
ছবি: সংগৃহীত।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ১০ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে—এনআইডি স্থগিত হলে একজন নাগরিক কী কী মৌলিক নাগরিক সুবিধা হারান।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীরের মৌখিক নির্দেশে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনাসহ ১০ সদস্যের এনআইডি স্থগিতের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যাদের এনআইডি অবরুদ্ধ করা হয়েছে তারা হলেন—
- শেখ হাসিনা
- সজীব আহমেদ ওয়াজেদ
- সায়মা ওয়াজেদ
- শেখ রেহানা
- টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক
- আজমিনা সিদ্দিক
- শাহিন সিদ্দিক
- বুশরা সিদ্দিক
- রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক
- তারিক আহমেদ সিদ্দিক
কেন লক করা হলো এনআইডি?
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একান্ত সচিব মো. আশরাফুল আলম জানান, “নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ১৮৬টি প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় তথ্য পেলে কারও এনআইডি প্রোফাইল লক করতে পারে। কোনো সরকারি সংস্থা যদি পলাতক হিসেবে কোনো ব্যক্তির বিষয়ে আবেদন করে, তাহলে আইনি প্রক্রিয়ায় তার এনআইডি স্থগিত হতে পারে।”
কোন কোন সেবা বন্ধ হয়ে যাবে?
বাংলাদেশে মোট ২২টি গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সেবায় জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক। এনআইডি স্থগিত হলে একজন নাগরিক নিম্নোক্ত সেবাগুলো থেকে বঞ্চিত হন:
- পাসপোর্ট করা ও নবায়ন
- ব্যাংক হিসাব খোলা ও ঋণ গ্রহণ
- ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যানবাহন রেজিস্ট্রেশন
- স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়
- শেয়ার মার্কেটে বিও হিসাব খোলা ও ট্রেড লাইসেন্স করা
- চাকরির আবেদন ও সরকারি ভর্তুকি গ্রহণ
- গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ ও টেলিকম সেবা গ্রহণ
- আয়কর শনাক্তকরণ নম্বর (TIN) প্রাপ্তি
- নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ
- বিয়ে-তালাক নিবন্ধন, বিমা ও ই-টিকেটিং
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, অপরাধী শনাক্তকরণ, ওয়েব পোর্টালে লগইন
যদিও আইনি দিক থেকে এনআইডি স্থগিত হলে একজন নাগরিক কার্যত রাষ্ট্রীয় সব ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত হন, তবে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতির কারণে এর বাস্তবিক প্রভাব সীমিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ তারা বর্তমানে কেউই দেশে অবস্থান করছেন না।
নুসরাত