
.
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথ। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এই নৌপথ। যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে নৌপথ। কিন্তু অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অযত্ন, অবহেলা ও নিয়মিত নদী খনন না করার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এই নৌপথ। আগে প্রতিদিন ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের দেড় শতাধিক রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করত। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে যাত্রী সংকট ও বিভিন্ন রুটের নাব্য সংকটের কারণে তা অনেকটা কমে গেছে। কিন্তু দুর্গম চরাঞ্চলের এখনো যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই নৌপথ।
তবে নৌপথে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কারণে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা-চাঁদপুর-নন্দীবাজার-বরিশাল (লোকাল) এই রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। এই নৌপথের বিভিন্ন স্থানে নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারণে লঞ্চ চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে শৌলার মুখ ও আবুপুরে ডুবোচরে আটকে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ। এছাড়া এই রুটের নেই পর্যাপ্ত বয়া, বাতি ও মার্কা। তাই রাতে এই রুট দিয়ে চলাচল করতে অনেক সমস্যা হয় বলে জানান যাত্রীবাহী লঞ্চের চালকরা। এছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ এই রুটের বিভিন্ন স্থানে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য ব্যবহৃত পণ্টুনগুলো ভেঙে ও নদীতে অর্ধডুবন্ত অবস্থা পড়ে রয়েছে। যাত্রীদের সুবিধাজনক স্থানে পণ্টুন না দিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর তদারকি না থাকার কারণে এই নৌপথে করুণ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
তবে স্থায়ী যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে এই নৌপথকে বাঁচিয়ে রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, সারাদেশে সড়ক, রেল, নৌপথের সমন্বয়ে ভারসাম্যমূলক একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। একটি মাধ্যমকে গুরুত্ব দিলে অন্য মাধ্যম যেন গুরুত্বহীন হয়ে না পড়ে।
এ বিষয়ে গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘পরিবহন ব্যবস্থায় দিন দিন সড়কের ওপর চাপ বাড়ছে। অথচ সড়কপথ তার সক্ষমতা হারাচ্ছে। ধারণ ক্ষমতার বেশি লোড পরিবহন করলে যত আধুনিক সড়ক করা হোক না কেন তার সক্ষমতা থাকবে না। আমাদের এখানে তাই হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সব মানুষ এখন সড়কপথে যাতায়াত করছে। অথচ আগে নৌপথে বিপুলসংখ্যক মানুষ যাতায়াত করত। এটা এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। ঈদের সময় মানুষ দ্রুত যাওয়ার জন্য সব সড়ক ও রেলপথের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু সড়ক ও রেলপথের পরিবহনে সেই তুলানায় যাত্রী ধারণ করার সক্ষমতা নেই। তাই সড়ক ও রেলপথের টিকিট ক্রয়ে যাত্রীদের মধ্যে চলে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এটা কোনো বিজ্ঞানের মধ্যে পড়ে না। বিজ্ঞান বলে সড়ক, রেল, নৌপথের সমন্বয়ে ভারসাম্যমূলক যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমাদের এখানে একটি মাধ্যমকে গুরুত্ব দিলে অন্য মাধ্যম গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। এটা ঠিক না। সারাবিশে^ রেল ও নৌপথ একটি স্থায়ী যোগাযোগ মাধ্যম। এটা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে আধুনিক ও দ্রুত গতির নৌযান তৈরির মাধ্যমে নৌপথকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। পাশাপাশি নৌপথ সচল রাখার জন্য নিয়মিত নদী খনন ও যাবতীয় কাজ করতে হবে। না হলে যে কোনো উৎসবে বিপুল যাত্রীর চাপ সড়ক ও রেলপথ সামাল দিতে পারবে না।’
নদীতে লঞ্চঘাটের অর্ধডুবন্ত পণ্টুন ॥ জানা গেছে, সারাদেশের অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় এলাকায় নিরাপদ নৌচলাচলের জন্য নৌপথে নাব্যতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নৌপথ সংরক্ষণ, নদী খনন কর্মসূচি প্রণয়ন, নৌপরিবহনের সুবিধার্থে নৌপথে বয়া বাতি, বিকন বাতি, লোহার মার্কা ও বাঁশের মার্কা ইত্যাদি সংগ্রহ, স্থাপন ও সংরক্ষণের দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএর নৌসংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের। এছাড়া নতুন নৌপথ খুঁজে বের করা ও জরিপ পরিচালনার সহায়তা করা এই বিভাগের কাজ। পাশাপাশি যাত্রী ও মালামাল নিরাপদে উঠানামার সুবিধার্থে বিভিন্ন ঘাটে পণ্টুন স্থাপন, প্রতিস্থাপন, পুনঃস্থাপন ও ঘাটে সমন্বয় করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পণ্টুন জরুরি মেরামতপূর্বক ঘাট সচল রাখার দায়িত্বও এই বিভাগের।
