
ছবিঃ সংগৃহীত
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হয় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। চুরির ঘটনা ঘটার এক দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি জানতে পারলেও তা গোপন রাখা হয় টানা ২৪ দিন। এরপর ৩৩তম দিনে তৎকালীন অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয় এবং ঘটনার ৩৯ দিন পর মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। কিন্তু এরই মধ্যে ‘পানি গড়িয়ে যায় অনেক দূর’। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তদন্তেও দেখা দেয় ধীরগতি। নানা অজুহাতে তদন্তে গতি আসেনি। একেক সময় উঠে আসে বিভিন্ন ব্যাখ্যা—প্রিন্টার সমস্যা, ভাইরাস আক্রান্ত ইমেইল, ভুল লেনদেন ইত্যাদি।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর গঠন করা হয় রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত রিভিউ কমিটি। কমিটির বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে কমিটির প্রধান বলেন, “পতিত আওয়ামী সরকারের সময়ে করা তদন্তে বড় গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে।”
তিনি আরও জানান, “বাকিটাকা উদ্ধারের জন্য কিছু লিগাল ফার্মকে কাজ দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে ৮ লাখ ডলার প্রদান করা হয়েছে। আমরা শুনেছি, তাদের সঙ্গে ইমেইল আদান-প্রদান করলেও টাকা দিতে হয়। এই ফার্মটিকে কেন বাছাই করা হয়েছিল? এত টাকার বিনিময়ে এই ফার্মকে নির্বাচন করার পেছনে সরকারের ঘনিষ্ঠ কোনো আইনজীবীর ভূমিকা ছিল কি না, সেখানে কোনো আর্থিক অনিয়ম হয়েছে কি না, এসব বিষয়ও আমরা তদন্ত করে দেখবো।”
কমিটির প্রধান আসিফ নজরুল বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বাঁচাতে সিআইডিকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।” ফরাসউদ্দীনের প্রতিবেদনে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অন্তত ১৩ জন কর্মকর্তার গাফিলতি ও অবহেলার বিষয় উঠে এলেও তাদেরকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গঠিত এ রিভিউ কমিটি আগামী ৩ মাসের মধ্যে তাদের সুপারিশ জমা দেবে বলেও জানান কমিটির প্রধান।
মারিয়া