
ছবি: জনকন্ঠ
আমার বাবার কী অপরাধ ছিল?—কান্নাজড়িত কণ্ঠে বারবার এই প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছিল লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার জসিম উদ্দিনের ছোট ছেলে। বিএনপির গ্রুপিংয়ের সংঘর্ষে প্রাণ হারানো জসিম উদ্দিনের হত্যাকাণ্ডে এখন উত্তাল রায়পুরের জনপদ।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রায়পুর উপজেলার ২নং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাশেরহাট সড়কে স্থানীয়রা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেন। নিহতের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সরব উপস্থিতিতে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
জসিমের বোন মানববন্ধনে বলেন, “আমার ভাই রাজনীতি করতো, কিন্তু কোনো অপরাধ করেনি। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিরপরাধ জসিমকে জীবন দিতে হলো। অথচ এখনো হত্যাকারীরা ধরা পড়েনি। আমরা বিচার চাই।”
চোখের পানি মুছতে মুছতে জসিমের স্ত্রী বলেন, জসিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত মোস্তফা গাজী, শামীম গাজী, ইমাম গাজী, সায়েম গাজী, শাহ আলী মোতাইত, আল-আমিন, মেহেদী গাজী ও সফিক রাড়ী। এদের কেউই ধরা পড়েনি। আমরা দ্রুত বিচার চাই।
মানববন্ধনে জসিমের চাচাতো বোন বলেন, জসিমের নিজের কোনো ঘর ছিল না। এখন তার স্ত্রী ও চার সন্তান কোথায় যাবে? ফারুক কবিরাজ তার অসুস্থতা থেকে শুরু করে সংসারের খরচ চালিয়েছেন। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, জসিমের পরিবারের জন্য স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হোক।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনের প্রতি তারা অনুরোধ জানান, যেন দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হয়।
রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল রায়পুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন জসিম উদ্দিন। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
প্রদীপ কুমার রায়/রবিউল হাসান