ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

মহাসড়কে ডাকাতি রোধে ১৪২৭ সিসি ক্যামেরা

ফজলুর রহমান

প্রকাশিত: ২৩:০৪, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

মহাসড়কে ডাকাতি রোধে ১৪২৭ সিসি ক্যামেরা

জামিনে বের হওয়া ডাকাতদের তৎপরতা বেড়ে গেছে ॥ হাইওয়ে পুলিশ প্রধান

দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে। অহরহ ডাকাতির ঘটনায় যাত্রী ও চালকরা উদ্বিগ্ন। এদিকে ডাকাতি রোধে মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে হাইওয়ে পুলিশে জনবল কম থাকায় বেগ পেতে হচ্ছে। এজন্য একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন তারা। মাইকিং, পোস্টারিং করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। গভীর রাতে চলে টহল।

দেশের ৮টি মহাসড়কের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২৫০ কিলোমিটারজুড়ে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, টহল আর তদারকির মধ্যেও মহাসড়কে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে। 
চলন্ত বাসে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো যেন এখন ভাগ্যের ব্যাপার। এজন্য রাতে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসে যাত্রী কমছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত হওয়া ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় বাসচালক ও হেলপার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। তারা বলছে, ৫ আগস্টের পর অনেক মামলার আসামি জামিনে বেরিয়ে গেছে। জামিনে বের হওয়া ডাকাতদের তৎপরতা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে চরম আতঙ্কিত চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা। এজন্য তারা নিরাপত্তা চান।  
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত খবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দেশের এমন কোনো মহাসড়ক বাদ নেই, যেখানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। সকল মহাসড়কে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ডাকাত দলের হানায় আহত হওয়ার সংখ্যাও কম নয়। তবে ডাকাতির ঘটনা অনেক হলেও মামলা এবং গ্রেপ্তারের সংখ্যা খুবই নগণ্য। বলা চলে, মহাসড়কগুলোতে এখন দিনে-রাতে ডাকাতির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। 
হাইওয়ে পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ তিন মাসে দেশের ৮টি মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় ১৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪১ জনকে। তথ্যমতে, দেশের ৮টি হাইওয়ের মধ্যে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২৫০ কিলোমিটার এলাকায় ১৪২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হাইওয়েও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। 
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একের পর এক ডাকাতি॥ সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। এসব ঘটনা যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের ডাকাতির হটস্পট খ্যাত কাঁচপুর থেকে মেঘনা টোলপ্লাজা পর্যন্ত প্রায়ই ঘটছে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা। আগস্ট পরবর্তী সময়ে রাত হলেই এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকদের প্রায়ই পড়তে হচ্ছে ডাকাত ও ছিনতাইকারীর কবলে। 
গত ১৪ জানুয়ারি আবু হানিফ ও রাজিব ভূঁইয়া নামের দুই প্রবাসী ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে মহাসড়কের বন্দর এলাকার কেওঢালা এলাকায় ডাকাতদের কবলে পড়েন। র‌্যাব পরিচয়ে বাস থেকে তাদের নামিয়ে নিয়ে  সব কিছু নিয়ে যাওয়া হয়। 
ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি রাত তিনটার দিকে ডেমরা হয়ে কাঁচপুরের দিকে ঢুকতেই ডাকাতের কবলে পড়েছিলেন কুমিল্লার বুড়িচংয়ের কংসনগর এলাকার প্রাইভেট কারের চালক মো. হাসান। তিনি বলেন, আমি ডাকাতদের অনুরোধ করি গাড়ি না ভাঙার জন্য, পরে আমার সঙ্গে থাকা ছয় হাজার টাকা তাদের দিয়েছি। আমার পেছনে থাকা একটি মাইক্রোবাসে ছিলেন দুই প্রবাসী। তারা মালামাল দিতে দেরি করায় রামদা দিয়ে কুপিয়ে পুরো গাড়ি ভেঙে দেয় এবং প্রবাসীদের সব লুট করে নিয়ে নেয়। ডাকাতরা মহাসড়কে পিকআপ রেখে ডাকাতি করছিল। 
২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে মহাসড়কের সোনারগাঁ পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাড়িয়ারচর এলাকার সাধু পেপার মিলের সামনে সিরাজুল ইসলাম নামের এক কুয়েত প্রবাসী ডাকাতির শিকার হন। সেই রাতে ভুক্তভোগীকে বহনকারী গাড়িতে হামলা চালিয়ে পাসপোর্টসহ প্রায় পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই রাতেই অসুস্থ বোনকে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে আসা এক নারী ও তার দেবর ছিনতাইয়ের শিকার হন। সেই রাতে হাসপাতালের কাজ শেষে নিজের খালাত ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার পথে সোনারগাঁয়ের পৌর এলাকার দৈলেরবাগে একদল ছিনতাইকারী ওই নারী ও তার দেবরকে আটকে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়।
সর্বশেষ ১৫ মার্চ দুপুরে মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দিনদুপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের মাইক্রোবাস থামিয়ে ফিল্মি স্টাইলে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ডাকাতি করা হয়। প্রতিনিয়ত ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় অতিষ্ঠ এই মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। অথচ একমাত্র এই মহাসড়কে ১৪২৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। 
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক॥ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার অংশ, বিশেষ করে ব্যাংক টাউন ও পুলিশ টাউন এলাকাটি বর্তমানে যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের  আরেক নাম হয়ে উঠেছে। একের পর এক বাসে ডাকাতির ঘটনায় নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো যেন এখন দুঃস্বপ্ন। শুধু এই রুটেই গত দুই মাসে ৫টি ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে দিনেদুপুরে ডাকাতির ঘটনাও। অথচ এই মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মধ্যেও ঘটেছে ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা। 
১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পুলিশ টাউন এলাকায় মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকার গাবতলীগামী ‘শুভযাত্রা’ পরিবহনের একটি বাসে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে বাসের হেলপারসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। 
মার্চ মাসেই ঘটেছে তিনটি ডাকাতির ঘটনা। ২ মার্চ এই মহাসড়কের ব্যাংক টাউন এলাকায় রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০ থেকে ২৫ যাত্রীর মুঠোফোন, মানিব্যাগসহ মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেন ডাকাতরা। এর ঠিক দুই দিনের মাথায় কর্ণপাড়া ব্রিজ এলাকায় ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ২৫ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগরগামী লেনে শুভযাত্রা পরিবহনে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে প্রায় ২০টি মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা।

