ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

জামায়াত-শিবির একটা গালি, হাওয়া ভবন একটা গালি, এখন জয় বাংলাও আরেকটা গালি: গোলাম মাওলা রনি

প্রকাশিত: ১৪:০২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৪:০২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

জামায়াত-শিবির একটা গালি, হাওয়া ভবন একটা গালি, এখন জয় বাংলাও আরেকটা গালি: গোলাম মাওলা রনি

ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক সংসদ সদস্য ও কলামিস্ট গোলাম মাওলা রনি বলেন, জামাত-শিবির একটি গালি, রাজাকার একটি গালি, আল-বদর একটি গালি, বাকশাল একটি গালি, হাওয়া ভবন একটি গালি। এখন আওয়ামী লীগও এক ধরনের গালিতে পরিণত হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ বললে কেউ আগের মতো গ্রহণ করে না। এখন তারা ‘জয় বাংলা’ বলে, অথচ ‘জয় বাংলা’ও এখন একপ্রকার গালির মতো ব্যবহৃত হয়। এই অবস্থায় রাজনৈতিকভাবে অনেক জায়গা গালিতে পরিণত হয়েছে—আপনি যতই বলুন না কেন, সাধারণ মানুষ ওই পক্ষের হয়ে কথাগুলো গ্রহণ করবে না। আপনি যদি বাকশাল, হাওয়া ভবন, জামাত-শিবির, রাজাকার বা আল-বদরের পক্ষেও কথা বলেন, সাধারণ মানুষ তা আর গ্রহণ করে না।

এখন আমাদের ছাত্ররা নতুন এক ব্যবস্থার কথা বলছে। আমাদের উচিৎ, এই নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করা। বর্তমানে নবীন ও প্রবীণের মধ্যে এক প্রকট ব্যবধান তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মূলধারার রাজনৈতিক শক্তি বলতে জামাত-শিবির, বিএনপি বা আওয়ামী লীগ—এই তিনটি দলকে ধরা হয়। তবে আওয়ামী লীগ এখন আর আগের মতো নেই, জাতীয় পার্টিও নেই। মূলত ফ্রন্টলাইনে এখন তিনটি গ্রুপ। যদি এখনই ভোট হয়, তাহলে ৯৫% আসনে বিএনপি জিতে যাবে, বাকিটা জামাত পাবে। এনসিপি (নতুন উদীয়মান দল) হয়তো একটি আসন পেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় না যে এনসিপি এখনই বড় কিছু পাবে। তবে যেহেতু তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তারা মনে করে যে দেশের সব মানুষ তাদেরই সমর্থন করে। এটি ক্ষমতাসীনদের এক ধরনের ভ্রান্ত ধারণা। তারা মনে করছে, যে বিপ্লব তারা করেছে, তা বিএনপি গত ১৭ বছরে করতে পারেনি। বিএনপি ২০০৬ সাল থেকে যা করতে পারেনি, তারা তা করে ফেলেছে। তাই তারা নিজেদের অনেক স্মার্ট ও যোগ্য মনে করে, তিনি মন্তব্য করেন। 

তারা মনে করে, যেভাবে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মাত্র ২১ বছর বয়সে ফ্রান্সের সম্রাট হতে পেরেছিলেন, ১৫ লাখ সৈন্যের কমান্ডার-ইন-চিফ হতে পেরেছিলেন, আমাদের নাহিদ সারজিস কিংবা অন্য নেতারাও পারবে। কারণ এখনকার যুগে তো Facebook, Twitter, Google আছে। তারা মুহূর্তেই জানতে পারে মারিয়ানা ট্রেঞ্চে কোন মাছ কী খাচ্ছে—যা নেপোলিয়নের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তারা প্রযুক্তির কারণে অনেক আধুনিক ও বুদ্ধিমান।

একজন তরুণ টকশোতে সাবেক সচিব আবু আলম শহীদকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, ‘আপনারা তো একটা মোবাইল চালাতে জানেন না।’ অর্থাৎ, যারা গতানুগতিক রাজনীতি করেন, নির্বাচন, ব্যালট এসব নিয়ে ভাবেন—তারা এখনো ধরে নিচ্ছেন যে তারা ৯৫% ভোটে জিতে যাবেন, বাকি ৫% জামায়াত পাবে। কিন্তু যারা এনসিপি চালাচ্ছেন, তারা মনে করেন—রাজনীতিতে অনেক খেলা বাকি।

এনসিপির মূল নেতা ড. মোহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়। তাঁর মাথায় এত বুদ্ধি যে তিনি এমন এক চাল দিতে পারেন যাতে বিএনপি শুধু ধোঁয়া আর কুয়াশাই দেখতে পাবে। এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হবে যে বিএনপি বুঝতেই পারবে না তারা কীভাবে পিছিয়ে পড়ল। তারা দেখবে গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি নিয়ে নেওয়া হয়েছে, অথচ তারা কিছুই করতে পারেনি। 

বিএনপি আজ পর্যন্ত একটা ইউনিভার্সিটি নিতে পারেনি। তারা একটা লোনের রিশিডিউল পর্যন্ত করতে পারেনি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে টেম্পো স্ট্যান্ড ও ময়লার ভাগাড়ের চাঁদাবাজি। অন্যদিকে এনসিপি সাবমেরিন কেবল, স্টারলিংক, জো বাইডেন, বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের নিয়ে কাজ করছে।

তাদের নেতা বিশ্বমানের চ্যাম্পিয়ন। তাই তারা গতানুগতিক রাজনীতিকে আর প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছে না। এখন রাজনীতিতে দুইটি মেরু—একপাশে একদল, আরেকপাশে আরেকদল। দুই পক্ষই বলছে, “আয়, দেখি কে কত শক্তিশালী।” কিন্তু তাদের মাঝে রয়েছে বিশাল এক পদ্মা নদীর স্রোত। এই স্রোত পার হয়ে একত্রে মাকামে পৌঁছাতে হলে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে না।

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/cbBil7ISgLk?si=PpIkJSRTQi7jJ_fx

মারিয়া

আরো পড়ুন  

×