ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনে সাকিবসহ যেসব সেলিব্রিটিরা

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৮:৩৫, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনে সাকিবসহ যেসব সেলিব্রিটিরা

ছবি: সংগৃহীত

পিয়া জান্নাতুল, দেশের জনপ্রিয় মডেল ও সোশ্যাল মিডিয়া তারকা। ফেসবুকে তার ফলোয়ার ১৭ লাখের বেশি ইনস্টাগ্রামে ১১ লাখ। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ১২টি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন শেয়ার করেছেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।

শুধু পিয়া নয়, শবনম বুবলি, সামিরা খান মাহি, নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহিসহ দেশের একাধিক সেলিব্রিটি এই প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এমনকি দেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানও আছে এই তালিকায়।

২২ মার্চ নিজের ফেসবুক পেজে এক কোটিরও বেশি ফলোয়ারের কাছে সাকিব প্রচার করেন ‘ওয়ানএক্সবেট’ এর (1XBET) বিজ্ঞাপন। এর আগেও ২০২২ সালে ‘বেট উইনার’ এর শুভেচ্ছা দূত ছিলেন তিনি। শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতেও এই অবৈধ বেটিং অ্যাপ নিয়ে চলছে তদন্ত এবং তাতে উঠে এসেছে সাকিবের বোন জান্নাতুল হাসানের নামও।

তবে এই প্রবণতা শুধু বাংলাদেশের সীমাবদ্ধ তা নয়। বিশ্বজুড়ে তারকারা বারবার জড়িয়ে পড়েছেন জুয়া বা বেটিং সংক্রান্ত বিতর্কে।

শিল্পা শেঠির স্বামী বলিউড অভিনেতা রাজ কুন্দ্রা ২০২১ সালে অবৈধ বেটিং অ্যাপ ও ফর্ম কন্টেন্ট প্ল্যাটফর্ম পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতার হন। এর আগে আইপিএল বেটিং কেলেঙ্কারিতেও তার নাম উঠে এসেছিল। ২০১৩ সালে রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি ম্যাচ ফিক্সিং ও বেটিংয়ের অভিযোগে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হন।

বলিউড অভিনেতা আরবাজ খানও স্বীকার করেন, তিনি অবৈধ বেটিংয়ে জড়িত ছিলেন। ২০১৮ সালে আইপিএল বেটিং তদন্তে তার নাম উঠে আসে। হলিউডেও ব্যতিক্রম নয়। অভিনেত্রী লিন্ডসে লোহানের বিরুদ্ধেও আছে অনলাইন গ্যাম্বলিং প্রমোশনের অভিযোগ। এমনকি অস্কারজয়ী অভিনেতা বেন অ্যাফ্লেক পেশাদার জুয়ারিদের সাথে খেলার জন্য একাধিকবার লাস ভেগাস ক্যাসিনো থেকে নিষিদ্ধ হন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত। এই সংখ্যা জানিয়েছিলেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। অথচ আইন এখনো অস্পষ্ট। ২০২৩ সালে হাইকোর্ট বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছিল, সব ধরনের অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে। কিন্তু আজও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে এসব বিজ্ঞাপন চলছে।

২০২৪ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, শুধুমাত্র ফেসবুকে সে বছরে আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার জুয়ার বিজ্ঞাপন চলে। অন্য এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মেটা ও গুগল এর নীতিমালাতেও বাংলাদেশে জুয়ার বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ। কিন্তু বিজ্ঞাপনদাতারা প্রযুক্তিগত ফাঁকফোকর ব্যবহার করে এসব চালিয়ে যাচ্ছে।

পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট, ১৮৬৭ অনুযায়ী, এটি অপরাধ। সংবিধানও বলে, রাষ্ট্র জুয়া খেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তবে বাস্তবতা হলো অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে কার্যকর কোন নীতিমালা নেই। ২০২৪ সালে কিছু ইউটিউবারকে গ্রেফতার করা হলেও বড় তারকাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=XIdbtpXJqVc

রাকিব

আরো পড়ুন  

×