
ছবিঃ সংগৃহীত
স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধের পর দেশীয় বস্ত্রকলগুলোতে বিক্রি বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে, যা কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে উদ্যোক্তাদের মধ্যে। তবে পুরনো এলসির বিপরীতে এখনো কিছু পরিমাণে ভারতীয় সুতা আসায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই সুতার দাম প্রতি কেজিতে অন্তত ১৫ সেন্ট বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা, যা নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে দেশের সুতা উৎপাদন খরচ কমানো ছাড়া বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশের সুতা উৎপাদনের সক্ষমতা বছরে প্রায় ৪০ কোটি কেজি, যা নিট পোশাকের শতভাগ এবং ওভেন পোশাকের প্রায় ৬০ শতাংশ চাহিদা পূরণে সক্ষম।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থলপথে ভারত থেকে সস্তা সুতা আসায় অন্তত ৮ হাজার কোটি টাকার দেশীয় সুতা অবিক্রিত ছিল। তবে সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে।
বিটিএমএ-র সহসভাপতি জানান, গত দুই সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ কাউন্টের সুতার বিক্রি ২৫ শতাংশ বেড়েছে। তাঁর ভাষায়, "লোকাল সুতার ডিমান্ডটা বেড়েছে কারণ অবৈধভাবে সুতা আমদানি করার সম্ভাবনাটা কমে গেছে।"
তবে অন্যদিকে, রপ্তানিকারকরা বলছেন, স্থানীয় সুতার চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়ে গেছে। বর্তমানে ৩০ কাউন্টের নিট সুতার দাম দাঁড়িয়েছে ৩ ডলার ৫ সেন্ট, যা স্থলপথে আমদানি চলাকালীন ছিল ২ ডলার ৯০ সেন্ট।
বিকেএমইএ সভাপতি জানিয়েছেন, সুতার দামের এই ঊর্ধ্বগতি রপ্তানি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে বিটিএমএ’র সাবেক নেতা দাবি করেন, পুরনো ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সর্বোচ্চ ৫ সেন্ট পর্যন্ত দাম বাড়তে পারে, এবং বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা তো লস করতেছি, কতদিন লস করব? আমাদের উদ্দেশ্য দাম বাড়ানো নয়, বরং ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অবস্থায় দেশীয় উৎপাদকদের অবশ্যই উৎপাদন খরচ সাশ্রয়ী রাখতে হবে। উৎপাদনের খরচের উপাদানগুলো যাতে আর না বাড়ে, সেদিকে নজর দিতে হবে।
তাদের মতে, উচ্চমূল্যের সুতা দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে যদি না উৎপাদনে দক্ষতা ও খরচ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা যায়।
মারিয়া