
ছবি: সংগৃহীত
আগামী ৩ মে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক আজ রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে হেফাজতের কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ সভা শেষে এ ঘোষণা দেন।
মামুনুল হক বলেন, “আমাদের সংগ্রামী মহাসচিব এই মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। এই মহাসমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ও দাবি নিয়ে আমরা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই।”
মহাসমাবেশের প্রধান দাবিসমূহ:
১. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বিচার দাবি:
হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যাসহ বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের হত্যাকাণ্ডসহ সব হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করা হয়েছে।
২. সংবিধানে বহুত্ববাদ প্রত্যাখ্যান:
সংবিধান সংস্কার কমিশনের একটি প্রস্তাবে ‘বহুত্ববাদ’-এর ধারণা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবকে হেফাজতে ইসলাম সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা সংবিধানে মহান আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের ধারাটি পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছে।
৩. নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল ও কমিশন বিলুপ্তির দাবি:
হেফাজতে ইসলাম অভিযোগ করেছে, নারী অধিকার সংস্কার কমিশন ইসলামী উত্তরাধিকার আইন ও পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের উৎস হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তারা এই প্রস্তাবকে ‘ইসলাম বিদ্বেষী’ ও ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী’ বলে দাবি করে কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই প্রস্তাব প্রচারের নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
৪. ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদ ও আন্তর্জাতিক আহ্বান:
ভারতে মুসলিমদের ওপর নির্যাতন ও বিশেষ করে ‘ওয়াকফ আইন সংশোধনী ২০২৫’ বিলের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারত সরকারের প্রতি তা বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করা হয়েছে।
৫. গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ:
জায়নবাদী ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের গাজায় চালানো গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বিশ্বসংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
মাওলানা মামুনুল হক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “তিন তারিখের মধ্যে যদি বিতর্কিত প্রস্তাবনা ও ঘোষণা প্রত্যাহার না করা হয় এবং কমিশন বাতিল না করা হয়, তাহলে ৩ মে মহাসমাবেশ থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে, ইনশাআল্লাহ।”
তিনি সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও জাতীয়ভাবে উদ্বিগ্ন নাগরিকদের মহাসমাবেশে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=w8ZEJZs6Y8E
আবীর