ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

মাদকের সিন্ডিকেটের কাছে হেরে গেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১৮, ২৫ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২২:২০, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

মাদকের সিন্ডিকেটের কাছে হেরে গেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলী

গেল ক’দিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে।

যেখানে বলা হয়,  সাধারণ মামলা দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে টাকা আদায়, সংঘর্ষে আহতদের মামলা না নেয়া, এবং ফসলি জমি কাটায় জব্দকৃত ট্রাক্টর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ওসি রওশন আলীর বিরুদ্ধে।

কিন্তু বিভিন্ন তথ্যসূত্র বলছে, নভেম্বর ২০২৪ হইতে এপ্রিল ২০২৫ইং পর্যন্ত ৭১টি নিয়মিত মাদক দ্রব্য মামলা রেকর্ড সহ গ্রেপ্তার হয়েছে ৮৫ জন আসামি।

গাঁজা উদ্ধার ৪৫০ কেজির উপরে। একই গ্রাফিক্সের ১৩৩১ বোতল স্কোপ সিরাপ ও ৫৫৬ বোতল ফেনসিডিল সহ ৭৯২০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। 

৫ই আগস্টের সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডেভিল হান্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৫ জন, যার সবই ওসি রওশন আলীর নেতৃত্বে হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রওশন আলী নির্দেশে মাদক বিরোধী অভিযান চলমান থাকায়, মাদক ব্যবসায়ীরা একটি কুচক্রী মহলের সাথে যোগসাজসে ওসি রওশন আলী নামে মিত্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচার ও বিজয়নগর থানা হতে বদলী করার গোপন মিশনে লিপ্ত রয়েছে।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রকোশলী জনাব আমিনুল ইসলাম জানান, ওসি সাহেব খুব ভালো মানুষ। ওনি বিজয়নগর থানার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এখানে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করে। এতে একটি কুচক্রী মহল অবৈধ মাদকের ব্যবসা করতে না পারায় ওসির বিরুদ্ধে নিজেদের কিছু লোক দিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

ওসি রওশন আলী সম্পর্কে ডেন্টিস্ট -মো:ফরহাদ মিয়া  বলেন, ৫ আগস্ট এর পর থেকে ওসি রওশন আলীর নেতৃত্বে মাদক কারবার পুরোপুরি জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসা হয়। বিগত দিন গুলোয় আমাদের এই বিজয় নগর সীমান্তে মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। পাশাপাশি গরু সিন্ডিকেট, চুরি, ডাকাতি, চোরা চালানের বিরুদ্ধে ওসি রওশন আলী একেবারে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করায় একটি মহল এটি মেনে নিতে পারে নি। আমি মনে করি ওনি মাদক সিন্ডিকেটের রোশানলসহ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমরা আমাদের ওসিকে খুব দ্রুত আবার আমাদের থানায় দেখতে চাই।

ওসি রওশন আলী সম্পর্কে বিজয়নগরের জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির সংগঠক খাইরুল ইসলাম বলেন, ওসি রওশন আলীর নেতৃত্বে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করায় মাদক কারবারি’রা এটা মেনে নিতে পারে নি। আমরা মনে করছি অনেক প্রভাবশালী মহল এই মাদক কারবারির সাথে জড়িত থাকে। আমরা এটাকে ওসি রওশন আলীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখছি।

এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাণ্য ব্যাক্তি, গণমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ অধিকাংশরই বক্তব্য, ওসি রওশন আলী মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করায়, ওসির বিরুদ্ধে মাদক কারবারিরা ষড়যন্ত্র করে ওসি রওশন আলীকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে। অবিলম্বে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ওসি’কে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ জনাব মো: রওশন আলী গণমাধ্যমকে জানান, বিগত যে কোনো সময়ের থেকে বিজয়নগর থানায় মাদক উদ্ধারে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছি। মাদকের সাথে কোন কম্প্রোমাইজ নেই। মাদক একটা জাতিকে ধ্বংস করে, তাই আমার পক্ষ থেকে মাদক ব্যবসা মাদক সেবী ও মাদকের আশ্রয়দাতা কে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি আরো জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জীবন দিতে পারি, কিন্তু কর্তব্য থেকে কখনো পিছপা হয় নি আর  হবোও না।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের কেউ যদি কোনো অপরাধ বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ওসি রওশন আলী বর্তমানে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রয়েছেন।

ফুয়াদ

×