ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

জুলাই বিপ্লবের চেতনায় গঠিত হবে আগামীর বাংলাদেশ: ইস্তাম্বুলে সম্মেলনে বক্তারা

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ২০ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৯:৩৯, ২০ এপ্রিল ২০২৫

জুলাই বিপ্লবের চেতনায় গঠিত হবে আগামীর বাংলাদেশ: ইস্তাম্বুলে সম্মেলনে বক্তারা

জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মত্যাগ এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল, আগামীর বাংলাদেশ সেই চেতনার ভিত্তিতেই নির্মিত হবে- ইস্তাম্বুলে আয়োজিত 'বাংলাদেশ স্টাডিজ কনফারেন্স'-এ বক্তারা এমন মত প্রকাশ করেন। 

তারা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন বিপ্লব থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে একটি মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা। জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে এই চেতনা ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি।

তুরস্কভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (সিপিএসআর) এর উদ্যোগে ইস্তাম্বুল তিজারাত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক 'বাংলাদেশ স্টাডিজ কনফারেন্স'।


“জুলাই বিপ্লবের চেতনায় বাংলাদেশ ২.০ বিনির্মাণ” শীর্ষক এই সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের সাবেক উপদেষ্টা ও খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ইয়াসিন আকতাই, দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কবির হাসান।


অধ্যাপক ড. ইয়াসিন আকতাই বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গঠনের এ প্রক্রিয়ায় তুরস্ক সবসময় বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকবে।” ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, “ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করাই ছিল জুলাই বিপ্লবের মূল রাজনৈতিক দর্শন। এই দর্শনই আগামীর বাংলাদেশ পুনর্গঠনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।”

আঙ্কারায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. আমানুল হক বলেন, “জুলাই বিপ্লবের পর তুরস্ক ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাচ্ছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে।” আয়োজক প্রতিষ্ঠান সিপিএসআর-এর সভাপতি ড. হাফিজুর রহমান বলেন, “জুলাই বিপ্লবকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই সম্মেলন বাংলাদেশ ২.০ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”


কনফারেন্সে আরো বক্তব্য রাখেন তুরস্কের সংসদ সদস্য দোয়ান বেকিন, সুইডেনের সাবেক মন্ত্রী মেহমেত কাপলান, ইস্তাম্বুল তিজারাত ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর নেজিপ সিমশেক, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহাসান,  নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস- চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইসমাইল, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহীনুল আলম, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আতিয়ার রহমান, ইউ এস কাউন্সিল ফর মুসলিম অর্গানাইজেশনের সেক্রেটার্রী জেনারেল ওসামা জামাল, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসামের প্রধান অধ্যাপক ড. হোসেইন হুসনী কয়অলু, ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ওসমান আকগুল প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিএসআর-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আ. স. ম. মাহমুদুল হাসান এবং গবেষক মাকামে মাহমুদ।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত গবেষকরা সম্মেলনে মোট ১২৫টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন, যা ২৬টি ভিন্ন ভিন্ন প্যানেলে ভাগ করে উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাপত্রগুলোর মূল প্রতিপাদ্য ছিল জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ ২.০ গঠনে প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন, সংবিধান, সংস্কার, রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়া, খাতভিত্তিক সমস্যা ও সম্ভাবনা বিশ্লেষণ এবং সমাধানের মডেল উপস্থাপন।

সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে বক্তারা বাংলাদেশ ২.০ গঠনে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং বলেন, “এই প্রয়াস শুধু একটি সম্মেলন নয়, এটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের সূচনাবিন্দু।”
 

আফরোজা

আরো পড়ুন  

×