
ছবিঃ সংগৃহীত
জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পিতার কন্যা লামিয়ার ধর্ষণের শিকারের এক মাস পরে আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্র ও সমাজের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
রুমিন ফারহানা বলেন, "ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। লামিয়া তার বাবাকে হারিয়েছে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে। বাবার কবর জিয়ারত শেষে আত্মীয়র বাড়িতে যাওয়ার পথে তার সঙ্গে নারকীয় একটি ঘটনা ঘটে। আমরা মনে করি, এই ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ই মার্চ। এরপর দীর্ঘ এক মাস পেরিয়ে, মেয়েটি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।"
তিনি আরও বলেন, "এই এক মাসেরও বেশি সময় লামিয়াকে যে মানসিক যন্ত্রণা, সামাজিক অপবাদ এবং অসহ্য মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, সেটাই তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে। মেয়েটির কাছে মৃত্যু অধিক শ্রেয় মনে হয়েছে এই সমাজের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে।"
রুমিন ফারহানা অভিযোগ করে বলেন, "রাষ্ট্র এখানে দ্বিগুণভাবে দায়ী। একদিকে ধর্ষণ একটি ভয়ঙ্কর ফৌজদারি অপরাধ, যা দমন করবার পূর্ণ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। অপরদিকে, একজন নারীকে সমাজ যেভাবে হেয় করে, তার এক নির্মম উদাহরণ হলো লামিয়ার কাহিনী।"
তিনি জানান, মেয়েটি সাহসের সঙ্গে প্রথম থেকেই আইনগত ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিল। অপরাধীরা তার ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করলেও, সে ২০ মার্চ মামলা করে এবং সমস্ত আলামত পেশ করে। "প্রপার লিগ্যাল প্রসিডিউর অনুসরণ করে মেয়েটি সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গেলেও, সমাজের কুৎসিত আচরণ ও নির্যাতন সে সহ্য করতে পারেনি," বলেন ব্যারিস্টার রুমিন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, "মেয়েটি ধর্ষণের মতো ফৌজদারি অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পেরেছিল, কিন্তু সমাজের চাপ ও হেয় করার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে মাত্র এক মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে। তাই, এই আত্মহত্যা শুধুই একটি ব্যক্তিগত দুর্যোগ নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের এক নির্মম ব্যর্থতা।"
শহীদ পিতার সন্তান হওয়ার কারণে রাষ্ট্রের আরও অধিক দায়িত্ব ছিল তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। "একজন মানুষ যখন গণআন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন তার অনেক শত্রু তৈরি হয়—এটা রাষ্ট্রকে বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে," যোগ করেন রুমিন ফারহানা।
মারিয়া