ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ফিলিস্তিনের পতাকার পাশেই ইসরাইলি পণ্যে বোঝাই ভ্যান: বয়কট কি শুধু লোক দেখানো?

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ১৬ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৫:৪১, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের পতাকার পাশেই ইসরাইলি পণ্যে বোঝাই ভ্যান: বয়কট কি শুধু লোক দেখানো?

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন, নিপীড়ন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও বয়কট আন্দোলন চলছে জোরেশোরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাস্তায়, ক্যাম্পাসে, মিছিল-মিটিংয়ে বারবার উচ্চারিত হচ্ছে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের ডাক। কিন্তু বাস্তবচিত্র কি আদৌ এই আন্দোলনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের সামনে তোলা একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে বিশাল একটি ফিলিস্তিনি পতাকার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে ইসরাইলি পণ্যে বোঝাই একটি ভ্যান। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর উঠেছে নানান প্রশ্ন—আসলে বয়কট কি কেবল স্লোগানে সীমাবদ্ধ?

ঢাকার রেস্টুরেন্টগুলো, ক্যাফে, এমনকি নামকরা ফুড চেইনগুলোতেও এখনো খোলা মনে বিক্রি হচ্ছে ইসরাইলি পানি ও অন্যান্য পণ্য। অনেক জায়গায় এইসব পণ্যের বিকল্প থাকা সত্ত্বেও, দোকানগুলোতে সেগুলোর প্রচারও কম। এমনকি, ইসরাইলি কোম্পানির পানীয় ছাড়া অন্য কোন ব্র্যান্ড অনুপস্থিত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে শিক্ষাঙ্গনে, যেখানে সচেতনতা ও প্রতিবাদ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, সেখানে এমন চিত্র অনেককে হতাশ করেছে। বয়কটের ব্যানার, পোস্টার, ফিলিস্তিনের পতাকা—সবই দৃশ্যমান, কিন্তু বাস্তব প্রয়োগে গড়িমসি।

ছাত্র ও সমাজকর্মীরা বলছেন, “এই বয়কট আন্দোলন যদি বাস্তবিক অর্থে কার্যকর করতে না পারি, তাহলে তা প্রতীকি প্রতিবাদের চেয়ে বেশি কিছু হবে না।” কেউ কেউ আবার বলছেন, “ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে, ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।”

ভাইরাল হওয়া ছবির নিচে অসংখ্য কমেন্ট ও শেয়ার দেখা গেছে, যেখানে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন মন্তব্য করেন, “ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে যদি ইসরাইলি পণ্যের প্রচার করি, তাহলে এই প্রতিবাদের অর্থই কোথায়?”

ইসরাইলি পণ্য বয়কট কেবল স্লোগানে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করাই এখন সময়ের দাবি। নাহলে এই আন্দোলন ধীরে ধীরে কার্যকারিতা হারাবে এবং জনগণের আস্থা নষ্ট হবে। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো মানে কেবল পতাকা তোলা নয়—নিত্যদিনের জীবনে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়াও এর অংশ।

ফারুক

আরো পড়ুন  

×