ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

অস্বস্তিতে ক্রেতা

বাজারে সবজি মাছ চড়া কমছে না চালের দাম

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১৮, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

বাজারে সবজি মাছ চড়া কমছে না চালের দাম

বাজারে সবজি মাছ চড়া কমছে না চালের দাম

বাজারে সবজির দাম চড়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে মাছের দামও। কমছে না চালের দামও। এ পরিস্থিতিতে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য না থাকায় ত্রেতারা রয়েছেন অস্বস্তিতে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি থাকায় খুচরা মূল্য বেড়ে গেছে। 
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমে আসায় ২ মাস আগেও ত্রেতাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছিল। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে। তাই ক্রেতাদের মধ্যে যে স্বস্তি বিরাজ করছিল, তা এখন উল্টো দিকে মোড় নিয়েছে। 
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দাম একশত বা তার কাছাকাছি। কোনো কোনো সবজির দাম আরও বেশি। তাই প্রতিদিন নিজের সাধ্যের মধ্যে বাজার করতে গিয়ে মূল্যবৃদ্ধির কারণে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের বিভিন্ন উইং থাকলেও তারা যেন নির্বিকার। 
এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা জানান, বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম, যে কারণে বাড়ছে দাম। মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। ইলিশ ধরা বন্ধসহ বিভিন্ন কারণে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় দামও কিছুটা বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তবে বাজারে সব ধরনের মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আর পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫-১০ টাকা কমলেও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু।
বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, পটল ১০০ টাকা, বরবটি আঁটি ১০০ টাকা, কচুর লতি আঁটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, সজনে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ১০০ থেকে ১১০ টাকা, কাঁকরোল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, বেগুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা, শালগম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কুমড়া, পেঁপে, লাউ, গাজর, ঢেঁড়সসহ কিছু সবজির দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি কম দামের মধ্যে রয়েছে আলু ও টমেটো। আলুর কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা, শিম ৭০ থেকে ৯০ টাকা, টমেটো ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, দেশী শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা আম ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ফুলকপি ৩০ থেকে ৬০ টাকা পিস, লাউ ৬০ থেকে ১০০ টাকা পিস ও লেবুর হালি আকার ভেদে ১০ থেকে ৫০ টাকায় ও কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ধনে পাতা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, ক্যাপসিকাম ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শাকের দামও কিছুটা বেড়েছে। পুঁই শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা আঁটি, লাল শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে। 
জানতে চাইলে এক খুচরা সবজি বিক্রেতা বলেন, এ বছর রমজান মাস পর্যন্ত শীতের সবজির ভালো সরবরাহ ছিল। ক্রেতারাও কম দামে কিনতে পেরে স্বস্তি পেয়েছেন। এখন অফ সিজন গ্রীষ্মে সবজি উৎপাদন কম এবং চাষে অতিরিক্ত খরচ হয়। তাই কিছুটা দাম বেড়েছে। সেখান থেকে কয়েক হাত ঘুরে রাজধানীতে এসে দাম আরও বেড়ে যায়। প্রতিবছরই এ সময়ে দাম বেড়ে থাকে।  
সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজারে এখন প্রতিকেজি শিং মাছ (চাষের) আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতিকেজি রুই মাছের দাম (আকার ভেদে) ৩২০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশী মাগুর মাছ ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, চিংড়ি প্রতিকেজি ৭৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
ঈদের পর থেকেই বাজারে চালের দাম বাড়তে থাকে। তবে একসপ্তাহ আগের তুলনায় এখন চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এখন বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা, নাজিরশাইল ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা ৫৫ টাকা এবং আটাশ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে।

আরো পড়ুন  

×