মোবাইল ফোন দিতে না চাওয়ায় এক যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করে ডাকাতদলের সদস্যরা।  চলতি এপ্রিল মাসের ১১ দিনের মাথায় দুটি ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ৫ এপ্রিল সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইতিহাস পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি করে টাকা, সোনার চেইন, কানের দুল, মুঠোফোন কেড়ে নেন। সর্বশেষ ১১ এপ্রিল সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যাংক টাউন ব্রিজ এলাকায় দিনেদুপুরে চলতি বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চালক ও হেলপার জড়িত বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। 
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একের পর এক বাস ডাকাতি সংঘটিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ঘটনারই কার্যকর সমাধান হয়নি। যদিও হাইওয়ে পুলিশ বলছে, এই এলাকায় দিনরাত তাদের একটি টিম টহল দিচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যাংক টাউন এলাকা এখন কার্যত ডাকাতদের নিরাপদ ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। দিনের পর দিন বাসে ওঠা যাত্রীদের মুখে আতঙ্ক। এই এলাকায় বাস গেলেই কিছু একটা হবে। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ঢাকা-রাজশাহী-টাঙ্গাইল রুটে ডাকাতি॥ ঢাকা-রাজশাহী, রাজশাহী-নওগাঁ ও রাজশাহী-বগুড়া মহাসড়কে নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগে রয়েছেন যাত্রী, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। গত তিন মাসে এসব রুটে রাতেরবেলায় চলাচলকারী যানবাহনে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যানজটে আটকা পড়া বাসে ডাকাতি হয়ে থাকে। এমনকি নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটে। 
গত ৯ মার্চ রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহী ফেরার পথে রাজশাহী জেলা জামায়াতে ইসলামীর ৭ জন নেতা ডাকাতির শিকার হন। তারা পেশায় শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটে সিরাজগঞ্জের কোনাবাড়ী ধান গবেষণা কেন্দ্র-সংলগ্ন সড়কে। ডাকাতদল তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৮১ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে তারা মামলা করেন। 
গত ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহী-নওগাঁ ও ঢাকা-রাজশাহী রুটে অন্তত ৭টি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বিআরটিসি বাস ডিপো-সংশ্লিষ্টরা জানান, পাবনা থেকে নওগাঁর সাপাহার রুটে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে একটি বিআরটিসি বাস ডাকাতের কবলে পড়ে। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে রাজশাহী-নওগাঁ রুটের আরেকটি বিআরটিসি বাস কলমিডাঙ্গা এলাকায় ডাকাতির শিকার হয়। তিন দিন পর রাজশাহী থেকে নাটোর যাওয়ার পথে মদমইল এলাকায় আরেকটি বিআরটিসি বাস ডাকাতের কবলে পড়ে।

