ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৫:০৫, ২১ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়ার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “শান্তিরক্ষী মিশনে নারীদের অংশগ্রহণ আমি উৎসাহিত করি। তাদের অন্তর্ভুক্তি শুধু সমতা নয়, কার্যকর শান্তি প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” তিনি জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে আরও জানান, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সবসময় জাতিসংঘের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী সরবরাহকারী শীর্ষ তিন দেশের একটি হিসেবে অবস্থান করছে। বর্তমানে ৫ হাজার ৬৭৭ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ১১টি সক্রিয় মিশনের ১০টিতে কাজ করছেন।

জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া জানান, নারীদের শান্তিরক্ষায় যুক্ত করার বিষয়ে জাতিসংঘের নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে। তারা নারীদের কোনো নির্দিষ্ট ভূমিকায় সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। তিনি বাংলাদেশের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমের (পিসিআরএস) আওতায় প্রতিশ্রুত পাঁচটি ইউনিটের কথা উল্লেখ করেন এবং জানান, বাংলাদেশ প্রয়োজন অনুযায়ী আরও সৈন্য ও পুলিশ পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে।

সাক্ষাতে প্রফেসর ইউনূস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সদর দপ্তর এবং মাঠপর্যায়ে বাংলাদেশি নেতৃত্ব আরও বাড়ানোর পক্ষে মত দেন। জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া জানান, এ বিষয়ে জাতিসংঘও বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘের কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া বাংলাদেশ মেনে চলে এবং প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতায় জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রস্তুত রয়েছে। মানবাধিকার রক্ষায় এসব উদ্যোগকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।

এ সময় জানানো হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আগামী ১৩ থেকে ১৪ই মে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবে।

সাক্ষাতে মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষ, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা, বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়া এবং নাফ নদ-সংলগ্ন এলাকায় জীবিকা বিপর্যয়ের বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “এই অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে তা নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।”

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করেন এবং বলেন, “এই সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।”

এম.কে.

আরো পড়ুন  

×