট জেমস প্যালেস সেজেছিল লাল ও সোনালি রঙের মিশেলে। এ সময় কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর নতুন রাজা হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন প্রিন্স চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ। সৃষ্টিকর্তা রাজাকে রক্ষা করুন। রাজা হিসেবে শপথ গ্রহণের সময় ৭৩ বছর বয়সী চার্লস বলেন, তিনি তাঁর কর্তব্য ও সার্বভৌমত্বের গুরুদায়িত্ব সম্পর্কে খুব সচেতন। জনগণের ভালবাসা ও আনুগত্যের মধ্য দিয়েই তিনি ক্ষমতায় থাকবেন।
এদিকে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস হিসেবে বড় ছেলে উইলিয়াম ও পুত্রবধূ কেট মিডলটনের নাম ঘোষণা করেছেন ব্রিটেনের নতুন রাজা তৃতীয় চার্লস। জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। এর আগে চার্লস ও তাঁর প্রয়াত স্ত্রী ডায়ানার যথাক্রমে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস পদবী ছিল। তিনি আরও বলেন, নতুন প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস আমাদের জাতীয় বিষয়গুলোয় অনুপ্রেরণা ও নেতৃত্ব দিয়ে যাবে। প্রান্তিক অবস্থানে থাকা নাগরিকদের মূল ধারায় আনতে সাহায্য করে যাবে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য দেয়া যেতে পারে।
তৃতীয় চার্লস রাজা হওয়ার পর এখন ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারীদের ক্রমতালিকার এক নম্বরে রয়েছেন প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি চার্লসের বড় ছেলে। তাঁর জন্ম ১৯৮২ সালে। মা প্রিন্সেস ডায়ানা। সিংহাসনের উত্তরাধিকারের ক্রমতালিকার দুই নম্বরে রয়েছে প্রিন্স উইলিয়ামের ছেলে প্রিন্স জর্জ। তার জন্ম ২০১৩ সালে। তিন নম্বরে রয়েছে প্রিন্স উইলিয়ামের মেয়ে প্রিন্সেস শার্লট। তার জন্ম ২০১৫ সালে। উল্লেখ্য, নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য সত্ত্বেও ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে তাঁর দুই নাতি প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি এবং তাঁদের স্ত্রী কেট মিডলটন ও মেগান মার্কেল আবারও একত্র হয়েছেন। ফিরে আসা যাক নতুন রাজা প্রসঙ্গে।
মাত্র তিন বছর বয়সে ১৯৫২ সালে চার্লস ইংল্যান্ডের যুবরাজ হয়েছিলেন এবং তিনি ব্রিটিশ সিংহাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ছিলেন যুবরাজ। মায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে দেয়া বার্তায় চার্লস বলেন, এটা আমার এবং আমার পরিবারের জন্য সবচেয়ে দুঃখের মুহূর্ত। এদিকে ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে দেশটির নতুন রাজা তার ছেলে ও সাবেক প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস।
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডসহ আরও ১৪টি রাষ্ট্রের প্রধান হলেন ব্রিটিশ রাজা ৭৩ বছর বয়সী চার্লস। সিংহাসনে মায়ের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার অপেক্ষায় চার্লস কার্যত তাঁর প্রায় পুরো জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। যদিও রানীর বয়সবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য চার্লস পেয়েছেন। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রয়াত রানীর ৭৩ বছর বয়সী বড় ছেলে চার্লস সিংহাসনে আরোহণের পথে দীর্ঘ সময়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন।
চার্লস একবার বলেছিলেন, সমস্যাটা হলো এখানে কাজের কোন বিবরণ নেই। তাই যদি এগিয়ে যেতে চাও, বরং নিজেই সেটা তৈরি করে নাও। একজন সহযোগী ২০০৬ সালে যুবরাজের বিষয়ে বলেন, ব্যক্তি হিসেবে অনেক বিষয়ে সক্রিয় ছিলেন চার্লস। যদিও সেটা পাদপ্রদীপের আড়ালেই ছিল। চার্লস নিজেকে একজন ভিন্নমতাবলম্বী হিসেবে দেখেন। তিনি বিদ্যমান রাজনৈতিক ঐকমত্যের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছেন। যুবরাজ হিসেবে তাঁর কাঁধে ছিল প্রত্যাশার বোঝা। আত্মসম্মান বোধ নিয়ে তেমন মাথাব্যথা ছিল না বলে জীবনে তাঁকে কম ভুগতে হয়নি। তবে সঠিক কাজটি করার জন্য ছিল তাঁর বিরামহীন প্রচেষ্টা।
