
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর ডেমরায় রাজউকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে গড়ে ওঠা একাধিক নির্মাণাধীন ভবনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ডেমরার হাজীনগর এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন রাজউকের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও পরিচালক (উপসচিব, এস্টেট ও ভূমি-২) মো. মনির হোসেন হাওলাদার।
অভিযান চলাকালে রাজউকের অনুমোদিত নকশা না মেনে নির্মাণ করা তিনটি ভবনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরমধ্যে "ক্ষণিকালয়" নামক একটি ১০ তলা ভবন কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ ও "আইয়ুব নবী এন্টারপ্রাইজ" কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি নকশা লঙ্ঘনের অভিযোগে ওই দুই ভবনের দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এবং আরেকটি ভবনের রডের বাড়তি অংশ কেটে দেওয়া হয়।।
রাজউকের অথরাইজড অফিসার জান্নাতুল মাওয়া জানান, অভিযুক্ত ভবনগুলো অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছিল। অভিযানের সময় ভবন মালিকেরা রাজউকের অনুমোদন সংক্রান্ত কোনো যথাযথ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি।
অন্যদিকে ক্ষণিকালয় ভবনের পরিচালক মো. হাফিজ আহমেদ পাটোয়ারী দাবি করেন, টাকা ছাড়া রাজউকে কোনো প্ল্যান পাস হয় না। একেকটি প্ল্যান পাস করাতে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। আমরা রাজউকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চালিয়েছি। হঠাৎ করে নতুন নিয়ম চালু করে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
তবে রাজউকের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনির হোসেন হাওলাদার সাফ জানিয়ে দেন, রাজধানীতে যত ভবন নিয়ম ভঙ্গ করে গড়ে উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে যেন কেউ রাজউকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে নির্মাণ না করে, সে জন্য এই অভিযান জনগণকে সতর্ক করার একটি পদক্ষেপ।
তিনি আরও বলেন, নির্মাণসামগ্রী সড়কে রেখে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে আইনবিরোধী। নীতিমালা না মানার ফলে ভবনের আশপাশে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা না থাকায় অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্যোগের সময় জরুরি সেবা পৌঁছাতে পারে না।
অভিযানে অংশ নেন রাজউকের পরিচালক (জোন-৬) শামীমা মোমেন, অথরাইজড অফিসার জান্নাতুল মাওয়া, সরকারি অথরাইজড অফিসার শাহনাজ খানম, প্রধান ইমারত পরিদর্শক নজরুল ইসলাম মনি, বাসুদেব ভট্টাচার্য, ইমারত পরিদর্শক ফিরোজ আলম, নাজিম উদ্দিন, মারুফ হোসেন, অমিত হাসান, মিল্লাত হোসেন, মো. শাহ আলম, মলয় চন্দ্র রায়, হায়াত মাহমুদ শামীম ও আল জুবায়েরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অভিযানে সহযোগিতা করে সারুলিয়া ডিপিডিসি বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ডেমরা থানা পুলিশ।
রাজউকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালিত হবে এবং যেসব ভবন নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন বা নীতিমালা মানা হচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবীর