
ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সে জন্য পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় পুলিশকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। একই সঙ্গে সাবধান থাকতে হবে, যেন পরাজিত শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে।”
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। স্বৈরাচার পতনের পর পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশকে উজ্জীবিত করতে। পুলিশের কাজের সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।”
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নিরাপত্তার দিক থেকে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। নারী ও শিশু নিরাপত্তা পেলেই দেশ আরও এগিয়ে যাবে। সব স্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় পুলিশকে ভূমিকা পালন করতে হবে।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে, পুলিশ এই স্বপ্ন পূরণের মূল শক্তি। এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্বৈরাচার আমলে পুলিশ জনগণের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছিল তা কমিয়ে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, মানুষ ও পুলিশের মধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলা, যাতে মানুষ পুলিশকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে।”
তিনি বলেন, “আমরা একটি ন্যায্যতার ভিত্তিতে গঠিত বৈষম্যমুক্ত দেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি। আমরা দ্বিতীয় বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখছি, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগ যেন আমরা না হারাই। এবার ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে চিরজীবনের জন্য দায়ী থাকবো।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা একটা যুদ্ধাবস্থায় আছি। অশুভ শক্তি আমাদের স্বপ্ন ও ঐক্য ভেঙে দিতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে চেষ্টা করছে। একে প্রতিহত করতে পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, সেজন্য পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ ও ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনী ও অন্যায় কাজে ব্যবহার করা না যায় সেজন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের আগের সময়টা অনেকটা কঠিন, পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে পরাজিত শক্তি যেন কোনভাবেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল বাহারুল আলম এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শিহাব