কিন্তু গত দেড় বছর যাবৎ ঢাকা-চাঁদপুর-নন্দীরবাজার-বরিশাল (লোকাল) রুটের রামারচরের ওপারের বোয়ালিয়া লঞ্চ ঘাটের পণ্টুনটি শুকনো মাটিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ডুবোচরের কারণে লঞ্চ ঘাটে ভিড়তে পারে না। যাত্রীরা ট্রলার (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) ও ছোট নৌকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠানামা করে। আরও খারাপ অবস্থা ঢালীবাড়ি লঞ্চঘাটের পন্টুনটি। প্রায় ছয় মাস যাবৎ নদীতে অর্ধডুবন্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এছাড়া সেলিমপুর, ভুঁইয়াবাড়ি ও বালিমদনসহ একাধিক লঞ্চঘাটের পণ্টুন দীর্ঘদিন যাবৎ ভেঙে পড়ে রয়েছে। ভাঙা এসব পণ্টুনে লঞ্চ নোঙর করতে অনেক সমস্যা হয় বলে লঞ্চের চালকরা জানান।
এ বিষয়ে ওই রুটের চলাচল করা মর্নিংসান-৫ লঞ্চের মাস্টার মো. সাইদুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবৎ এই রুটের অবস্থা খুবই খারাপ। ঢালীবাড়ির পণ্টুন ডুবে গেছে। বোয়ালিয়ার পণ্টুন শুকনো মাটিতে পড়ে রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ঘাটের পণ্টুনগুলো ভেঙে গেছে। এতে ঘাটে লঞ্চ নোঙর করতে সমস্যা হয়। যেখানে পণ্টুন দরকার, সেখানে না দিয়ে অন্য স্থানে দেওয়ায় যাত্রীরা পণ্টুন ব্যবহার করতে পারে না। এই বিষয়গুলো মালিকদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অথচ এই রুটে সব সময় যাত্রী থাকে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকার কারণে সচল রুটটি দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।’
নৌপথে নেই বয়া বাতি ও মার্কা ॥ সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বরিশাল আসা-যাওয়ার পথে এই রুটে প্রায় ২২ টি ঘাট থেকে যাত্রী উঠা ও নামানো হয়। ঢাকা থেকে বরিশাল পর্যন্ত এই রুটের দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। কিন্তু রুটের নাব্য সংকট ও বিভিন্ন স্থানে ডুবোচরের কারণে যাত্রাবাহী লঞ্চগুলো বরিশাল পর্যন্ত যায় না। বরিশালের আগেই মীরগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটের পণ্যবাহী জাহাজ, যাত্রীবাহী ছোট লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করে। আগে এই নৌপথটি ব্যবহার করে ঢাকা থেকে বরিশাল, পয়সারহাট ও হুলারহাটসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করত। নাব্য সংকটের কারণে এসব লঞ্চ এখন অন্য রুটে চলাচল করে। বর্তমানে মর্নিংসান-৫ ও জলতরঙ্গ-২ নামের দুটি যাত্রাবাহী বড় লঞ্চ চলাচল করে। ঈদের সময় যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধি পেলে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হয়। তখন প্রতিদিন দুটি করে চারটি লঞ্চ চলাচল করে। তবে এই রুটের বিভিন্ন স্থানে বয়া বাতি, বিকন বাতি লোহার মার্কা না থাকার কারণে রাতে লঞ্চ চলাচলে অনেক সমস্যা হয় বলে চালকরা জানান।
এ বিষয়ে মর্নিংসান-৫ লঞ্চের মাস্টার মো. সাইদুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘এই নৌপথটি একটি অবহেলিত নৌরুট। দীর্ঘদিন যাবৎ এই নৌপথে বয়া, বাতি ও মার্কা না থাকার কারণে রাতে অনেক ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ চালাতে হয়। মার্কা ও বাতি না থাকার কারণে রাতের অন্ধকারে দুর্গম এই নৌপথে অনেকটা অন্ধের মতো চলাচল করতে হয়। আমরা যেহেতু দীর্ঘদিন এ পথে চলাচল করি। তাই এই রুটটি আমাদের অনেকটা পরিচিত। তবুও ঝুঁকি নিয়ে জাহাজ চলাচল করতে হচ্ছে।’
ডুবোচরে আটকে যায় লঞ্চ ॥ ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌপথে ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কারণে নৌযান চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে শৌলার মুখ নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের সময় মধ্যরাতে বাঁশের লগি ফেলে পানি মেপে চলাচল করতে হয়। ঢাকা-বরিশাল রুটের প্রতিটি লঞ্চ এই স্থানে ডুবোচরে আটকে যায়। এখানে একবার আটকা পড়লে দুই-চার ঘণ্টা জোয়ারের জন্য অপেক্ষা থাকতে হয় বলে লঞ্চের মাস্টাররা জানান। একই অবস্থা ঢাকা-মুলাদী, ঢাকা-চাঁদপুর-ঈদগাঁ ফেরিঘাট, ঢাকা-বরিশাল ভায়া নন্দিরবাজার, ডামুড্যা, ভাষানচর, সূর্য্যমনি ও হুলারহাট ভা-ারিয়া নৌপথেরও। ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কারণে এসব রুটে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান লঞ্চের মাস্টাররা।
