
“উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতা: বিশেষত শিক্ষার্থী বিনিময়, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা” শীর্ষক কর্মশালা
বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।
মঙ্গলবার “উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতা: বিশেষত শিক্ষার্থী বিনিময়, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা” শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইউজিসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর একটি হোটেলে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, দেশে পাবলিক, প্রাইভেটসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা না গেলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী হবে না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার পরিবেশ উন্নত করাও জরুরি। এসব বিষয় নিশ্চিত করতে পারলে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্মানজনক অবস্থান অর্জন করতে পারবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. হুমায়ুন কবীর। কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র এডুকেশন স্পেশালিস্ট টিএম আসাদুজ্জামান।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ফায়েজ বলেন, দেশে গুণগত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে ইউজিসি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে সার্কভুক্ত দেশগুলোর তুলনায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত নয়। শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যেতে হলে এই খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে তিনি সরকারকে পরামর্শ দেন।
কর্মশালায় শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে: দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত একাডেমিক সেশন চালু রাখা, বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় আমন্ত্রণ জানানো, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আঞ্চলিক উচ্চশিক্ষার জন্য একটি ডেস্ক চালু করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক অফিস স্থাপন, শিক্ষার্থী বিনিময়, ক্রেডিট ট্রান্সফার, যৌথ ডিগ্রি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের জন্য যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন, ফেলোশিপ ও ভিজিটিং প্রফেসরশিপের সুযোগ বৃদ্ধি, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু করা, সব প্রোগ্রামকে অ্যাক্রেডিটেশনের আওতায় আনা, গবেষণায় মেধা অন্বেষণ কর্মসূচি গ্রহণ, মৌলিক গবেষণার জন্য একাধিক বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, এবং সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সার্ক বৃত্তি প্রোগ্রাম পুনরায় চালু করা।
অনুষ্ঠানে উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় লিড ইকোনমিস্ট ড. হার্শে আতারুপানে এবং হিট প্রকল্পের পরিচালক প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান।
কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং হিট প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও কর্মশালায় অংশ নেন।
সায়মা ইসলাম