
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের তিস্তা নদী নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার অচলাবস্থা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য খাতে ভারতীয় সহযোগিতার সীমাবদ্ধতা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দিল্লির দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে, ভারত বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করেছে, যা দেশের বড় অঞ্চলে বাঁধ খুলে দিয়ে বন্যা সৃষ্টি করার মাধ্যমে পরিণতি পেয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে বাংলাদেশ বিপাকে পড়লেও, ভারত কখনোই যথাযথ সহায়তা প্রদানে আগ্রহী হয়নি। বরং তিস্তা ব্যারেজ এবং গজলডোবা অঞ্চলে বাঁধ খুলে বাংলাদেশকে দুর্ভোগে ফেলেছে ভারত।
এদিকে, ভারতের কূটনৈতিক কৌশল এবার বিপর্যস্ত হতে চলেছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের নেতৃত্বে চীন তিস্তা প্রকল্পে নতুন করে আগ্রহী হয়ে উঠেছে এবং এই প্রকল্পে আসছে চীনা বড় বিনিয়োগ। চীনের অংশগ্রহণে তিস্তা প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। শুধু তিস্তা নয়, বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে চীনের সহযোগিতা বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভারতের এতদিনের সুবিধা গ্রহণের পর, এখন ভারতকে বড় ধাক্কা খেতে হতে পারে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে এবং এর ফলে ভারতকে একসময় পুরোপুরি হিসাবের খাতা দিতে হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত এতদিন যেভাবে বাংলাদেশকে এক তরফা সুবিধা দিয়েছিল, এখন আর সেই সুযোগটি থাকবে না। এমনকি, নেপাল, ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন করতে শুরু করেছে।
চীনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বিশাল অগ্রগতি ঘটছে এবং তিস্তা অঞ্চলে ১২ একর জমিতে একটি বিশাল হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। এই হাসপাতালটি বিশেষভাবে রংপুর অঞ্চলে এবং তিস্তা প্রকল্পের কাছাকাছি স্থানে নির্মিত হবে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীনা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন অফ চায়না এই প্রকল্পের মাস্টারপ্লান তৈরির সময়সীমা ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিস্তা প্রকল্প নিয়ে সব পরিকল্পনা এখন কার্যকরী হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা এবং মোদির অদূরদর্শী কূটনৈতিক সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের প্রকল্পগুলো এখন সঠিকভাবে এগোচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশ আর ভারতকে তেমন মনোরঞ্জন করতে রাজি হবে না, বরং স্বনির্ভরভাবেই তিস্তা ও চিকিৎসাসহ অন্যান্য খাতে অগ্রগতি লাভ করবে।
এখন প্রশ্ন উঠে, ভারত কি শুধু গ্যালারির বাইরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের উপকারিতা দেখে যাবে, না কি প্রকৃত অংশীদার হয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেবে?
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/2sahBdUj_t4?si=0F4Dd4Bg5NRoYaCG
এম.কে.