ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

আন্দোলনকালে চানখাঁরপুলে ৬ জনকে হত্যা

৮ পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫ মে ফরমাল চার্জ গঠনের আদেশ ট্রাইব্যুনালের

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৩৪, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

৮ পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫ মে ফরমাল চার্জ গঠনের আদেশ ট্রাইব্যুনালের

৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর চানখাঁরপুলে আনাসসহ ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের জন্য ২৫ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ প্রদান করেছেন। 
এ সময় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম সরদার ও গাজী এমএইচ তামিম। তদন্ত  প্রতিবেদন যাচাই বাছাইয়ের জন্যে চার সপ্তাহ সময় নিয়েছি বলে সাংবাদিকদের জানান চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের আট সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আন্তর্জাতিক  অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় এই প্রথম কোনো মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা জমা দিলো ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আট আসামি হলেন- ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। এই আট আসামির মধ্যে শেষের চারজন এখন কারাগারে, বাকিরা পলাতক। কারাগারে থাকা চার আসামিকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ মামলার তদন্ত  শেষ করতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সময় লেগেছে ৬ মাস ১৩ দিন। প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে ৭৯ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে ঘটনার তথ্যপ্রমাণ হিসেবে ১৯টি ভিডিও, ২টি অডিও রেকর্ড, সংবাদপত্রের ১১টি প্রতিবেদন ও ৬ জনের মৃত্যুসনদ দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়া জুলাই গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনও মূল তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানের সময় উল্লেখিত  আসামিরা চানখাঁরপুল এলাকায় নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ  আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেন। 
এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। 
সার সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, পলাতক আসামি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্য আসামিরা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

আরো পড়ুন  

×