.
কথা ছিল ’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচী বিস্তারিতভাবে ঘোষণা করবেন। সবাই জানেন সেটি ঘটেনি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর খুনীরা কেবল বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচীই বাতিল করেনি, কালক্রমে দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি যে রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ ওরফে বাকশাল গঠন করেন, সেটিকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি গালিতে পরিণত করে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ স্বনামে আবির্ভূত হয়। বাকশাল নামক একটি রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের মূল স্রোতের চাইতে স্বতন্ত্র পরিচয় নিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ৯৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিরুদ্ধাচরণকারীরা ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগ বাকশাল ভুলে থাকারই চেষ্টা করে এবং ’৯৬ বা তার পরে সরকারে থেকেও বাকশাল বা বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব বিষয়ে কোন আলোচনাই করেনি। এখনও বাকশাল বা বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের আলোচিত বিষয় নয়। সাম্প্রতিককালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচীর কথা বলেন এবং একটি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের বিভিন্ন কর্মসূচীর ইতিবাচক দিকগুলোও তুলে ধরেন। এটি নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, বঙ্গবন্ধু যদি তার দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে পারতেন, তবে স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা অনেক আগেই পেতাম। এমনকি বৈষম্য নামক কোন শব্দকেই রাষ্ট্রের কোথাও খুঁজে পেতাম না। বাংলাদেশের অগ্রগতিকেও আজ ২২ সালে উন্নয়নশীল দেশের হিসাব করতে হতো না, এটি পরিণত হতো উন্নত দেশে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের নতুন প্রজন্ম তো দূরের কথা, প্রৌঢ়রাও দ্বিতীয় বিপ্লব সম্পর্কে তেমন কোন ধারণাই রাখেন না। এই বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা বা গ্রন্থাদিও তেমন নেই। তবে মনে করি বঙ্গবন্ধুকে সম্পূর্ণ জানতে হলে বাকশাল বা দ্বিতীয় বিপ্লব সম্পর্কেও জানতে হবে। খুব সংক্ষেপে চেষ্টা করব দ্বিতীয় বিপ্লবের সারাংশটুকু তুলে ধরতে।
দ্বিতীয় বিপ্লবের পটভূমি : বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব আকাশ থেকে ঝরে পড়া কোন বিষয় নয়। এটি বস্তুত সারাবিশ্বে বিশ শতকে কমিউনিজম বা সমাজতন্ত্রের যে বিকাশ ঘটে, তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নিজের মতো করে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধুর এই নীতি ও আদর্শকে মুজিববাদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। অনেকে বলতেন এটি গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের অনন্য এক সংমিশ্রণ। তবে এটি বলতেই হবে যে, কমিউনিজম বা সমাজতন্ত্র বঙ্গবন্ধুর সময়েরই প্রথম ধারণা নয়। বরং রুশ বিপ্লব থেকে এর বিকাশ। সূচনা কার্ল মার্ক্সের দর্শনের ওপর। বস্তুত বিশ্বের ইতিহাসে এটি একটি অসাধারণ ধারণা, যা প্রচলিত পুঁজিবাদী দুনিয়ার চাইতে অবশ্যই ব্যতিক্রমী। মনে করা হয় ১৯০৫ সালে রুশ বিপ্লবের সূচনা হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বা লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ১৯১৭ সালের অক্টোবরে জয়ী হয় সমাজতন্ত্রীরা।
১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর ১৯১৯ কমিনটার্ন জন্ম নেয়। এই পটভূমিকায় ১৯২০ সালের ১৭ অক্টোবর মানবেন্দ্রনাথ রায় (নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য)-এর সক্রিয়তায় সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দ শহরে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার সময় পার্টির সভ্য হন ৭ জন। ১) মানবেন্দ্রনাথ রায়, ২) এভেলিন ট্রেন্ট রায়, ৩) অবনী মুখার্জি, ৪) রোজা ফিটিংহফ, ৫) মুহম্মদ আলি (আহ্মদ হাসান), ৬) মুহম্মদ শফিক সিদ্দিকী, ৭) এমবিটি আচার্য বা এম প্রতিবাদী আচার্য। পার্টির সম্পাদক হন মুহম্মদ শফিক সিদ্দিকী। কমিনটার্ন (১৯১৯-৪৩) নির্ধারিত নীতি অনুসরণ করে এবং ভারতের পরিস্থিতির উপযোগী একটি কর্মসূচী গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিনটার্ন ১৯২১ সালে সিপিআইকে কমিউনিস্ট গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজ, লাহোর, কানপুর শহরকে কেন্দ্র করে পার্টি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন মোজাফ্ফর আহ্মেদ, এস এ ডাঙ্গে, সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার, গোলাম হুসেন প্রমুখ নেতারা। https://cpimwb.org.in/wp-content/ uploads/.....
