
ছবিঃ সংগৃহীত
দেশবরেণ্য আলোকচিত্রী, সমাজকর্মী ও সাংবাদিক ড. শহিদুল আলম তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন খুন হওয়া সাংবাদিক দম্পতি রুনির ভাইয়ের।
রুনির ভাই এর জমি সংক্রান্ত একটি সমস্যার স্ট্যাটাস শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, রোমান হলেন সাংবাদিক দম্পতি যাদের হত্যা করা হয়েছিলো, সেই রুনির ভাই। সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে এই দম্পতি হত্যা মামলার নথিপত্র আগুনে পুড়ে গেছে। এই খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বহু বছর ধরে এই তরুণটি তার বোনের ন্যায়বিচারের জন্য লড়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এখন তিনি নিজেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বাংলাদেশে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। আশাকরি কেউ একজন এই ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্ত করবেন এবং রোমান কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।
রুনির ভাই রোমানের স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, মায়ের জমির হক আদায় করতে গিয়ে প্রথমে জিডি করতে হলো! পরে থানায় যে সালিশে বসলাম সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতা, ছাত্রদল যুবদলের কর্মীরা উপস্থিত! অথচ আমি শুধুমাত্র আমার মায়ের ওয়ারিশ হিসেবে আমাদের নায্য প্রাপ্যতা চেয়েছি।
ঘটনা হলো আমার নানার ছেলেরা ঠিক করেছে তারা বোনের ভাগ দিবে না সেই টাকায় হজ্জ্ব করব, কিন্তু ওয়ারিশ এর হক দিবেনা তাই মায়ের ভাগ বুঝে নিতে অনেকদিন ধরেই লড়ে যাচ্ছি। আব্বা আম্মার জমি উদ্ধার করতে নানা সমস্যাই হচ্ছে কিন্তু সেটাকে উপভোগ করি কিন্তু এবারের অভিজ্ঞতা টা জঘন্য। আমার নানা নানীর দুই ছেলে তাদের বোনদের নাম ওয়ারিশন লুকিয়ে বেঁচে দেওয়া জমি স্থানীয় একজন কিনে নেয়, এবং পুরো জমি নিজে নিয়ে নিচ্ছিল নির্বিঘ্নে কিন্তু আমি গ্রামে এসে এগুলো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু কোন কিছুই আমার নানার ছেলেরা কানে নিচ্ছিল না তাই ওনারা যেমন একটা জমিতে বাড়ি করেছে আমিও একটা জমিতে সাইনবোর্ড দেই আমার আম্মার নামে।
ঈদের কিছুদিন আগে মির্জা কনা নামের লোকটি আমার মায়ের নামে লেখা সাইনবোর্ড ফেলে দিয়ে নিজের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়। আমি এবার গিয়ে সেই সাইনবোর্ড খুলে আমার সাইনবোর্ড আবার দিতে গেলে সে তেরে আসে। দুই মাস আগেও যে বললো এখানে আমার নানার জমি আছে দুই মাস পর সেই লোকটা কোন জমি নেই বলে মারতে আসলো। দুইটারই ভিডিও আছে আমার কাছে। পরে আমার সাইনবোর্ড পুরো গায়েব করে নিজের সাইনবোর্ডটি রাখে। এসপির কাছে গেলে তার পরামর্শে থানায় অভিযোগ দেই এবং আমাকে এবং আমার সাথে যেই স্থানীয় ছেলেটি থাকে তাকে আমি চলে যাওয়ার পর দেখে নেওয়ার হুমকি দিলে থানায় জিডি করি। কারণ আমি একাই যাই, একাই থাকি গ্রামে।
আজকে থাকায় সালিশে গেলে আটোয়ারী বিএনপি নেতা, ছাত্রদল যুবদলের ১০/১২ সহ মির্জা কণা আসে। থানার সালিশে বসবে পুলিশ আর সাথে বাদী বিবাদী পক্ষের লোকজন সেখানে এতো নেতা কর্মীর ওখানে কাজ কি? কালকে ভদ্র ব্যবহার করার ২ ঘণ্টা পর পুলিশ টা আজকে একটু ঝাল দেখানোর চেষ্টা করলো। আমি একাই এতগুলো মানুষের সাথে তর্ক করলাম, কিন্তু আমি তো একা, আমার বিপক্ষে সালিশে বসার জন্য এতো মানুষ? আমি একজন ছাত্রদলের ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম এতজন কেন আসছেন, বললো ভাইয়া আমরা এমনি আসছি আমি প্রশ্ন করলাম এখানে কেন আসবেন এখানে কি কাজ আপনাদের? চুপ হয়ে গেলো! হয়তো পার্টির লিডার এর নির্দেশে আসতে বাধ্য হয়েছে।
উল্লেখ্য মির্জা কণার খুবই নিকট আত্মীয় উপজেলা বিএনপির বাপ-মা (সবাই বলে) আহবায়ক এ জেড এম বজলুর রহমান জাহেদের কারণেই বেপরোয়া এখন। উনি আমার অনেক দূরের খালু হন ওনার কাছে এটা নিয়ে গিয়ে সমাধান তো পাইনি উল্টো অনেক সময় নষ্ট করেছেন, কণার ব্যাপারে উনি জানলেও এই বিষয়ে কিছুই বলেন না। যাই হোক মিটিং এ ওই লোক কে দলিল দেখানোর জন্য কিছু সময় বেঁধে দেওয়া হলেও আমার আম্মার নামের সাইনবোর্ড কেন ফেলে দেওয়া হলো এবং হুমকির বিষয়ে কোন কিছু না বলেই সালিশ শেষ করে দেওয়া হয়।
আমরা তো আওয়ামী লীগের কেউ না, বরং ভিকটিম আমাদের ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিষয়ে ইনডাইরেক্ট ভাবে ভয় ভীতি দেখতে এতো কর্মী আসতে হবে? পরে এসপি কে কল দিলাম উনিও ফোন ধরলেন না। একটা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতার (নিজেকে মির্জা কবিরুল ইসলাম কণা দাবি করেন) এতো দাপট! অনেককেই চিনি ভালো মানুষ কিন্তু এদের জন্য তাদের গায়েও তো ময়লা লাগে। দাদা নানার ওয়ারিশ হিসেবে অনেক জমি খুঁজে বের করে কিছুদিন ধরেই কাজ করছি, একদম বর্ডার এলাকায় গিয়ে সালিশে বসেছি, ভয় পাই নি, ভয় ডর কম পাই কিন্তু আজকের ঘটনাটাই একটু হতাশা কাজ করছে।
রিফাত