ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

গাজার সমর্থনে ভাঙচুরের ঘটনায়

প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করি, কিন্তু কর্মসংস্থান ধ্বংস কোন সমাধান নয়: আশিক চৌধুরী

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৮:৪৫, ২১ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করি, কিন্তু কর্মসংস্থান ধ্বংস কোন সমাধান নয়: আশিক চৌধুরী

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিনিয়োগরত শীর্ষস্থানীয় বিদেশি কোম্পানিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

সোমবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের নেতৃত্বে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সম্প্রতি গাজা হামলার প্রতিবাদে দেশে ঘটে যাওয়া কিছু সহিংসতার শিকার হওয়া ছয়টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল নেসলে বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা শু কোম্পানি, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, পেপসিকো এবং জুবিল্যান্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশ।

গত ৭ ও ৮ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার এবং একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আইজিপি ও বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যানের এই যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়ানোকে "শুধু প্রতীকী নয়, বাস্তব পদক্ষেপ" হিসেবে উল্লেখ করে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন,
“আমরা প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করি, তবে যে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষকে কর্মসংস্থান, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন প্রদান করে, সেগুলো ধ্বংস করা কখনোই সমাধান হতে পারে না। এই বৈঠক আমাদের দায়বদ্ধতা এবং সংকটে পাশে থাকার অঙ্গীকারের প্রতিফলন। বিনিয়োগকারীরা শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, হাজারো মানুষের জীবিকা ও স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি।”

বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা ক্ষয়ক্ষতি, কার্যক্রম বন্ধ এবং নিরাপত্তা নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। এর জবাবে আইজিপির কার্যালয় থেকে জানানো হয়, বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন থেকে একটি নির্দিষ্ট জরুরি হেল্পলাইন নম্বরে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দেয়া হবে, যাতে কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়া যায়।

আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “আমরা শুধু প্রতিক্রিয়ার জন্য নয়, আস্থা গড়ে তোলার জন্য এখানে এসেছি। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রস্তুত।”

বৈঠক শেষে বিডা, পুলিশ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে নতুন নিরাপত্তা প্রটোকল, দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল ইউনিট, এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কার্যকর যোগাযোগব্যবস্থা।

বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, “এই উদ্যোগ প্রতিক্রিয়া নয়, প্রতিরোধের লক্ষ্যে। আর সবচেয়ে বড় কথা, এটি সরকারের বিনিয়োগবান্ধব ও মানবিক অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি।”

প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা বিডা ও পুলিশের তাৎক্ষণিক সাড়া এবং সহমর্মিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান এবং বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই উদ্যোগ বিডার বৃহত্তর লক্ষ্য—একটি নিরাপদ, টেকসই ও বিনিয়োগবান্ধব বাংলাদেশ গঠনের অংশ বলে জানানো হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/p/18o6224s5F/

মারিয়া

×