ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

১১৬ অনুচ্ছেদের বলে যাকে যেখানে খুশি বদলি করতে পারে আইন মন্ত্রণালয়,বলছেন আইনজীবীরা

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ২৭ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৯:৫৩, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

১১৬ অনুচ্ছেদের বলে যাকে যেখানে খুশি বদলি করতে পারে আইন মন্ত্রণালয়,বলছেন আইনজীবীরা

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ। এই অনুচ্ছেদের বলে যাকে যেখানে খুশি বদলি করতে পারে আইন মন্ত্রণালয়।এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছেন আইনজীবীরা।

চাইলেই সুন্দরবন কিংবা বান্দরবান, যাকে যখন খুশি, সেখানেই বদলি করতে পারে আইন মন্ত্রণালয়। আর মন্ত্রণালয়ের এই সীমাহীন ক্ষমতার নেপথ্যে রয়েছে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ। এমন মত দিয়ে আইনজীবীরা বলছেন, বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠার আগে রাষ্ট্রপতিকে দেয়া অবারিত ক্ষমতার সংশোধন প্রয়োজন।

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটদের কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরের ক্ষমতাসহ শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং তিনি সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে তা সম্পাদন করিবেন। আইনজীবীদের মতে, স্বাধীনতার পর পাঁচ দশক ধরে রাষ্ট্রপতিকে দেয়া ১১৬ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে অধস্তন আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করেছে প্রতিটি সরকার।

সিনিয়র আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “যখন যে সরকার থাকে, তারা নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার উপর আস্থা রাখতে পারেন না। আমরা এরকমও দেখেছি গভীর রাতে আদালত বসিয়ে সাজা দেয়া, একটি মামলার উপর দিক থেকে ওহী নাযিল হওয়া এবং বদলির ক্ষেত্রে সুন্দরবনে বান্দরবানে পাঠিয়ে দেয়া। ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার করা। এই যে খরগহস্ত, এই খরগহস্ত আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়ে গেছে।”

সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “এমনও আমরা দেখেছি যে সুপ্রিম কোর্টের জি.এ. কমিটির মাধ্যমে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে যে এই ১০ জন জজকে অমুক জায়গায় ট্রান্সফার করো। আর এই ১০ জনকে অমুক জায়গায় করো। তখন মন্ত্রণালয় যাদেরকে পছন্দ হয়েছে, ওনাদের ফাইলটা প্রসিড করেছে ২৪ ঘণ্টা, ৪৮ ঘণ্টা পরেই। আর যাদেরটা পছন্দ হয় নাই, তাদের ফাইল ছয় মাসেও প্রসিড করে নাই।”

এদিকে দ্রুত আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তবে ১১৬ অনুচ্ছেদ বহাল রেখে পৃথক সচিবালয় বিচারপ্রার্থীদের কতটা সুফল দেবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন আইনজীবীরা।

সিনিয়র আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “১১৬ অনুচ্ছেদই মূল বাধা। কারণ ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে সকল দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকবে। রাষ্ট্রপতি এটা রুলস অব বিজনেসের আওতাধীন করে আইন মন্ত্রণালয়কে এই ক্ষমতা দিয়েছেন। ১১৬ দূর হয়ে গেলে ইমিডিয়েটলি সুপ্রিম কোর্টের ভিন্ন বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা দরকার এবং হবে বলে আমি মনে করি।”

এমন বাস্তবতায় ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে রিট করেন ১০ আইনজীবী। শুনানি নিয়ে রুল জারির পর পরিবর্তন হয় আদালত। বর্তমানে একটি দ্বৈত বেঞ্চে চলমান রয়েছে সেই রুলের শুনানি।

সূত্র:https://tinyurl.com/3ms536ye

আফরোজা

×