
ছবিঃ প্রতিবেদক
নিজস্ব সংবাদদাতা, সৈয়দপুর
ভৌগলিক ও সহজ যোগাযোগ ব্যাবস্থার ক্ষেত্রর কারণে সৈয়দপুরে চীনের অর্থায়নে নির্মিত এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নির্মাণের দাবী উঠেছে।
উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত সৈয়দপুর। এ জনপদে রয়েছে, বিমানবন্দর, রেলওয়ে ষ্টেশন, দুরপাল্লাগামী শতাধিক কোচের ষ্ট্যান্ড ও অভ্যন্তরীন রুটে রয়েছে একটি বিমানবন্দর। এই তিন পথে সহজেই উত্তরের সকল জেলার ব্যাবসায়ীরা তাদের মালামালসহ ও ভিআইপিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করছেন। বিশেষ করে এখানকার ব্রিগেড ক্যান্টনমেন্ট, এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ রেলওয়ে কারখানা, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রায় সাতশো কারখানা, শতাধিক বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বৃহৎ ফলের আড়ৎ, পানি উন্নয়ন দপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়, ৩৫ টি ব্যাংক ও বিভিন্ন বীমার অফিস, বিসিক শিল্প নগরী, উত্তরা ইপিজেড, দর্শনীয় স্থান চিনি মসজিদ, মৎস্য গবেষনা কেন্দ্রসহ প্রায় শতাধিক রকমের ক্ষুদ্র উৎপাদনশীল কারখানার সাথে জড়িতরা যাওয়া আসা করেন।
এছাড়া এ জনপদ দিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যের বাজারে রপ্তানী করছেন তাদের উৎপাদিত পণ্য। এর কারণে আকাশ পথ জনপ্রিয় হয়ে উঠায় দেশের অভ্যন্তরীন রুটে এ বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন ১৮ টি ফ্লাইটে প্রায় দুই হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। এ জনপদ থেকে আন্তর্জাতিক রুটে আকাশ পথে নেপাল, ভুটান ও ভারতের সাথে আধ ঘন্টার দুরত্ব হওয়ায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন দেশগুলো। যার কারণে এ বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকীকরণের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন কাজ চলছে, যা শেষের পথে। আরও করা হয়েছে রানওয়ের ওভারলেকরণ, ১০০ ফুট প্রশস্ত, রানওয়ের শক্তি ১৭ পিসিএন থেকে ৪৫ পিসিএনে উন্নীত, সীমানার চারিদিকে পেট্রোল রোড নির্মাণ, বিমান পার্কিং এলাকা বর্ধিতকরণ ও যাত্রী ছাউনির বর্ধিতকরণ। এতে আকাশ পথে আরও বিমানের পরিবহন সংখ্যা বৃদ্ধিতে সমৃদ্ধ হবে।
এ হাসপাতালটি স্থাপনে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় জমি রয়েছে। রেলওয়ের প্রায় দুইশত একর জমি রয়েছে শহরের ১০ ও ১১ নং ওয়ার্ডের ইটভাটি এলাকায়। আর সরকারি পরিত্যাক্ত এবং খাস জমি রয়েছে বাইপাস সংলগ্নসহ ঢেলাপীর এলাকার। রয়েছে সকলের জন্য স্বল্প ব্যয়ে নিরাপত্তার সাথে হোটেল, মোটেলে থাকার ব্যাবস্থা। তাই এ শহরে চীনের অর্থায়নে ১০০০ শয্যার হাসপাতালটি নির্মানের প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র প্রস্তুত রয়েছে। এতে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও বিদেশীরা সহজেই চিকিৎসা গ্রহন করতে পারবেন। এ হাসপাতাল স্থাপনে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় জমি রয়েছে। রেলওয়ের প্রায় দুইশত একর জমি রয়েছে শহরের ১০ ও ১১ নং ওয়ার্ডের ইটভাটি এলাকায়। আর সরকারি পরিত্যাক্ত এবং খাস জমি রয়েছে বাইপাস সংলগ্নসহ ঢেলাপীর এলাকার।
সৈয়দপুরের ব্যাবসায়ীগণ জানান, উত্তরবঙ্গে প্রবেশদ্বার ও কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সৈয়দপুর। এখান থেকে সহজেই সকল জেলা শহরে যাতায়াত করা যায়। সৈয়দপুর জেলা বিএনপি তাঁতী দলের আহ্বায়ক আনিস আনসারি বলেন, ‘এ শহরে দেশের যে কোন জেলা থেকে সড়ক, আকাশ ও রেলপথে যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে। রংপুর বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক শহর। তাই স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে এ জনপদে সহজ শর্তে নির্মাণের দাবী রাখে।’
সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গফুর সরকার বলেন, ‘এখানে ১০০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি সকল স্থান থেকে এগিয়ে। কারণ সার্বিক ক্ষেত্র প্রস্তত রয়েছে। সরকারি হাজার হাজার একর জমি রয়েছে। আর আকাশ পথের কারণে চিকিৎসা গ্রহনকারীদের জন্য দেশ বিদেশের রোগীদের জন্য সুবিধা রয়েছে।’
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: নাজমুল হুদা বলেন, ‘১০০০ শয্যার হাসপাতালটি শুধু স্থানীয়দের জন্য নয়। এটা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হবে। কারণ চীন তাদের উন্নত প্রযুক্তি ও চিকিৎসক দ্বারা সেবা প্রদান করবেন। এতে দিন দিন জনপ্রিয়তা বেড়ে আন্তজার্তিক মানের একটি চিকিৎসা সেবা স্থানে পরিণত হবে। এতে আকাশপথ ও ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালটি এখানে নির্মাণের অগ্রাধিকার রাখে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীন উপহার হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা, যা ব্যয়ে রংপুরে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। এরই ধারাবাহিকতায় সৈয়দপুর, চিরিরবন্দর ও তিস্তা পাড় পরিদর্শন করেছেন।
আরশি