ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সাকিবের নির্বাচন কভারের ভাইরাল ছবির ব্যাপারে যে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ১৭ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৩:৩৭, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

সাকিবের নির্বাচন কভারের ভাইরাল ছবির ব্যাপারে যে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব

ছবি: সংগৃহীত

২০২৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে মাগুরা-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জনপ্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। সে সময়, দেশের অনেক সাংবাদিকের মতোই এএফপির তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলমও সাকিবের প্রচারণা কভার করেছিলেন এবং সেই অভিজ্ঞতার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন।

বর্তমানে সেই ছবিগুলো ফের ছড়িয়ে পড়ছে, আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী তা ব্যবহার করছেন প্রচারণায়। বিষয়টি ঘিরে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিকুল আলম, বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনরত, নিজের সামাজিক মাধ্যমে একটি ব্যাখ্যামূলক পোস্ট দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, “আমি জানি ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ যুগের ১৬ বছরে আমি কী করেছি! আমার ফেসবুকে থাকা যেকোনো ছবি বা মন্তব্য দেখতে আপনাকে স্বাগত। এই খোঁজ আমার স্মৃতিকে পুনর্জাগরিত করবে, এবং একদিন এই অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো একটি বই লিখতে পারব।”

সাকিবের নির্বাচন কভার করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মাগুরা ভ্রমণের সময় তোলা ছবিগুলো বর্তমানে কিছু গ্রুপ যেমন ‘বাল বট বাহিনী’ ও ‘আপা ভক্ত’ বলে পরিচিত মহল শেয়ার করছে। তারা দাবি করছে, আমি সাকিবের সঙ্গে একদিন কাটিয়ে তার নির্বাচনের উপর একটি বিশদ প্রতিবেদন করেছিলাম, যার প্রভাব সুস্পষ্ট ছিল।”

তিনি আরও জানান, “সাকিবের প্রচারণা কাভার করতে গিয়ে আমরা তাকে অনুসরণ করেছি। প্রচারণার সময় আমি বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি ও ছবি তুলেছি। রাস্তার প্রতিটি দেয়ালে, দোকানে ও গেটে সাকিবের পোস্টার ছিল। পাশাপাশি অন্যান্য প্রার্থীদের—বিশেষ করে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির একজন নেতার—কিছু পোস্টারও দেখা গিয়েছিল, যা ৭ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে বিরোধী দলের উপস্থিতির প্রতীক।”

শফিকুল আলম বলেন, “আমি পেশাগত জীবনে হাজারো ছবি তুলেছি। ২০১১ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমাকে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন জায়গায় ও বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে দেখা যাবে। গত বছর একটি অস্থায়ী মুজিব জাদুঘরে পেঙ্গুইন জ্যাকেট পরা আমার ছবি ভাইরাল হয়েছিল, যা কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত ব্যাখ্যায় উপস্থাপন করেছিল।”

পোস্টের শেষাংশে তিনি আবারও লেখেন, “আমি জানি, ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ শাসনামলে আমি কী করেছি। আমার ফেসবুকে থাকা যেকোনো ছবি বা পোস্ট আপনারা দেখতে পারেন। এতে আমার স্মৃতিগুলো উজ্জীবিত হবে এবং হয়তো ভবিষ্যতে আমাকে একটি বই লেখার অনুপ্রেরণা দেবে। ধন্যবাদ।”

এই পোস্টের আগেও সাকিব আল হাসানকে নিয়ে একটি বিস্তারিত মন্তব্য করেছিলেন শফিকুল আলম। সেখানে তিনি লেখেন, “সাকিবের আওয়ামী লীগে যোগদানের সিদ্ধান্ত শুধু একটি রাজনৈতিক ভুল নয়, বরং সেটি ছিল বিশ্বাসঘাতকতার মতো সিদ্ধান্ত।”

সেই লেখায় তিনি বলেন, “একজন নাগরিক হিসেবে সাকিবের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকার অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা হলো, তিনি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন কি না, সেটি নয়— বরং তিনি কার পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাই মুখ্য।”

তিনি আরও লেখেন, “যখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, এমনকি ব্যাংক ডাকাতির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠছে এবং আন্তর্জাতিক তদন্তের মুখে রয়েছে, তখন সাকিবের এমন সিদ্ধান্ত কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং একটি বিতর্কিত শাসনব্যবস্থার প্রতি মৌন সমর্থন বলেই বিবেচিত হবে।”

শিহাব

আরো পড়ুন  

×