এমনকি গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-রাজশাহী রুটের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনায় দুই নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  ওই দিন রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে ইউনিক রোড রয়েলসের বাসে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা চলন্ত বাসে ডাকাতি করা হয়। একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছে, তাদের সম্পদ লুটের পাশাপাশি নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এমনকি চার যাত্রীকে ছুরিকাঘাতও করা হয়। তবে ডাকাতির ঘটনার তিন দিন পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় মামলা করা হয়। এদিকে এই ঘটনায় নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। 
বিআরটিসি বাসের চালক সোহেল রানা গত ১৯ ফেব্রুয়ারির একটি ঘটনায় পোরশা থানায় অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এখন এই রুটে চালকরা বাস চালাতে ভয় পাচ্ছে। যাত্রীরা চালকদের সন্দেহ করে। কিন্তু সমস্যা হলো, রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ নেই। নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।
রাজশাহী পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রফিক আলী পাখি বলেন, সড়কে হঠাৎই ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। যাত্রী ও শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হাইওয়ে পুলিশের প্যাট্রোলিং বাড়ানো উচিত। 
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ডাকাতি॥ গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরার মাহমুদাবাদ সেতুসংলগ্ন নামাপাড়া এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদল একটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে। এ সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ ৯৫ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যায়। 
সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল  রাত ৩টার দিকে  যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের কোনাবাড়ী এলাকায় নাবিল পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। 
জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা জনকণ্ঠকে বলেন, ৬ এপ্রিলের পর থেকে ডাকাতির ঘটনা নেই। এর আগে কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি সাভার ব্যাংক টাউন ব্রিজ এলাকার ঘটনাটি ছিনতাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওখানে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।

দুটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। ব্রিজ এলাকার ঘটনায় বাসের চালক-হেলপার জড়িত। তারা জড়িত না থাকলে কেন বাস রেখে পালিয়ে গেলো। যেখান থেকে ছিনতাইকারীরা বাসে উঠে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ছিনতাই করেছে, সেখানে বাস থামানোর কথা না। আবার ব্রিজ পার হওয়ার পর চালক বাসের গতি কমায় এবং ছিনতাইকারীরা নেমে যায়। কয়েকটি ঘটনার পর ওখানে টিম দেওয়া হয়েছে। তারা দিনরাত কাজ করছে। 
ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেক মামলার আসামি জামিন পেয়েছে। এসকল অপরাধী/ডাকাতদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২০ বছরে মহাসড়কে ডাকাতির বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত ১ হাজার ৪০০ জনের একটি তালিকা করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে জেলা পুলিশকেও অবহিত করা হয়েছে। জেলা পুলিশ ও আমরা ডাকাতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ডাকাতির ঘটনা নজরে আসছে। জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের আগে আমরা ১ হাজার জনবল চেয়েছি। আমাদের ৭০০ জন দেওয়া হয়েছে।

ঈদের পর  তারা ফেরত গেছেন। আসন্ন ঈদ ঘিরে আবারও জনবল বৃদ্ধি করা হবে। এ নিয়ে পরিবহন, ট্রাক মালিক-সমিতির সঙ্গে আমরা বসব। গত বুধবারও একটি প্রস্তুতিমূলক মিটিং হয়েছে। আমাদের নতুন পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি, গত ঈদের মতো আগামি ঈদও অপরাধমুক্ত ও স্বস্তির সঙ্গে যাত্রা করতে পারবে সাধারণ যাত্রীরা।

আরো পড়ুন  

×