ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

ড. ইউনূসকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস কাতারের প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

ড. ইউনূসকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস কাতারের প্রধানমন্ত্রীর

ছবি : সংগৃহীত

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি বাংলাদেশের পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দোহায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন। একইসঙ্গে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থনও ব্যক্ত করেন তিনি।

 

 

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি এখন আবার ব্যবসার জন্য প্রস্তুত এবং এই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত।”  
বুধবার রাতে কাতার-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সম্ভাবনা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।  

কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি বাংলাদেশ-কাতার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তার একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে মনোনীত করবেন। তিনি বাংলাদেশের সংস্কার ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে বলেন, “আগামী বছরগুলোয় বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী হয়ে আত্মপ্রকাশ করবে।”

 

ড. ইউনূস বাংলাদেশে কূটনৈতিক, আর্থিক ও বিনিয়োগ খাতে কাতারের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, “আমাদের তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে কাতারের সহায়তা প্রয়োজন।”  

শেখ মোহাম্মদ এ উদ্দেশ্যে একটি কারিগরি দল পাঠানোর আহ্বান জানান, যাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সুযোগগুলো চিহ্নিত করা যায়।

 

 

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। ড. ইউনূস রোহিঙ্গাদের স্বদেশে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানান। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কাতারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।  

গাজা সংকট নিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিশ্বের অনেক অংশ এখনো গাজার দুর্দশার বিষয়ে নীরব।” এসময় কাতারের পক্ষ থেকে আলজাজিরার সাহসী সাংবাদিকতার প্রশংসাও করা হয়।

 

নারী ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ ও সুযোগ উন্নয়নে কাতারের সহায়তা কামনা করেন ড. ইউনূস। তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে শেখ মোহাম্মদ তা সানন্দে গ্রহণ করেন।

 

 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফোরাম, কাতারের সভাপতি আজাদ আশরাফ স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে উপস্থাপনা দেন। তিনি বলেন, “আপনি যদি কখনো বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করেন, তাহলে এখনই সবচেয়ে ভালো সময়।”

জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, বর্তমান সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ খাতে অনাদায়ী ঋণ ৩.২ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৬০০ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে কাতার এনার্জির ২৫৪ মিলিয়ন ডলার বকেয়া বুধবারের মধ্যে পরিশোধ হয়েছে।

 

 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কাতারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি সালেহ মাজেদ আল খালাফি, নেক্সট স্মার্ট সলিউশনসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলি বেন ফার্জ, এবং কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম।
 

আঁখি

×