
ছবি: সংগৃহীত
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপ-উপাচার্য ড. সোবহান মিয়া, কুয়েটের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়াত হোসেন নয়নসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানায় দায়ের হওয়া মামলা দুটির বাদি কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান ও মাহদী হাসান।
খানজাহান আলী থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের ১ মে রাতে লালন শাহ হলের গেস্ট রুমে লুৎফর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মারপিট করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। একই রাতে মাহদী হাসান নামের ওপর শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু হলের গেস্ট রুমে মারপিট করা হয়। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীরা খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৪ এপ্রিল (সোমবার) মামলাগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লুৎফর রহমানের মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া, সাবেক রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত হোসেন নয়ন, সাধারণ সম্পাদক আলী ইমতিয়াজ সোহান, ছাত্রলীগ কর্মী মো. আসাদুজ্জামান, লালন শাহ্ হলের তৎকালীন ছাত্রলীগ কর্মী ও পরবর্তী কুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্রনীল সিংহ শুভ, ছাত্রলীগ নেতা এইচ এম তানভীর রেজওয়ান সিদিক, আল ইশমাম, রেশাদ রহমান, তারিকুল তিলক, পরিমল কুমার রায়, আলী ইবনুল সানি, তারিক আহমেদ শ্রাবন ও দৌলতপুর থানার তৎকালীন ওসি আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
অপর ভুক্তভোগী মাহদী হাসানের মামলায় সাবেক উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা আলী ইবনুল সানি, কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী আবির স্বপ্নিল, তাশরিফ সালেহ রাহুল, ফয়সাল, মশারুর আলম কৌশিক, আসাদুজ্জামান রিয়ান, পরিমল কুমার রায়, তারিক আম্মেদ শ্রাবন, দৌলতপুর থানার সাবেক সভাপতি এস এম আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
মাললার বাদি মাহদী হাসান বলেন, ‘২০১৭ সালের ১ মে দুপুরে দৌলতপুরে একটি কোচিং সেন্টারে পড়ানোর সময় ওসি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে আটক করে। এরপর একটি নামের তালিকা রেজিষ্ট্রার জি এম শহিদুল ইসলামের কাছে দেওয়া হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষ থেকে আমাকে ধরে হলের গেস্ট রুমে আনা হয়। তখন নাঈম ও আমাকে মামলায় উল্লেখিত ছাত্রলীগের নেতারা মারধর করে। নাঈমকে এতো মরে যে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। এরপর আমিসহ অন্যান্য হল থেকে ১৪ জনকে ধরে এনে সারা রাত নির্যাতন করে।’
সেই নির্যাতনের ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন উল্লেখ করে মাহদী হাসান আরও বলেন, ‘নখ উঠে যায়, শরীরের নানা অংশে এখনও যন্ত্রণা করে। শুধু তাই নয় পরদিন পুলিশ এসে আমাদের নামে মামলা দেয় এই কারণে যে, আমরা নাকি সরকার উৎখাতের সভা করছিলাম। ঘটনায় এক মাসের মতো জেলও খেটেছি।’ এ ঘটনায় আরও অনেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
রাকিব