ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা চাওয়া নিয়ে ও সম্পদ ফেরত দেয়ার আলোচনায় রাজি পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ১৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৭:৩৫, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা চাওয়া নিয়ে ও সম্পদ ফেরত দেয়ার আলোচনায় রাজি পাকিস্তান

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের জটিল ইস্যুগুলো সমাধানের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের সম্পদ ফেরত, ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা, অবৈধ পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রত্যাবাসন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।  

 

 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্য ৪.২ বিলিয়ন ডলার (স্বাধীনতাপূর্ব সম্পদ) ফেরত চাওয়া হয়েছে এবং ইসলামাবাদ এ বিষয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ পাকিস্তানি নাগরিকের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও আলোচনায় উঠে এসেছে।  

জসিম উদ্দীন আরও বলেন, দুই দেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে। খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়েও চুক্তি হতে পারে। তিনি বলেন, "জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় নিয়েই আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছি।"  

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ এ বৈঠককে "অত্যন্ত ফলপ্রসূ" বলে আখ্যায়িত করেন। ঢাকায় তার সফরকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আমি আশাবাদী।"  

 

  
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে দুদেশের সম্পর্কে বিভিন্ন অমিমাংসিত ইস্যু রয়ে গেছে। সম্পদ ফেরত ও গণহত্যার জন্য দায় স্বীকারের বিষয়টি বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে তুলে আসলেও পাকিস্তান উপেক্ষা করে , এবারের বৈঠকে পাকিস্তানের সম্মতি একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।  

এদিকে, বাংলাদেশে বসবাসরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টিও একটি জটিল সমস্যা ছিল। তাদের নাগরিকত্ব ও বসবাসের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তা চলছিল। এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হওয়ায় একটি সমাধানের পথ তৈরি হতে পারে।  

 

 

অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও যোগাযোগ বাড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে, ১৯৭১-এর ইস্যুগুলোতে পাকিস্তানের কতটা দায়িত্ব স্বীকার করে তা এখনও দেখার বিষয় রয়ে গেছে।  

এই আলোচনা বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে কি না, তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের পদক্ষেপগুলোর ওপর।

আঁখি

আরো পড়ুন  

×