
এবার নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' হিসেবে উদ্যাপন করেছে। তবে ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছে ইউনেসকো।
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনসংক্রান্ত এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এই তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিভাগের শাখা ইউনেসকোর প্রেস সার্ভিসের কর্মকর্তা মনিয়া আজিয়ানু।
চিঠির মাধ্যমে দেওয়া জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশের এই অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নাম পরিবর্তন করতে বাংলাদেশ সরকার এখনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আবেদন করেনি৷ এছাড়া নাম পরিবর্তনের আবেদন করা হলেও সেটির স্বীকৃতি পেতে হলে ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসংক্রান্ত কমিটির গভর্নিং বডির অনুমোদন লাগবে। এই কমিটিতে যুক্ত রয়েছে ২৪টি দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ।
ইউনেসকোর এই মুখপাত্র বলেন, 'অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গতিশীল ও জীবন্ত প্রকৃতিকে স্বীকৃতি দিয়ে, ইউনেসকোর এ তালিকায় কোনো উপাদানের নাম পরিবর্তনের জন্য একটি স্পষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে৷ এটি ওই কনভেনশনের পরিচালনাকারী সংস্থা — যা কি না ২৪টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত, সেই অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর করা হয়৷ '
পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রা ২০১৬ সাল থেকে ইউনেসকোর 'মানবতার জন্য প্রতিনিধিত্বকারী' তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক কনভেনশনে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গতিশীল ও জীবন্ত প্রকৃতিকে সম্মান জানাতে বলা হয়েছে৷ অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কার্যক্রমকে বা এর চর্চাকারীদের প্রভাবিত করে এমন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কাজকে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতেও বলা হয়েছে৷
এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের ইস্যুতে দেশ, বিদেশে নানা মহলে আলোচনা, সমালোচনা চলছে৷ চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। শোভাযাত্রায় মঙ্গল শব্দটি থাকায় সমাজের নানা স্তরে 'খারাপ প্রতিক্রিয়া' হয়েছে৷ এছাড়াও ১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদ 'আনন্দ শোভাযাত্রা' নামেই তা উদ্যাপন করত৷ তাই চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নাম পরিবর্তন নয়; কেবল পুরোনো নামে ফিরে যাওয়া হয়েছে৷
তবে চারুকলা অনুষদের এ দাবি অগ্রাহ্য করেছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ৷ তারা বলছেন, গণ-অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মত এবারও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে৷ তারা মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের যৌক্তিক কারণ খোলাসা করতেও চারুকলা অনুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷
সজিব