
ছবি: সংগৃহীত
একজন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি হেসে হেসে উত্তর দেন। ঘটনাটি তখন বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সারাদেশে আলোচনায় এসেছিল। তবে শাহজাহান খানের হাসির রহস্যটা একটু অদ্ভুত কারণ গত কয়েক মাস জেলখানায় থেকেও তাকে সব সময় দেখা যাচ্ছে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায়। ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার সময় মাঝেমধ্যেই তার চেহারায় দেখা যায় উজ্জ্বল হাসি। যেকোনো পরিস্থিতিতে হাসতে থাকাকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না চিকিৎসাবিজ্ঞান।
যেকোনো পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিকভাবে বারবার হাসতে থাকাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় "প্যাথোলজিক্যাল লাফটার" (Pathological Laughter)। এটি কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাধীন আচরণ নয়, বরং স্নায়ুবিক বা নিউরোলজিক্যাল সমস্যার একটি লক্ষণ হতে পারে।
এটি এমন এক অবস্থা যেখানে ব্যক্তি অপ্রাসঙ্গিক বা অনুচিত পরিস্থিতিতে হঠাৎ হাসতে শুরু করে এবং সেটা আটকানো যায় না। অনেক সময় ব্যক্তি নিজেই জানেন না কেন তিনি হাসছেন। এটি সাধারণত মস্তিষ্কের কিছু নির্দিষ্ট অংশ, বিশেষ করে সেরিবেলাম, ব্রেইনস্টেম, বা ফ্রন্টাল লোব ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেখা দিতে পারে।
সম্ভাব্য কারণসমূহ: নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার, স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে আঘাত, মেন্টাল হেলথ ইস্যু, যেমন বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা স্কিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি।
এই ধরনের হাসি অনেক সময় ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয় — মানুষ ভাবতে পারে ব্যক্তি অবজ্ঞা করছে বা অনুভূতিহীন। অথচ এটি একটি চিকিৎসাযোগ্য নিউরোলজিক্যাল অবস্থা হতে পারে।
তবে, শাজাহান খানের ক্ষেত্রে যদি এটা নিছক ব্যক্তিত্বের প্রকাশ বা মিডিয়ার সঙ্গে 'স্ট্র্যাটেজিক রেসপন্স' হয়ে থাকে, তাহলে তা অন্য বিষয়। কিন্তু যদি এই হাসির আচরণটি সবসময় এবং সব পরিস্থিতিতে দেখা যায়, তবে সেটা অবশ্যই চিকিৎসাগত মূল্যায়ন দাবি করে।
ফারুক