
ছবি: সংগৃহীত।
ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যখন গোটা বিশ্বের বিবেক জেগে উঠছে, তখন ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের একাত্মতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত “March for Gaza” কর্মসূচিতে লাখো মানুষ ঢাকার রাস্তায় নেমে আসে। মুখে ছিল “ফ্রি প্যালেস্টাইন” স্লোগান, হাতে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর ছবি—যা পরিণত হয় প্রতিবাদের প্রতীকে।
কর্মসূচির একটি দৃশ্য, যেখানে বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর ছবিকে জুতা দিয়ে পেটাচ্ছেন, তা ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এমনকি টাইমস অফ ইসরাইল সহ একাধিক ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমেও উঠে আসে বাংলাদেশের এই বিশাল সংহতি।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যেই আরও একটি সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক নজর কেড়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা দিয়েছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টে আবারও যুক্ত হচ্ছে সেই পুরনো বাক্য: “Valid for all countries of the world except Israel.”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের শেষদিকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট থেকে এই “Except Israel” বাক্যটি বাদ দেওয়া হয়েছিল। সে সময় সরকার জানায়, এটি কোনো নীতিগত পরিবর্তন নয়, বরং একটি “কারিগরি সংশোধন”।
তবে এই পদক্ষেপ তখন ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। বহু বিশ্লেষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে এটি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পররাষ্ট্রনীতির এক বিপরীত ধারা।
কিন্তু ২০২৫ সালে এসে অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন নির্দেশনায় স্পষ্ট হয়েছে, বাংলাদেশ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের সে দেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ।
এএফপি-র একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে টাইমস অফ ইসরাইল জানায়,
"বাংলাদেশে ইসরাইল বরাবরই একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশ কখনোই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি।"
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “Except Israel” বাক্যটি আবার যুক্ত করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সরকার জনমতের প্রতিফলন ঘটিয়েছে এবং পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
প্রতিবাদের এই জোয়ারে বাংলাদেশের মানুষ যেন এক কণ্ঠে বলছে: “গাজা একা নয়।”
বিশ্বজুড়ে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশের সংহতি এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যখন অনেক মুসলিম দেশ ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা থেকে দূরে সরে দাঁড়িয়েছে, তখন বাংলাদেশি জনগণের সোচ্চার অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
নুসরাত