অন্যদিকে, পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টির জন্মের বিবরণটা উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে এ রকম : ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তানে একটি স্বতন্ত্র কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ উদ্দেশ্যে ঢাকায় ৭ সদস্যের একটি আঞ্চলিক কমিটি গঠন করা হয় (১৯৪৭)। ১৯৪৮ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত কাউন্সিলররা ৬ মার্চ পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। সাজ্জাদ জহিরকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়। একই দিনে পূর্ববঙ্গের কাউন্সিলরগণ ১৯ সদস্যের পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক কমিটি গঠন করেন। এ কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন খোকা রায়। উইকিপিডিয়ার মতে, চীন-সোভিয়েত দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে পার্টিতে অভ্যন্তরীণ মতানৈক্য দেখা দিলে ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি ভাঙ্গনের শিকার হয়। ফলত পার্টি মণি সিংহের নেতৃত্বে মস্কোপন্থী গ্রুপ এবং মোহাম্মদ তোয়াহার নেতৃত্বে চীনপন্থী গ্রুপÑ এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কমিউনিস্ট পার্টি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা কর্মসূচীকে (১৯৬৬) পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্রিটিশ ভারত বা পাকিস্তানে রাজনীতির এই ধারার সঙ্গে মোটেও যুক্ত ছিলেন না। তিনি বস্তুত হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর শিষ্য ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তিনি মুসলিম লীগকে অবলম্বন করেই অংশগ্রহণ করেন রাজনীতিতে। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি বা অন্য কোন দলের রাজনীতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। বরং স্বাধীনতা উত্তরকালের জনগণের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সম্মেলনের সভাপতি মওলানা ভাসানী ১৯৫৭ সালের ৬-১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার কাগমারীতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেন পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন। তারও পরে মস্কো-পিকিং দ্বন্দ্বে ভাসানীর দল ন্যাপ দুভাগে বিভক্ত হয়। মওলানা ভাসানী পিকিংপন্থী ও মোজাফফর আহমেদ মস্কোপন্থী ন্যাপের নেতা থেকে যান। কালক্রমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কাছে তারা পরিণত হন নিভু নিভু প্রদীপে।
তবে আওয়ামী লীগ কমিউনিস্ট বা সমাজতন্ত্রের ধারার রাজনৈতিক দল না হলেও সময়ের দাবিতে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনসমূহে বাম ধারার রাজনীতির প্রভাব পড়ে। বস্তুত তখনকার নতুন প্রজন্মের কাছে কমিউনিজম বা সমাজতন্ত্র একটি প্রচ- আকর্ষণ হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের নেতা সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি অংশ সমাজতান্ত্রিক চেতনায় বেড়ে ওঠে এবং এরই প্রকাশ ঘটে স্বাধীনতার পরবর্তীকালে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের জন্মের মধ্য দিয়ে।
’৭২ সালের সংবিধানে বঙ্গবন্ধু সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় মূল ৪ নীতির একটি হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে এই সংবিধানের অনেক কাটাঁেছড়া হয়। আজকের দুনিয়াতে সমাজতন্ত্র তেমন বেশি উচ্চারিত শব্দ নয়। বিশেষত বার্লিন দেয়ালের পতনের পর, রুশ প্রজাতন্ত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া এবং চীনও সমাজতন্ত্রের আদি ধারণা থেকে সংশোধনবাদী সমাজতান্ত্রিক দেশ হয়ে পড়ায় এখন সারাবিশ্বে হাতেগোনা কয়েকটি সমাজতান্ত্রিক দেশ আছে। তারাও সমাজতন্ত্রের সঙ্গে ধনবাদী ব্যবস্থাকে মিশ্রণ করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তুলেছে। কমিউনিস্ট পার্টি বা সমাজতান্ত্রিক দলসমূহের বিস্তারও গ্রহণযোগ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে এক সময়ে সমাজতন্ত্রের প্রচন্ড দাপট ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করতে না পারলেও পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ইত্যাদি রাষ্ট্রে সমাজতন্ত্রী বা