চার্লস তাঁর মায়ের প্রজাদের জীবনমান উন্নয়নে সাহায্য করাকে নিজের কর্তব্য হিসেবে দেখেছেন। মন থেকে যেসব বিষয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করতেন, সেসব বিষয়ে ছিলেন স্পষ্টভাষীÑবিশেষ করে স্থাপত্য, পরিবেশ, কৃষিকাজ, বিশ্বাস ও বিকল্প চিকিৎসা। প্রায়ই যুবরাজের দৃষ্টিভঙ্গি খারিজ করে দেয়া হতো। উদ্ভট বা ফ্যাশনেবল বলে উপহাস করা হয়। কিন্তু অন্যরা মনে করেন, তিনি বর্তমান চিন্তাধারা থেকে এগিয়ে আছেন।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও পরিবেশগত বিপর্যয় নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সতর্ক করেছিলেন চার্লস। তিনি বলেছিলেন, স্বাভাবিকভাবেই ব্যবসা থেকে অর্জিত বিশ্বের সব অতিরিক্ত সম্পদ দিয়ে কী লাভ হবে, যদি বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে এটিকে পুড়তে দেখা ছাড়া আপনি এর জন্য কিছুই করতে না পারেন। চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ ১৯৪৮ সালের ১৪ নবেম্বর বাকিংহাম প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন। সিংহাসনের উত্তরাধিকারের দিক থেকে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। দাদা রাজা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মারা গেলে তিনি উত্তরাধিকারী হন এবং তাঁর মা হন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। চার্লসের গৃহশিক্ষিকা ক্যাথরিন পিবলসের চোখে, বালক হিসেবে চার্লস অতি সংবেদনশীল, একাকী ও অত্যন্ত লাজুক ছিলেন। পড়াশোনা ও অঙ্কন ছিল তাঁর নীরব সাধনা।
১৯৫৮ সালে ৯ বছর বয়সে চার্লসকে প্রিন্স অব ওয়েলস ঘোষণা করা হয়েছিল। এমন ঘোষণার জন্য তিনি ছিলেন অপ্রস্তুত। এই পদবী ১৪ শতকের শুরুর দিকে দৃশ্যত সিংহাসনের উত্তরাধিকারীর জন্য সংরক্ষিত ছিল। চার্লসকে ১৩ বছর বয়সে গর্ডনস্টউনে পাঠানো হয়। তাঁর বাবাও এই স্কটিশ বোর্ডিং স্কুলে পড়তেন। নিদারুণ একাকিত্বের কারণে তিনি স্কুলটিকে অপছন্দ করতেন। ওই স্কুলে কাটানো তাঁর সময়গুলোকে বন্দী শিবিরের সঙ্গে তুলনা করেন যুবরাজ। চার্লস অস্ট্রেলিয়ান গ্রামার স্কুলে ১৯৬৬ সালে পড়াশোনার সময়টুকু উপভোগ করেছেন। তিনি পরিপক্ব, বিকশিত ও স্বরূপে আবির্ভূত হন। চার্লস ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন।
১৯৭০ সালে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। ১৯৬৯ সালে কেরনারফন দুর্গে ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’ হিসেবে অভিষেক হওয়ার আগে এক মেয়াদে ওয়েলশ ভাষাও শিখেছিলেন চার্লস। ১৯৯৫ সালের নবেম্বরে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে রাজপরিবার সম্পর্কে রীতিমতো এক বোমা ফাটান ডায়ানা। এরপর চার্লসের মা রানী এলিজাবেথ দুজনকে বিচ্ছেদের আহ্বান জানান। ১৯৯৬ সালের ২৮ আগস্ট দুজন বিচ্ছেদ সম্পন্ন করেন। ডায়ানা ১৯৯৭ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন। তখন চার্লস প্যারিস থেকে তাঁর মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করেন। তাঁকে পূর্ণ রাজকীয় মর্যাদায় সমাহিত করার জন্য চাপ দেন। শুরুর দিকে চার্লসের সঙ্গী হিসেবে ক্যামিলাকে আলোচনাতেই রাখতে চায়নি জনগণ। এমনকি রানীরও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলায়। জরিপে তাঁদের বিয়ের প্রতি সমর্থন বাড়তে থাকার বিষয়টি দেখা যায়। ২০০৫ সালে সম্পন্ন হয় দুজনের বাগদান। ওই বছরের ৯ এপ্রিল উইন্ডসর গিল্ডহলে সাধারণ আনুষ্ঠানিকতায় তাঁরা আবদ্ধ হন বিবাহবন্ধনে। ক্যামিলা ‘ডাচেস অব কর্নওয়েল’ উপাধি পান।
এর পর থেকে চার্লসকে তাঁর ‘প্রিয় স্ত্রী’র পাশে দৃশ্যত সুখী ব্যক্তি হিসেবে সময় কাটাতে দেখা যায়। তিনি দাদাও হয়েছেন। চার্লস রাজা হলে ক্যামিলার পদবী কী হবে, সিংহাসন সংক্রান্ত বিষয়টি ২০২২ সালে সুরাহা করে দেন রানী। সে অনুযায়ী চার্লস রাজা হওয়ায় ক্যামিলা এখন থেকে কুইন কনসর্ট।
৭৩ বছর বয়সী রাজা চার্লস তাঁর প্রথম ভাষণে বলেন, অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। জীবনভর আমার মা মহামান্য রানী আমি ও পরিবারের সব সদস্যের জন্য অনুপ্রেরণার এবং অনুকরণীয় হয়ে ছিলেন। অন্য যে কোন পরিবারের মতো আমরাও মায়ের ভালবাসা, স্নেহ, দিকনির্দেশনা, বোঝাপড়া এবং অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। রানীর অভিষেকের সময়ের কথা উল্লেখ করে চার্লস বলেন, সিংহাসনে রানীর এমন সময় অভিষেক হয়েছিল, যখন কিনা বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্দশা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল। তখনও মানুষ প্রাচীন রীতিনীতিতে অভ্যস্ত।
৭০ বছর ধরে আমরা দেখেছি, আমাদের সমাজ বহুসংস্কৃতি ও বিশ্বাসের এক মেলবন্ধনে পরিণত হয়েছে। সাংবিধানিক রীতিনীতি বজায় রাখার অঙ্গীকার করে চার্লস বলেন, রানী যেভাবে অবিচল একনিষ্ঠতা দেখিয়েছেন, আমিও এখন দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকার করছি, ঈশ্বরের কৃপায় যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন আমাদের দেশের সাংবিধানিক রীতিনীতি বজায় রাখব। নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর নিজের জীবনেও পরিবর্তন আসবে বলে উল্লেখ করেন রাজা চার্লস। তিনি বলেন, দাতব্য সংস্থাসহ যেসব ক্ষেত্রকে আমি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে থাকি, সেগুলোয় এখন আর আগের মতো অত সময় ও শ্রম দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। গুরুত্বপূর্ণ এসব কাজ অন্য বিশ্বস্ত মানুষের হাত দিয়ে পরিচালিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পাশ থেকে সহযোগিতা করে যাওয়ার জন্য স্ত্রী ক্যামিলার প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান চার্লস। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে যাঁরা শোক জানিয়েছেন ও সাহস জুগিয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নতুন ব্রিটিশ রাজা। ভাষণের শেষে মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে ‘ডার্লিং মামা’ হিসেবে উল্লেখ করেন চার্লস।
সবশেষে যে অনুষ্ঠানটি হবে, সেটা হচ্ছে নতুন রাজার অভিষেক। ব্রিটেনের প্রথা অনুযায়ী অভিষেক হলো রাজা হিসেবে চার্লসের দায়িত্ব গ্রহণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী ধাপ, যখন তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মুকুট পরবেন। তবে এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই সম্ভবত খুব দ্রুত এই অভিষেক অনুষ্ঠান হবে না। রানী এলিজাবেথ সিংহাসনে বসেছিলেন ১৯৫২ সালে, কিন্তু ১৯৫৩ সালের জুনের আগে তার অভিষেক হয়নি। গত ৯০০ বছর ধরে অভিষেক অনুষ্ঠান হয় ওয়েস্টমিনস্টার এ্যাবেতে। উইলিয়াম দ্য কনকোয়ারার ছিলেন প্রথম রাজা, যার অভিষেক হয়েছিল সেখানে। আর চার্লস হবেন ৪০তম। এটি এ্যাংলিকান ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যা পরিচালনা করেন আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি।
আনুষ্ঠানিকতার চূড়ান্ত পর্বে তিনি চার্লসের মাথায় সেন্ট এ্যাডওয়ার্ড মুকুট স্থাপন করবেন। এটি খাঁটি স্বর্ণের তৈরি, যা ১৬৬১ সাল থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। টাওয়ার অব লন্ডনে যেসব মণিমানিক্য রাখা আছে, এটি তার মধ্যমণি। একমাত্র রাজা বা রানীর অভিষেকের সময় এটি তারা পরেন। রাজকীয় বিয়ে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান না হলেও অভিষেক একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের খরচ সরকার বহন করে এবং সরকারই এর অতিথি তালিকা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেয়। এই অনুষ্ঠানে গানবাজনা হয়, হয় পবিত্র বাইবেল পাঠ এবং রীতিনীতি পালন। ব্যবহার করা হয় কমলা, গোলাপ, দারুচিনি, কস্তুরি এবং অসম্বার।
পুরো বিশ্বের সামনে নতুন রাজা অভিষেক শপথ গ্রহণ করবেন। এসব আনুষ্ঠানিকতার সময় তিনি নতুন দায়িত্বের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করবেন রাজদণ্ড। আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবারি তার মাথায় খাঁটি সোনার মুকুট পরিয়ে দেবেন। এভাবেই শুরু হবে ব্রিটেনের নতুন রাজার নতুন যুগ। শুভ হোক নতুন রাজার নতুন যাত্রা।
লেখক : গবেষক, লন্ডন প্রবাসী