বিআইডব্লিউটিএর তথ্যমতে, লঞ্চ আর পণ্যবাহী নৌযান যাতায়াতে কমপক্ষে ১২ মিটার গভীরতা দরকার। যদিও বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চগুলো ৮ মিটার গভীরতায় চলাচল করতে পারে। এমন কিছু নদীপথ রয়েছে যেখানে ভাটায় দুই মিটার গভীরতা বিরাজ করে। জোয়ারে পানি বাড়লেও তা ৪ বা ৫ মিটারের বেশি নয়। তাই নদীতে সাধারণ লঞ্চ চলাচল করতে কমপক্ষে ৫ ফুট আর যাত্রীবাহী নৌযানের ক্ষেত্রে ৭ ফুট গভীরতা প্রয়োজন। কিন্তু বরিশাল-ঢাকা এবং বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটের অনেক স্থানে ভাটায় পানির গভীরতা ৩ বা ৪ ফুটে নেমে আসে। ফলে, এ সমস্ত এলাকা পার হতে নৌযান চালকদের জোয়ারের অপেক্ষায় থাকতে হয় বলে জানান লঞ্চ চালকরা।
যাত্রী ও নাব্য সংকটে বন্ধ একাধিক নৌপথ ॥ পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে যাত্রী সংকট ও বিভিন্ন রুটের নাব্য সংকটের কারণে একাধিক নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে প্রায় ৯ টি নৌপথ বর্তমানে যাত্রাবাহী লঞ্চ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এগুলো হলো, ঢাকা-আমতলী, ঢাকা-পয়সারহাট, ঢাকা-টরকী, ঢাকা-তুষখালী, ঢাকা-গোমা, ঢাকা-রামচন্দ্র, ঢাকা-ইচলি, ঢাকা-তালতলা ও ঢাকা-সূর্য্যমনি নৌপথে বর্তমানে যাত্রীবাহী কোনো লঞ্চ চলাচল করে না। এর মধ্যে বেশির ভাগ নৌপথ নাব্য সংকটের কারণে বন্ধ রয়েছে বলে জানায় লঞ্চ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জনকণ্ঠকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের একাধিক নৌরুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো নৌপথে নাব্য সংকট। দীর্ঘদিন যাবৎ খনন না করার কারণে নৌপথ ভরাট হয়ে গেছে। নৌপথগুলো সচল করার জন্য একাধিক বার আমাদের সংগঠনের পক্ষে বিআইডব্লিউটিএর কাছে চিঠি দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
নৌপথ খননের দাবি লঞ্চ মালিকদের ॥ ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌপথ খনন ও নিয়মিত ড্রেজিং করার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কাছে একাধিক আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান লঞ্চ মালিকরা।
এ বিষয়ে মর্নিংসান-৫ লঞ্চের মালিক আব্দুস সালাম খান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকা-চাঁদপুর-নন্দীরবাজার-বরিশাল (লোকাল) রুটে লঞ্চ চলাচল দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। কারণ, এই নৌপথে বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কারণে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে অনেক সমস্যা হয়। এই নৌপথের নাব্য সংকট ও ডুবোচর দূর করতে হলে নিয়মিত নদী খনন এবং স্থায়ী ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন। এছাড়া এই রুটের বিভিন্ন লঞ্চঘাটের টার্মিনাল বা পন্টুনগুলো ভেঙে গেছে। এক ঘাটের পণ্টুন ডুবে গেছে প্রায় ছয় মাস যাবৎ। এই বিষয়গুলো উল্লেখ করে বিআইডব্লিউটিএর কাছে আবেদন করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এক্ষেত্রে বিআইডব্লিউটিএর চরম গাফিলতি রয়েছে। নদী খননের জন্য ড্রেজার পাঠানো হলেও কাজ না করে বসিয়ে রাখা হয়। পরে বর্ষা চলে আসলে খনন না করেই বিল করে টাকা নিয়ে নেয়। কিন্তু ডুবোচরগুলো থেকে যায়। শুস্ক মৌসুমে এটা আরও বড় আকার ধারণ করে। এভাবে বরিশালের নৌপথগুলো দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।’ তাই নৌপথ রক্ষায় পরিকল্পিত ড্রেজিং করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা জনকণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল নৌপথের বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর ও নাব্য সংকটের কথা মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। পরে তা সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়া লঞ্চ মালিকদের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আবেদন করা হলেও তা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে কোন্ রুটে কোথায় ডুবোচর ও নাব্য সংকট আছে তা উল্লেখ করা হয়নি। তাই ডুবোচর খুঁজে বের করতে কিছুদিন সময় লাগে।’ এছাড়া ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌপথের কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হয় বলে জানান তিনি।
প্যানেল