
ছবি: প্রতীকী
রাজধানীর শেখেরটেক এলাকায় নিজেদের ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেছেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া (১৭)। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টায় শেখেরটেকের ৬ নম্বর রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ জসিম উদ্দিনের চাচাতো ভাই মোঃ কালাম হাওলাদার।
প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রাত ৮টায় নিহতের মা রুমা বেগম ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদ্রাসায় দিয়ে আসতে যান। সেই সুযোগে রাত ৯টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।
এ বিষয়ে আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাকারিয়া জানান, এ ঘটনায় আমরা হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
লামিয়ার মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। আমার ভাগনির ধর্ষকরা জামিন পেয়ে গেছে। এখন আমার ভাগনি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইব? কে বিচার করবে আমাদের?’
পারিবারিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন লামিয়া। সামাজিক লজ্জা, চাপ এবং অভিযুক্ত ধর্ষকদের জামিন পাওয়া এবং বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় তিনি চরম হতাশায় ভুগছিলেন, যা তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয় বলে মনে করছে পরিবার।
তবে পটুয়াখালীর দুমকি থানার ওসি মোঃ জাকির হোসেন জানিয়েছেন, লামিয়াকে ধর্ষণের ঘটনায় এজাহারনামীয় দুই আসামি জামিন পাননি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে বাবার (শহীদ জসীম উদ্দিন) কবর জিয়ারত শেষে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি থানায় গিয়ে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন।
রাকিব