ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

এবারের পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের উৎসবে পরিণত হয়েছে: আজিজুল বারী হেলাল

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

এবারের পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের উৎসবে পরিণত হয়েছে: আজিজুল বারী হেলাল

ছবিঃ সংগৃহীত

একটি বেসরকারি টেলিভিশন এস এ টি ভি-র আয়োজিত 'লেট এডিশন' টকশোতে এসব কথা বলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।

উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, "বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই বর্ষবরণটি অনেকটা রাজনৈতিক ঐক্যের বর্ষবরণ, অর্থাৎ সকল রাজনৈতিক দল এক জায়গায় আসবে এবং এই অভ্যুত্থানটা আসলে সকলকে একবিন্দুতে মিলিত করেছে। এই বর্ষবরণের মাধ্যমে আসলে সেই বার্তাটা কি পরিলক্ষিত হয়েছে?"

আজিজুল বারী হেলাল বলেন, "আমাদের যে বর্ষবরণ, এটি কিন্তু একটি উৎসবমুখর পরিবেশে, আমি ৮০-এর দশক থেকে দেখেছি, এটি ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা হিসেবে, চারুকলা থেকে একটি মিছিল বের হতো। এর আগের ইতিহাসটা আমাদের প্রফেসর সাহেব সুন্দরভাবে বললেন, আকবরের সময় থেকে তার পিতা হুমায়ুনের সময়ের কথা বললেন। তবে বাংলাদেশে আমরা ৮০-এর দশকের গ্রামাঞ্চলে এটি বাণিজ্যিক উৎসব হিসেবে হালখাতা, বছরের শেষে হিসাবের জন্য পহেলা বৈশাখকে বেছে নিতাম।"

তিনি আরও বলেন, "নগরে যখন এই কালচারটা প্রবেশ করল, তখন এটিকে রাজনীতির সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিল। রাজনীতি এমন একটি ব্যাপক বিষয়, এর আওতা অনেক বড়, বিস্তীর্ণ। সুতরাং, এই উৎসবটি তো একটি সংস্কৃতি, যা সবসময় পরিবর্তনশীল। সংস্কৃতি থেমে থাকে না; এটি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়।"

আজিজুল বারী হেলাল বলেন, "যখন সংস্কৃতি জাতীয় অস্তিত্ব এবং ঐক্যের সাথে সংঘর্ষে চলে আসে, তখন আমরা সেগুলোকে রাজনৈতিক নামকরণ করে বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করি এবং সেগুলোকে অপমান করার চেষ্টা করি। এটি একটি সাংস্কৃতিক কনফ্লিক্ট।"

তিনি বলেন, "এটা যেমন মঙ্গল শোভাযাত্রার উদাহরণ, যেখানে কিছু প্রাণীর প্রতীক শুভ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, তবে অনেকেই এগুলোকে শুভ হিসেবে মেনে নেয়নি, আবার কিছু মানুষ এগুলোকে শুভ মনে করেছেন। এটি সাংস্কৃতিক কনফ্লিক্টের উদাহরণ।"

আজিজুল বারী হেলাল আরও বলেন, "পলিটিক্যাল ইডিওলজিকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করার সময় মঙ্গল শোভাযাত্রায় কিছু ছবি অশুভ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এবার, গণঅভ্যুত্থানের পর, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বর্ষবরণ পালন করেছি। এটি একটি উৎসব, এবং বাঙালি জাতি খুব উৎসবপ্রিয়।"

তিনি বলেন, "এই বর্ষবরণটি ৮০-এর দশক থেকে একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে, যা আগে ব্যবসায়িক খালখাতা হিসেবেই ব্যবহার হতো। এই উৎসবের আগামী বছর হয়তো অন্য কোন ন্যারেটিভ তৈরি হবে। তবে, এখন আমাদের যে ইনক্লুসিভনেস রয়েছে, যা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও পালন করছে, তা একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।"

আজিজুল বারী হেলাল বলেন, "এবারের বর্ষবরণে শুধু বাঙালি নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও অংশ নিয়েছে। এটি এখন একটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "এবারের গন্তব্য হয়ে উঠেছে সার্বজনীন রূপ। সমস্ত জাতি, ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ এই উৎসবে অংশগ্রহণ করছে। পূর্বে, যেখানে ধর্মীয় ডিফেম করার চেষ্টা ছিল, এবারের উৎসবে তা আর নেই।"

আজিজুল বারী হেলাল বলেন, "এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় লাভের বিষয়টি উদযাপন করছি, যা স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করার মতো। একইভাবে, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানেও পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে জয় উদযাপন করা হয়েছে।"

তিনি বলেন, "এবারের বর্ষবরণে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকল রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়ে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। আমরা একযোগভাবে এই উৎসব পালন করেছি।"

আজিজুল বারী হেলাল বলেন, "এটি বাংলাদেশের জাতীয় উৎসব হয়ে উঠেছে, যেখানে বাঙালি এবং অন্যান্য জনগোষ্ঠী একত্রে অংশগ্রহণ করেছে। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে আমাদের জাতীয় ঐক্য দৃঢ় হয়েছে।"

সূত্রঃ https://www.facebook.com/watch/?v=650909387838006&rdid=YAPlupH4PDPuyXRQ

ইমরান

আরো পড়ুন  

×