কমিউনিস্ট দল বা বাম ফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল দীর্ঘদিন। বাংলাদেশকে প্রচলিত ধারণার বাইরে নিজস্ব ধরনের সমাজতান্ত্রিক ধারণার দেশে পরিণত করার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর এই প্রচেষ্টার প্রথম প্রকাশ ১৯৭২ সালের সংবিধান, যা এখনও পুরোপুরি না হলেও কার্যকর রয়েছে। তিনি ১৯৭৫ সালে তাঁর দল আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগে রূপান্তরসহ রাজনৈতিক ভাবনার কিছু মৌলিক পরিবর্তন করেন। অনেকেই বাকশালকে একদলীয় শাসন বলে না জেনে-বুঝেই গালি দেয়। তবে বিজ্ঞজনরা বঙ্গবন্ধুর সেই দুঃসাহসী পদক্ষেপকে দ্বিতীয় বিপ্লব বা শোষিতের গণতন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেন। তাদের মতে, স্বাধীনতাযুদ্ধ করে আমরা প্রথম বিপ্লব সম্পন্ন করি। শোষিতের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে আমরা দ্বিতীয় বিপ্লব সম্পন্ন করতে চেয়েছি। কাকতালীয় বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোও এখন তাদের মূল ভাবনা অনুসারে সমাজতন্ত্রের কথা ভুলেও উচ্চারণ করে না।
যারা পুরো বিষয়টা বোঝেন না, তাদের ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব, চীনের মাও সেতুংয়ের বিপ্লব, কিউবার ফিডেল ক্যাস্ট্রো, ভিয়েতনামের হো চি মিনের লড়াই ইত্যাদি পাঠ করতে পারেন। মার্ক্সের দ্যস ক্যাপিটাল, কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস, লেনিন ও মাও সেতুংয়ের রচনাবলী পাঠ করলে সমাজতন্ত্র/কমিউনিজম সম্পর্কে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। বস্তুত রুশ বিপ্লবের পরেই সারাবিশ্বে কমিউনিজম বা সমাজতন্ত্রের ব্যাপক প্রভাব পড়তে থাকে। ভারতবর্ষও এর ব্যতিক্রম নয়।
সমাজতন্ত্রের উৎপত্তি ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব এবং তার থেকে উদ্ভূত পরিবর্তনের ভেতরে নিহিত, যদিও এটি আগের আন্দোলন এবং ধারণা থেকেও বিভিন্ন ধারণা গ্রহণ করেছে। কার্ল মার্ক্স ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের লেখা কমিউনিস্ট ইস্তেহার বইটিতে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কথাটি ব্যবহার করা হয়। বইটি ১৮৪৮ সালের সামান্য আগে লেখা হয়। বইটি পুরো ইউরোপকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ইউরোপে ১৯ শতকের শেষ তৃতীয়াংশে মার্ক্সবাদকে গ্রহণ করে সমাজতান্ত্রিক দলগুলো ওপরে আসতে শুরু করে। অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি বিশ্বের প্রথম নির্বাচিত সমাজতান্ত্রিক পার্টি, যখন পার্টি ১৮৯৯ সালে কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল।
১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীবলে বহুদলীয় সংসদীয় সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং দেশের সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাকশাল নামক একটি একক রাজনৈতিক দল গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই এ দলের চেয়ারম্যান এবং সম্পাদক হন এম মনসুর আলী। সংসদে উত্থাপনের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে এই বিল সংসদে পাস হয়ে যায়। ইত্তেফাক, বাংলাদেশ টাইমস, দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ অবজারভার- এ চারটি দৈনিক ছাড়া বাকশাল ব্যবস্থায় সকল সংবাদপত্রের ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়। ১৮টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাকশাল গঠিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর বাকশাল ছিল দেশ বদলে দেয়ার কর্মসূচী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী, খোন্দকার মোশতাক আহমদ, আবদুল মালেক উকিলসহ মোট ১৫ জন সদস্য নিয়ে বাকশালের নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি জনগণের অভূতপূর্ব সাড়া পান। মানুষ বঙ্গবন্ধুর এ দ্বিতীয় বিপ্লবের প্রতি ব্যাপকহারে সাড়া দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু এরপরের মর্মান্তিক ঘটনাপ্রবাহ আমাদের সবার স্মৃতিতে আছে।
ঢাকা, ১৪ আগস্ট ’২২
লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক, ডিজিটাল প্রযুক্তির অনেক ট্রেডমার্ক, প্যাটেন্ট ও কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী
[email protected]
www.bijoyekushe.net.bd