ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

ঐকমত্য কমিশনের সাথে ২য় দিনের বৈঠকেও যেসব বিষয়ে দ্বিমত বিএনপির

প্রকাশিত: ০১:৪৫, ২১ এপ্রিল ২০২৫

ঐকমত্য কমিশনের সাথে ২য় দিনের বৈঠকেও যেসব বিষয়ে দ্বিমত বিএনপির

ছবিঃ সংগৃহীত

সংস্কার সুপারিশ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সাথে বিএনপির দ্বিতীয় দিনের বৈঠকেও চূড়ান্ত বোঝাপড়া হয়নি।

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর দলীয় অবস্থান ও মতামত নিয়ে কমিশনের সাথে দ্বিতীয় দিনের মতো সংসদ ভবনের এলডি হলে আসেন বিএনপির প্রতিনিধি দল। সকাল ১১টায় শুরু হয় মূলতবি বৈঠক। আলোচনার শুরুতে প্রথম দিনের বৈঠকে ঐকমত্য হওয়া বেশ কিছু বিষয় চূড়ান্ত করার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছে বিএনপি। তবে সাংবিধানিকভাবে নয়, বিষয়টি আইনিভাবে সম্পন্ন করার পরামর্শ দিয়েছে দলটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সংবিধানে উল্লেখ করার জন্য তাদের প্রস্তাবে আমরা বলেছি—এগুলো আইনের মাধ্যমে করাটাই সমচীন হবে। তবে আমরা নীতিগতভাবে একমত।”

আগামী মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) হবে আরেক দফা বৈঠক। তবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা—এসব বিষয়ে ঐকমত্য হলেও, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো, দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারা—এমন প্রস্তাবগুলোর বিরোধিতা করেছে দলটি। তারা বলেছে, দুই টার্মের পর বিরতি দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হবার সুযোগ রাখা উচিত।

তবে অনেক বিষয়ে বিরোধিতাও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে চায় না বিএনপি। তারা মত দিয়েছে, টানা দুইবারের বেশি না পারলেও বিরতি দিয়ে কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে সেই সুযোগ থাকা উচিত। একই সাথে, কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়ার বিষয়ে সমর্থন করেছে তারা।

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, “বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক পদে পদায়নের ক্ষেত্রে এবং বিচার বিভাগের চিফ জাস্টিস এবং অন্যান্য বিচারপতিদের পদায়নের ক্ষেত্রে, এবং রাষ্ট্রপতিকে কোন কোন বিষয়ে ঐকমতের ভিত্তিতে ক্ষমতায়িত করতে চাই—সে বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হলে, তখন সেটা লেজিসলেশন করে পার্লামেন্টে বাস্তবায়ন করা যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “যদি দুইবারের পর একবার গ্যাপ হয়, তার পরবর্তীকালে যদি জনগণ সেই পার্টিকে মেজরিটি পার্টি হিসেবে নির্বাচন করে এবং সেই পার্টি যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেই একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতেও পারেন। আমরা তো এখানে অপশনটা রাখতে চাই—বাধ্যবাধকতা করা যাবে না।”

এদিন সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল প্রস্তাবের পরিবর্তে বিএনপি তাদের ৩১ দফার আলোকে সংশোধনের সুপারিশ করেছে।

সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা চারটা বিষয়ে প্রস্তাব করেছি—যেমন: অর্থবিল, আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধনী, ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা। এই বিষয়গুলো ব্যতীত বাকি সব বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট ও মতামত প্রকাশ করতে পারবেন।”

এছাড়া, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরলেও সে সরকারের মেয়াদ তিন মাস রাখা এবং প্রধান উপদেষ্টা বিচার বিভাগের বাইরের কেউ হতে পারেন কিনা—তা নিয়ে আরো আলোচনার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই পক্ষ।

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, “চিফ জাস্টিস বা অ্যাপিলেট ডিভিশন—এগুলো যে উল্লেখ ছিল প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার ক্ষেত্রে, সেগুলোর বিষয়ে বিকল্প কোনো চিন্তাভাবনা করা যায় কিনা—এটা উনারাও পরে প্রস্তাব করবেন। আমরাও একটা প্রস্তাব করব।”

সূত্রঃ https://youtu.be/4VxnKBFh_U0?si=ZwsvAGkr_YAoErB_

ইমরান

আরো পড়ুন  

×