ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

গোলাম মোহাম্মদ কাদের

সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা 

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা 

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে সকল সমস্যা সমাধানের প্রথম স্টেপ। যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যেনো নিরপেক্ষভাবে কাজ করে সে নিশ্চয়তা থাকতে হবে। ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হলেও আমাদের আপত্তি নেই। অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনে ডিসি ও এসপি’রা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন। বর্তমান সরকার তাদের দলের জন্য কী ভূমিকা নেবেন তাও পরিষ্কার হওয়া দরকার। একতরফা নির্বাচন করে কারোরই লাভ হবে না। একতরফা নির্বাচন হলে আবারো গন্ডগোল হবে, এর একটা স্থায়ী সমাধান দরকার। শনিবার জাতীয় পাটির বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, বিচার ব্যবস্থায় কেউ বাঁধা দিচ্ছেনা, বিচারের সাথে নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। আরেক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ, আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয় কিন্তু হাইকোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি। এই সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাশ করতে হবে। তাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই। দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে এই সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনদিনই কার্যকর হবে না। সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কতবড় গর্তে পড়বে তা তারা বুঝতে পারছে না। সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে, আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি এবং জাতীয় পার্টির ৭০ ভাগ নেতা-কর্মী নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, আমাকে নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো আমি রাজি হইনি। কিন্তু ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সকল দলই অংশ নিয়েছিলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তো দেশের সকল রাজনৈতিক দলই অংশ নিয়েছিলো। আমরাও সবার সাথে নির্বাচনে গিয়েছিলাম। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাদের স্পেশাল কারণে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমাদের নির্বাচনে যেতে হয়েছে, এটা বেআইনি কাজ নয়। এতে দোসর বলা যায় না, আমার দল যদি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয় আমি নির্বাচন করতে পারি। আমি তো কোন আইন ভঙ্গ করিনি। নির্বাচনের আগে ও পরে তৎকালীন সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছি। আমার চেয়ে কঠোর সমালোচনা কেউ করেনি। নির্বাচন সঠিক হয়নি এর বিশদ বর্ণনা দিয়ে বক্তৃতা করেছি, কলাম লিখেছি। সকল রেকর্ড আছে। গ্যাস, বিদ্যুত, পদ্মাসেতু ও উন্নয়ণের নামে দুর্ণীতি ও লুটপাটের কঠোর সমালোচনা আমার চেয়ে কেউ বেশি করেনি।


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, নাসরিন জাহান রতনা, সৈযদ দিদার বখত, আলমগীর সিকদার লোটন, লিয়াকত হোসেন খোকা, শেরীফা কাদের, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল ইসলাম জহির, মনিরুল ইসলাম মিলন, মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, এসএম ইয়াসির, মোঃ আরিফুর রহমান খান, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, ইকবাল হোসেন তাপস।

ফারুক

×