ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

প্রতিপক্ষ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারকে মানবিক সহায়তা করেছে বাংলাদেশ

কূট‌নৈ‌তিক রি‌পোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

প্রতিপক্ষ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারকে মানবিক সহায়তা করেছে বাংলাদেশ

ছবি সংগৃহীত

মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ থাকা সত্ত্বেও ভূমিকম্পে বিপদগ্রস্ত দেশটির পাশে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ। তিনধাপে ২৮৮ টন সাহায্যসামগ্রি পাঠানো হয়। সেসব সহায়তার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, ওষুধ, তাঁবু, পানীয়, কম্বল, পোশাক, স্বাস্থ্যবিধি পণ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

মিয়ানমারকে সহায়তাকারী দল ইতোমধ্যে বাংলাদেশের উদ্দেশ্য মিয়ানমার ত্যাগ করেছে। আগামীকাল চট্টগ্রামে এসে পৌছাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় নিশ্চিত করেছে। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মিয়ানমার উইং এ তথ্য গণমাধ্যমকে তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ তার উদ্ধার অভিযান এবং মানবিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। ২৮ মার্চ মায়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ মানবিক কার্যক্রম এবং উদ্ধারকাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। অভিযান সম্পন্ন করার পর, সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মী, ডাক্তার, নার্স এবং অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশী দল ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ(বানৌজা) সমুদ্র অভিযানে মায়ানমার ত্যাগ করেছে এবং আগামীকাল চট্টগ্রামে পৌঁছাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় জানায়, উদ্ধারকাজ ছাড়াও, মায়ানমার সরকারের অনুরোধে বাংলাদেশ ১৫১.৫ টন মানবিক সহায়তা মিয়ানমারে পাঠানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সূত্রটি জানায়, একজন দায়িত্বশীল প্রতিবেশী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে, বাংলাদেশ মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার প্রতিপক্ষ মিয়ানমার সরকারের কাছে একটি সমবেদনা পত্র পাঠিয়ে মানবিক সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাসঙ্গিক মানবিক কার্যক্রম সমন্বয় করেছে।

৩০ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত, তিনটি ধাপে, পাঁচটি বাংলাদেশি বিমান এবং একটি নৌবাহিনীর জাহাজ ১৫১.৫ টন সহায়তা বহন করে যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, ওষুধ, তাঁবু, খাবারের প্যাকেট, শুকনো রেশন, পানীয় জল, কম্বল, পোশাক, স্বাস্থ্যবিধি পণ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

প্রথম ধাপে, ৩০ মার্চ তারিখে দুটি বাংলাদেশি বিমানে ইয়াঙ্গুনে ১৬.৫ মেট্রিক টন সহায়তা পাঠানো হয়। দ্বিতীয় ধাপে, ০১ এপ্রিলে আরও তিনটি বাংলাদেশি বিমানে ১৫ মেট্রিক টন ত্রাণ এবং ৫৫ সদস্যের একটি উদ্ধার ও চিকিৎসা দল নেপিদোতে নিয়ে যায় এবং সবশেষে তৃতীয় ধাপটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ (বানৌজা)সমুদ্র অভিজান, যা ৮ এপ্রিল ১২০ মেট্রিক টনেরও বেশি ত্রাণ সামগ্রী বহন করে চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা করে এবং ১১ এপ্রিল ইয়াঙ্গুনে অবতরণ করে।

মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তিন ধাপে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের সহায়তা হস্তান্তর করেন। মায়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস মায়ানমারে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যদের মান্দালয় শহরে মানবিক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত করেছে।

আশিক

সম্পর্কিত বিষয়:

×