
গাজীপুরের শ্রীপুরের সেলিম শিকদার নামে এক ঝুট ব্যবসায়ীর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তার টাকা লেনদেন সম্পর্কিত একটি কথপোকথন ফাঁস হয়েছে।
গেল রাত থেকে কথোপকথনের অডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়াতে থাকে। এরকম থেকেই এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার গাজীপুরের শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। অপরদিকে কথোপকথনে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল। তিনি শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার জানিয়েছেন, ৫আগস্টের ছাত্রজনতার অভ্যূত্থানের একটি হত্যা মামলায় তাকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। রমজান মাসের ৬ দিন আগে ১ মাস জেল খেটে জামিনে বের হয়েছেন তিনি । এর আগে তিনি রিদিশা গ্রুপের ফর্মলা ওয়ান কারখানায় ঝুট ব্যবসা করতেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার করার দিন তার কাছ থেকে ওসি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। এ ছাড়া ঝুট ব্যবসা করার সময় তার কাছ থেকে প্রাতি মাসে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা নিতেন ওই ওসি। টাকা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিতেন। ভয়ে তিনি টাকা দিয়ে তার ব্যবসায় কিছুদিন টিকিয়ে রেখেছিলেন। অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বিভিন্ন লোকজনকে দিয়ে ওসি তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন সেলিম সিকদার। এমনকি ফেসবুকে লাইভে এসে ছড়িয়ে পড়া অডিওটি ভুয়া বলে দাবি করতে তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সোমবার সকালের দিকে তিনি এক ভিডিও বার্তায় এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
ফাঁস হওয়া ৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই অডিও কথোপকথনে টেলিফোনের অপর প্রান্তে ওসিকে বলতে শোনা যায়, তিনি স্থানীয় একজনের মধ্যস্থতায় সেলিম সিকদারকে কারখানা থেকে ঝুট বের করতে সহযোগিতা করছেন। স্থানীয় ওই ব্যক্তিকে ১ লাখ ৩০হাজার টাক দিলে বিনা বাধায় ঝুট বের করে নিয়ে যেতে পারবেন বলে ওসি সেলিম সিকদারকে নিশ্চয়তা দিচ্ছেন। অডিওর এক পর্যায়ে ওসিকে বলতে শোনা যায়, সিকদারের কাছে ওসিকে ফুল হাতা গেঞ্জি কই.?
ভয়েস নিজের না জানিয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘এটা আমার নলেজে নাই। সারাদিন ফোনে অনেক মানুষের সাথে কথা কথা বলি। কাজের কথা বলি । কাজের বাইরে কোনো কথা বলি না। অডিওর বিষয়টি আমার নলেজে নাই। ‘
এ বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মোঃ যাবের সাদেক বলেছেন, ' এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। কথপোকথনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সাথে আমাদের কথা বলা দরকার। উনাকে নির্ভয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছি। উভয়ের বিষয়টি তদন্ত করে সত্য প্রমাণিত হলে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
ফুয়াদ